আসসালামু আলাইকুম, সবাই কেমন আছেন? আশা করি ভালোই আছেন। মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য ৬ সপ্তাহের পরিকল্পিত এ্যাসাইনমেন্ট প্রোগ্রামে আজকে নিয়ে এলাম এই সপ্তাহে চলমান অষ্টম শ্রেণির ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা (পার্ট-২, ৫ম সপ্তাহ) এ্যাসাইনমেন্টের সমাধান। তাহলে শুরু করা যাক।
(গ) উত্তর: জনাব নকীব সাহেবের মাঝে ইসলামের সমাজসেবার বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
উদ্দীপকে বলা হয় নকীব সাহেব স্ব-উদ্যোগে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য এলাকার কতিপয় বন্ধুদের নিয়ে প্রতি শুক্রবার রাস্তাঘাট মেরামত ও সংস্কার করেন। এই কাজ সমাজসেবার অন্তর্ভুক্ত।
কেননা আমরা জানি যে, সমাজের কল্যাণে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এসব সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সম্পাদিত যাবতীয় স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজকে সমাজসেবা বলে। সমাজকল্যাণের পরিভাষায়, মানব কল্যাণ ও উন্নয়নের জন্য গৃহীত সকল পদক্ষেপই সমাজসেবা নামে পরিচিত। সাধারণত সমাজের অভাবে জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে কাজ করাকে সমাজসেবা বলা হয়ে থাকলেও সমাজসেবার পরিসর আরো অধিক যেখানে মানব কল্যাণ ও যে কোনো উন্নয়নমূলক কাজ করা কেও এর অন্তর্ভুক্ত করা যায়। আল্লাহ তায়ালা বঞ্চিতদের সাহায্য করার জন্য নির্দেশ দেন। তিনি বলেন:-
অর্থ: “এবং তাদের (ধনীদের) ধন-সম্পদে রয়েছে অভাবগ্রস্ত বঞ্চিতদের হক”। (সূরা আয-যারিয়াত)
সমাজসেবার আরো একটি দিক ফুটে উঠেছে যে তাদের এলাকার রাস্তাঘাট নষ্ট হওয়ার কারণে মেরামত করতে হচ্ছে অতএব তাদের এলাকার মানুষ বঞ্চিত হয়ে আছে বলেই তাদের উদ্যোগে তা মেরামত করছে। আর বঞ্চিতদের সাহায্য করাটা সমাজসেবার অন্তর্ভুক্ত।
সুতরাং পরিশেষে বলা যায়, জনাব নকীব সাহেবের মাঝে ইসলামের সমাজ সেবায় বিষয়টি প্রকাশ পেয়েছে।
(ঘ) উত্তর: ইসলামের দৃষ্টিতে কায়েসের/নাবিলের দৃষ্টিভঙ্গি পরশ্রীকাতরতার পরিচায়ক।
উদ্দীপকে উল্লেখিত নকীব সাহেব তার এলাকার রাস্তাঘাট মেরামত ও সংস্কার করেন,তা দেখে তার বন্ধু নাবিল/কায়েস তার কাজগুলোতে অংশ না নিয়ে বরং তিনি বলেন নকীব সাহেব নেতা হওয়ার জন্য এসব করেছেন। এ থেকে বোঝা যায় তিনি পরশ্রীকাতরতার মতো মারাত্মক মানসিক ব্যধিতে আক্রান্ত হয়েছেন। অন্যের উন্নতি ও সৌভাগ্য থেকে ঈর্ষা প্রকাশ করা অর্থাৎ কারো ধন-দৌলত সম্মান, ভালো ফল, বা উচ্চ মর্যাদা দেখে ঈর্ষান্বিত হওয়া এবং তার ধ্বংস কামনা করাকে পরশ্রীকাতরতা বলে। এই ব্যধি বহু কারণে সৃষ্টি হয় যেমন শত্রুতা, অহংকার, নিজের অসৎ উদ্দেশ্য নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা ও নেতৃত্বের লোভ ইত্যাদি। এসব কারণে এক ব্যক্তি অপর ব্যক্তির প্রতি হিংসা বিদ্বেষ করে থাকে। পরশ্রীকাতরতার অপকারিতা সীমাহীন। হযরত আদম (আ.) এর পদমর্যাদা দেখে ইবলিশ তার প্রতি ঈর্ষান্বিত হয় ফলে সে অভিশপ্ত হয় এবং আল্লাহ তা’আলার দয়া থেকে বঞ্চিত হয়। পরশ্রীকাতরতা মানবসমাজের কাজগুলো কে ধ্বংস করে দেয়।
এ সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন:-
অর্থ: “আগুন যেমন শুকনো কাঠ কে জ্বালিয়ে ছাই করে দেয় পরশ্রীকাতরতার তেমনি অন্য কে ধ্বংস করে দেয়”.
পরশ্রীকাতরতা মানুষের শান্তি বিনষ্ট করে মনে অশান্তির আগুন জ্বালিয়ে রাখে। পরশ্রীকাতর ব্যক্তি আল্লাহ মানুষের কাছে সর্বদা ঘৃণীত।
তাই উপরোক্ত বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যায়, ইসলামের দৃষ্টিতে কায়েসের/নাবিলের দৃষ্টিভঙ্গি পরশ্রীকাতরতার পরিচায়ক।
.
কোন সমস্যা হলে কমেন্ট করুন এবং পরবর্তী এ্যাসাইনমেন্টগুলো পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। ধন্যবাদ।
আগের পোস্টটি পড়তে ক্লিক করুন ।