প্রথম দিকে যখন বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক কাজের জন্য বিদেশে নেয়া হতো, তখনকার একটি ঘটনা, নামটা স্মরণ নেই কারণ এটি অনেক দিনের আগের ঘটনা আমি আমার পরিবারের বৃদ্ধের কাছ থেকে শুনেছিলাম । যেহেতু আমি অন্যের কাছ থেকে এই ঘটনা টা শুনেছিলাম তাই, এইটা কতটুকু টিক বা সত্য তাতে আমি পুরো পুরি নিশ্চয়তা দিতে পারব না। তবে এটুকুই বলতে পারি যে এই ঘটনার মাধ্যমে আপনারা হয়তো অনেক কিছুই শিখতে পারবেন। হয়তো অনেকেই সচেতন হতে পারবে। যাইহোক এখন মূল বিষয়ে আসছি।
লোকটি মূলত বাংলাদেশের সিলেট অঞ্চলের,অনেক দিন একটি রাষ্টে অবস্থান করার পর ইলিগ্যাল ভাবে লোকটা আফ্রিকা যাওয়ার জন্য বডার পেরুবার চেস্টা করেন, সাথে আর কয়েক জন ছিল, কিন্তু তাদের মধ্যে কেওই দক্ষ ছিলেন না, টিকমত রাস্তা না চেনায় সবাই গভীর জঙ্গলে হারিয়ে যায়।
এক রাতে সবাই একে অন্যের থেকে কোনো একটি কারণে পৃথক হয়ে যায়, অবশ্যই কারণটি আমার মনে নেই।
শুধু একজন যিনি দীর্ঘদিন জঙ্গলে থেকে বেঁচে আসতে সক্ষম হয়েছিলেন, তার কথা বলছি।
জঙ্গলে বিভিন্ন জীব, জন্তু, জানোয়ার এর থেকে, ভয়াবহ হয়ে দাঁড়ায় খিদে। তাকে তখন বেচে থাকার জন্য বিভিন্ন লতাপাতা খেয়ে থাকতে হয়ে ছিল।এভাবেই তাকে লতাপাতা ফলমূল খেয়ে জীবন যাপন করতে হয়েছিল।
এইভাবেই মাসের পর মাস বছরের পর বছর জংগলে তাকে থাকতে হয়েছিল, বেরুনোর কোনো রাস্তা পেলেন না। একটা সময় লক্ষ করলেন তার শরীর দিন দিন নিল বর্নের রং ধারণ করছে, তাছাড়া লোম,দাঁড়ি, গোপ, বারতে থাকে হয়তো এসব লতাপাতা খাওয়ার জন্য তার শরীরের অস্বাভাবিক পরিবর্তন হচ্ছে। প্রায় এক ধরনের জন্তু জানোয়ার মতো দেখাচ্ছিলো তাকে।
প্রতিদিন চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন জঙ্গল থেকে বেরিয়ে আসার জন্য। এক পর্যায় তিনি মানুষ বসবাস করে এমন জায়গায় আসেন।
হটাৎ একদিন বডার গার্ড তাকে দেখতে পেয়ে কোনো জন্তু ভেবে তাকে ঘেরাও করে ফলে, তার এসব অদ্ভুত শরীর দেখে গার্ডরা তাকে বন্ধি করে ফেলে । তিনি নিজের আঞ্চলিক ভাষা ছাড়া আর কোনো ভাষা জানতেন না। তিনি আঞ্চলিক ভাষায় তাদেরকে বুঝাতে লাগলেন তিনি ও একজন মানুষ তিনি মুক্তির জন্য অনেক বুঝালেন কিন্তু এতে কোনো কাজ হয়নি। তাছাড়া তখন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মানুষের ভাষা সম্পর্কে পৃথিবীর সব মানুষের আজকালকার মত এত ধারণা ছিল না।
তারপর গার্ডরা তাকেনিয়ে চিড়িয়াখানার ভেতরে বন্ধি করে রাখে। জানোয়ার ভেবে তাকে জানোয়ার এর খাবারওই তাকে দেয়া হয়, কিন্তু জিবন বাচানোর জন্য তাকে এসব খেতে হয়েছিল। অনেক দর্শনার্থীরা তাকে দেখতে আসে, তিনি তাদেরকে মক্তির জন্য অনেক কিছু ইশারায়, ভাষায় বুঝাতে চেয়েছিলেন কিন্তু কেও বুঝেনি এতে তারা আর উপভোগ করতে লাগলো।
