সকলেই কেমন আছেন? আশা করি ভাল আছেন। পবিত্র ঈদুল ফিতরের কারণে বেশকিছুদিন শিক্ষামূলক পোস্ট দেওয়া হয়নি। তবে এখন থেকে নিয়মিত শিক্ষামূলক পোস্ট দেওয়া হবে। পূর্বের ধারাবাহিকতায় আজ ৮ম শ্রেণীর সাধারণ বিজ্ঞান বই থেকে ৬ষ্ঠ ও ৭ম অধ্যায় আলোচনা করা হচ্ছে।
৬ষ্ঠ অধ্যায়: পরমাণুর গঠন
১। পদার্থ ক্ষুদ্র কণা দ্বারা গঠিত।
২। এই ক্ষুদ্র কণা দুই রকমের। যথা: অনু ও পরমাণু।
৩। গ্রিক দার্শনিক ডেমোক্রিটাস খ্রিস্টপূর্ব চারশো অব্দে সর্বপ্রথম পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা নিয়ে মতবাদ পোষণ করেন। তার মতে সকল পদার্থ ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অবিভাজ্য কণা দ্বারা গঠিত। তিনি ক্ষুদ্রতম কণার নাম দেন পরমাণু বা Atom। Atom কথাটি গ্রিক শব্দ Atomos থেকে উৎপত্তি। যার অর্থ হলো অবিভাজ্য। তবে ডেমোক্রিটাসের এই মতবাদে দুজন দার্শনিক প্লেটো এবং অ্যারিস্টোটল দ্বিমত পোষণ করেন।
৪। অ্যারিস্টোটলের মতে পদার্থসমূহ নিরবচ্ছিন্ন। একে যতই ভাঙ্গা হোক না কেন, পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণাগুলো ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর হতে থাকবে।
৫। ১৮০৩ সালে বিজ্ঞানী জন ডাল্টন (John Dalton) তার পরীক্ষালব্ধ তত্ত্বের উপর ভিত্তি করে পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা সম্পর্কে বলেন, পরমাণু হল মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা এবং একে আর ভাঙ্গা যায় না।
ডাল্টনের মতবাদ সকলে গ্রহণ করে ফলে এরিস্টটলের মতবাদটি পরিত্যক্ত হয়।
৬। পরমাণু অবিভাজ্য নয় বা ক্ষুদ্র নয় পরমাণু বিভাজ্য।
৭। পরমাণু ইলেকট্রন প্রোটন ও নিউট্রন দ্বারা গঠিত।
৮। পরমাণুর নিউক্লিয়াসের ধারণা দেন বিজ্ঞানী রাদারফোর্ড।
৯। পরমাণুর কেন্দ্রে থাকে নিউক্লিয়াস।
১০। নিউক্লিয়াসে প্রোটন ও নিউট্রন থাকে।
১১। প্রোটন ধনাত্মক আধানযুক্ত।
১২। নিউট্রন আধান নিরপেক্ষ।
১৩। ইলেকট্রন ঋণাত্মক আধানযুক্ত। এরা নিউক্লিয়াসের বাইরে থাকে।
১৪। পরমাণুর ভরের প্রায় পুরোটাই নিউক্লিয়াসে থাকে।
১৫। একটি মৌলের পরমাণু থেকে আর একটি মৌলের পরমাণুর মধ্যে আকার, ভর ও ধর্মের পার্থক্য হয়ে থাকে।
১৬। পরমাণুতে ইলেকট্রন ও প্রোটনের সংখ্যা সমান থাকে।
১৭। কোন মৌলের একটি পরমাণুর প্রোটন এর সংখ্যাকে পারমাণবিক সংখ্যা বলে।
১৮। কোন মৌলের ভর সংখ্যা = ঐ মৌলের পরমাণুতে প্রোটনের সংখ্যা + নিউট্রনের সংখ্যা।
১৯। আইসোটোপ = কোন মৌলের ভিন্ন ধরনের পরমাণু যাদের প্রোটন বা পারমাণবিক সংখ্যা সমান কিন্তু ভর সংখ্যা ভিন্ন তাকে আইসোটোপ বলে।
২০। আইসোটোপ অস্থায়ী। আইসোটোপের ক্ষয় থেকে ফসিলের বয়স জানা যায়।
২১। কক্ষপথে ইলেকট্রন 2n2 সূত্র অনুসারে থাকে।
৭ম অধ্যায়: পৃথিবী ও মহাকর্ষ
১। এই মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে আকর্ষণ করে। এই আকর্ষণ বলকে মহাকর্ষ বলে। মহাবিশ্বের যেকোনো দুটি বস্তুর আকর্ষণ কে মহাকর্ষ বলে। দুটি বস্তুর একটি পৃথিবী হলে তাকে মাধ্যাকর্ষণ বা অভিকর্ষ বলা হয়। অর্থাৎ কোন বস্তুর ওপর পৃথিবীর আকর্ষণই অভিকর্ষ।
২। নিউটনের মহাকর্ষ সূত্র: মহাবিশ্বের প্রতিটি বস্তুকণা একে অপরকে নিজের দিকে আকর্ষণ করে এবং এ আকর্ষণ বলের মান বস্তুর ভরের গুণফলের সমানুপাতিক এবং এদের দূরত্বের বর্গের ব্যস্তানুপাতিক এবং এ বল বস্তুদ্বয়ের সংযোজক সরলরেখা বরাবর ক্রিয়া করে।
৩। অভিকর্ষজ ত্বরণ: আমরা জানি, বল প্রয়োগ করলে কোন বস্তুর বেগের পরিবর্তন হয়। প্রতি সেকেন্ডে যে বেগ বৃদ্ধি পায় তাকে ত্বরণ বলে। অভিকর্ষ বলের প্রভাবে বস্তুর ত্বরণ হয়। এ ত্বরণকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বা মাধ্যাকর্ষণজনিত ত্বরণ বলে।
যেহেতু বেগ বৃদ্ধির হারকে ত্বরণ বলে সুতরাং অভিকর্ষ বলের প্রভাবে ভূপৃষ্ঠে মুক্তভাবে পড়ন্ত কোনো বস্তুর বেগ বৃদ্ধির হারকে অভিকর্ষজ ত্বরণ বলে।
৪। অভিকর্ষজ ত্বরণকে g দ্বারা প্রকাশ করা হয়।
৫। অভিকর্ষজ ত্বরণের একক হচ্ছে মিটার/সেকেন্ড২।
৬। স্প্রিং নিক্তির সাহায্যে কোন বস্তুর ওজন মাপা হয়।
৭। পৃথিবীর কেন্দ্রে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান শূন্য।
৮। চাঁদে অভিকর্ষজ ত্বরণের মান পৃথিবীর প্রায় 1/6 ভাগ।