Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

১৪ ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস

আসসালামু আলাইকুম। প্রিয় পাঠকবৃন্দ, আশা করি সবাই ভালো আছেন। আল্লাহর রহমতে আমিও ভালোই আছি। আজকের পোস্টের আলোচনা ১৪ ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস নিয়ে। চলুন শুরু করা যাক।

১৪ ই ডিসেম্বর শহীদ বুদ্ধিজীবি দিবস

বাংলাদেশে প্রতিবছর ১৪ই ডিসেম্বর তারিখে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালন করা হয়। ১৯৭১ সালে পাক হানাদার বাহিনীর পরিকল্পনায় ও এদেশীয় রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীর প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ সহায়তায় বছরব্যাপী বুদ্ধিজীবী হত্যা কর্মকাণ্ড চালানো হয়। কিন্তু ১৪ ডিসেম্বর তারিখে বেশিসংখ্যক বুদ্ধিজীবী হত্যার শোকাবহ স্মৃতিস্বরূপ এই দিনটিকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস হিসেবে পালন করা হয়। আর এই দিবসটি প্রথম ঘোষণা করেন বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী সরকারের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ।

এবারে দিবসটির প্রেক্ষাপট জেনে নেয়া যাক।

দীর্ঘ ২৪ বছরের শাসন, শোষণ ও বঞ্চনার উত্তপ্ত শিকল হতে বাংলাকে মুক্ত করতে, এদেশকে স্বাধীন দেশ হিসেবে বিশ্বদরবারে উপস্থাপন করতে, বাংলার অবিসংবাদিত নেতার হাত ধরে বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়ে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে। এই অবিসংবাদিত নেতা আর কেউ নন, আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন হতে একাত্তরের স্বাধীনতা যুদ্ধ, বাঙালির অধিকার আদায়ের সকল লড়াইয়ে তিনিই ছিলেন অনুপ্রেরণার উৎস , অগ্রনায়ক।

পাকিস্তানি নরপিশাচদের শাসন, শোষণ যখন সীমা লঙ্ঘন করে সীমাহীনতার পথে এগোচ্ছিল, সেই সময়ে ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চ ঢাকার রেসকোর্স ময়দানে শেখ মুজিব ডাক দিয়েছিলেন এক অসহযোগ আন্দোলনের। তাঁর ডাকে একজোট হয়েছিল সর্বস্তরের বাঙালি। কিন্তু বাঙালির এই শৃঙ্খল ভেঙে দেয়ার জন্য হানাদার বাহিনী ২৫শে মার্চ মধ্যরাতে নিরীহ নিরস্ত্র বাঙালির উপর নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালায়। মধ্যরাতের পর অর্থাৎ ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। এবং এর পরই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়।

তাঁকে কারাবন্দি হতে হয় পশ্চিম পাকিস্তানের কারাগারে। শুরু হয় নয়মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ। প্রথম থেকেই পশ্চিম পাকিস্তানিরা চেয়েছিল বাংলাদেশকে মেধাশূন্য করতে। তারা বিভিন্ন সময় পরিকল্পনা করে বুদ্ধিজীবীদের উপর হামলা চালিয়ে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। কেননা তারা বুঝতে পেরেছিল বাঙালি অস্ত্র চালনায় পিছিয়ে থাকলেও সাহস, বুদ্ধি ও কৌশলে অনেক এগিয়ে। তারা টের পেয়েছিল রণক্ষেত্রে বাঙালি পিছিয়ে আসবার জাতি নয়। তাই অনেক পরিকল্পনা, অপারেশন চালিয়েও যখন বাঙালিদের চূড়ান্ত বিজয় আসন্ন, যখন পাকিস্তানি সৈন্যদের কাছে আত্মসমর্পণ করা ছাড়া আর কোন উপায় নেই, তখন তারা চূড়ান্ত আঘাত হানে বুদ্ধিজীবীদের উপর।

আর এই কাজে পাক হানাদার বাহিনীর সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত ছিল এদেশীয় কুচক্রী সংস্থা রাজাকার, আলবদর ও আলশামস বাহিনীর সদস্যরা। ১৪ই ডিসেম্বর তারিখে এরা দেশের বহু শিক্ষাবিদ, চিকিৎসক, আইনজীবী, গবেষক, প্রকৌশলী, কবি, সাহিত্যিক, সাংবাদিকদের বাড়ি থেকে চোখ বেঁধে ধরে নিয়ে নির্মমভাবে নির্যাতন করে হত্যা করে। হত্যার পর রাজধানীর মিরপুর, রায়েরবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় একসাথে মাটি চাপা দেয়া হয়।