দীর্ঘদিন এভাবেই চিড়িয়াখানার তাকতে হলো, আর শুধু অপেক্ষায় রইলেন কখন এমন একজন আসবেন যে তার ভাষা বুঝতে পারবে। হয়তো আল্লাহ তার আর্তনাদ শুনতে পারলেন।
ওই দেশের একজন নাগরিক যিনি বাংলাদেশি, মূলত সিলেট অঞ্চলের, পেশাগত কারণে তিনি আফ্রিকায় নাগরিক হয়ে ও-ই কানে বসবাস করছিলেন। নিজের সন্তান নিয়ে তিনি বেড়াতে ওই চিড়িয়াখানার আসছিলেন, তার যে ছেলেটা বয়স প্রায় ১০-১৫ বছরের ছিলো,
বাবার সাথে অনেকবারই বাংলাদেশে এসেছিলেন, যার কারণে সিলেটের আঞ্চলিক ভাষা অনেকটাই জানা ছিল।
তাই ছেলেটি যখন চিড়িয়াখানার বেড়াতে লাগলো, তখন ওই লোকটিকে সে দেখতে পেল, লোকটা যে মানুষ সেটা সে বুঝতে পারল না, ছেলেটা তার উপরে মজা করে ডিল ছুড়ছে , এমন সময় লোকটা বিরক্ত হয়ে আঞ্চলিক ভাষায় বলে উটল, “তুই একান থেকে যাবি নাকি আসব” এই রকম হয়তো কোনো একটা বলেছিল, কারণ সব কিছু আমার ঠিকভাবে মনে নেই ।
এসব শুনে ছেলেটি অবাক, এই জন্তুটা কি করে বাংলা আঞ্চলিক ভাষায় কথা বলতে পারে। ছেলে দৌরে গিয়ে সবকিছু তার বাবার কাছে বলল।” বাবা” ছেলের কথা যাচাই করার জন্য লোকটির কাছে গেলেন। লোকটার কাছে এসে ভয়ে ভয়ে প্রশ্ন করতে লাগলেন। নিজের দেশের মানুষের সাথে কথা বলতে পেরে লোকটা যেন পুনরায় জিবন ফিরে পেলেন।
অদ্ভুত লোকটা সবকিছু ছেলের বাবার কাছে ভালো করে বুঝিয়ে বললেন। বুঝাবুঝির পর ছেলের বাবা চিড়িয়াখানার কতৃপক্ষের সাথে কথা বলে সবকিছু বুঝিয়ে বললেন ।
এক পর্যায় সে লোকটি মুক্তি পেলেন।
এবং নিজের দেশে ফিরে আসতে সক্ষম হলেন। দেশে ফিরে এসেছিলেন টিক, কিন্তু তার পরিবার ভেবে ছিল যে,তিনি অনেক আগেই মারা গেছেন।
জীবনে এমন হাজার হাজার ঘটনা মানুষের জীবনে ঘটে, এমন অনেক বাংলাদেশী প্রবাসী আমাদের দেশে রয়েছেন যারা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বিভিন্ন দেশে যাওয়ার চেস্টা করেন। তাছাড়া এমন লোক রয়েছেন যারা এই রকম কাজ করতে গিয়ে মৃত্যু বরন করেছেন,
তাই আমাদের উচিত, কোনো কাজ করার আগে সব কিছু জেনে বুঝে কাজ করা।
একটা দেশে যাওয়ার আগে আমাদের কে অবশ্যই ভাষা জানা দরকার। তাতে আপনাদের অল্প হলেও কাজে আসবে।
তাছাড়া সব দরনের কাজেই আমাদের কমবেশি জানা দরকার যা আমাদের এই রকম অবস্থায় অনেক টা কাজে আসতে পারে।
ধন্যবাদ সবাইকে, আপনাদের কাছে যদি এই গল্পটা শিক্ষনীয় মনে হয়, তাহলে অবশ্যই শেয়ার করবেন।
হয়তো যারা ভাষা না জেনে এভাবে ভ্রমণ করে তাদের উপকারে আসছে পারে।