১৬ই ডিসেম্বর তারিখে বাংলাদেশের চড়ান্ত বিজয়ের পর স্বজনরা মিরপুর, রাজারবাগ বধ্যভূমিতে মৃতদেহ শনাক্ত করেন। শনাক্তকরণের পর মৃতদেহগুলোতে নির্যাতনের ছাপ স্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। কারো শরীরে ছিল একাধিক গুলি, কারো শরীরে ছিল ধারালো অস্ত্রের জখমের চিহ্ন, কারো কারো আবার হাত, পা, চোখ বাঁধা ছিল। এ থেকেই ধারণা পাওয়া যায় যে, তাঁদের হত্যার আগে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়।

কিন্তু এই নারকীয় হত্যাযজ্ঞের পরও বাঙালির স্বাধীনতা ছিনিয়ে নিতে পারেনি পাক হানাদার বাহিনীরা। অবশেষে ১৬ই ডিসেম্বর, বাংলার আকাশে উদিত হয় স্বাধীনতার সোনালি সূর্য। ৩০ লাখ বাঙালির বুকের তাজা রক্ত সোনালি রঙে যোগ করেছিল লালচে আভা। সেদিন স্বাধীনতার আনন্দ উল্লাসের মধ্যে ছিল ছেলেহারা মায়ের, স্বামীহারা বোনের, স্বজনহারাদের বুকফাটা আর্তনাদ, করুণ আহাজারি।

অতঃপর ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারি, বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দেশ গঠনের কাজ। তবে এর আগেই গঠিত হয় ” বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটি”। এই কমিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, এদেশের ২০,০০০ বুদ্ধিজীবীর হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন রাও ফরমান আলী। কিন্তু তার পরিকল্পনামতো হত্যাযজ্ঞ চলেনি। তার পরিকল্পনা ছিল শীর্ষ বুদ্ধিজীবীদের গভর্নর হাউজে নিমন্ত্রণ করে হত্যা করা। কিন্তু তার পরিকল্পনা মোতাবেক হত্যাযজ্ঞ চলেনি।

বুদ্ধিজীবী তদন্ত কমিটির প্রধান জহির রায়হান বলেছিলেন, ” এরা নির্ভুলভাবে বাংলাদেশের গণতন্ত্রমনস্ক বুদ্ধিজীবীদের বাছাই করে আঘাত হেনেছে।” পরবর্তীতে ১৯৭২ সালের ৩০ জানুয়ারি তিনিও নিখোঁজ হন।

রাজধানী ঢাকার মিরপুরে ও রায়েরবাজারে, শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরণে নির্মিত হয়েছে শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ।

প্রতিবছর বাঙালির ইতিহাসের এই শোকাবহ অধ্যায়টিকে স্মরণ করা হয় ১৪ই ডিসেম্বর তারিখে। যথাযোগ্য মর্যাদায় সরকারি উদ্যোগে শহীদদের স্মরণ করা হয়। দিবসটি প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে দেশের জন্য নিঃসঙ্কোচ আত্মবলিদানের অনুপ্রেরণা জোগায়।

আজ এই পর্যন্তই। পোস্টটি কেমন লাগলো দয়া করে কমেন্টে জানাবেন, যদি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যয় শেয়ার করবেন, পোস্টটি পড়ার জন্য ধন্যবাদ। এমন সব দারুন দারুন পোস্ট পেতে Grathor এর সাথেই থাকুন এবং গ্রাথোর ফেসবুক পেইজ ও ফেসবুক গ্রুপ এ যুক্ত থাকুন, আল্লাহ হাফেজ।

Related Posts

5 Comments

  1. আমার গ্রোথার একাউন্টটি বিক্রি করব ২১৯ টাকা রয়েছে তার থেকে ১০% ছাড়ে কেউ কিনতে চাইলে এই ফেইসবুক লিংকে গিয়ে ইনবক্সে মেসেজ দেবেন
    👇
    https://m.me/sashasha.aj.9

Leave a Reply