Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

আত্মসম্মান নিয়ে মোটিভেশনাল কথা

আমরা মানুষ। মানুষ হিসেবে আমাদের সমাজে বসবাস করতে হয়। মানুষের সাথে সমাজের এক অবিচ্ছেদ্য সম্পর্ক বিদ্যমান। যে সমাজে বসবাস করে না সে মানুষ হতে পারে না। উচু-নিচু, ধনী-গরিব, নারী-পুরুষ, সাদা-কালো, ভালো-মন্দ ইত্যাদি বিভিন্ন লোকের সমাবেশে গঠিত আমাদের সমাজ। সমাজে বিভিন্ন ধরনের লোক বসবাস করে। রুচি, ভালো লাগা মন্দ লাগা, বিবেক-বুদ্ধি প্রভৃতি ক্ষেত্রে একে অন্যের থেকে আলাদা। এই বৈশিষ্ট্রের কারণের একজন থেকে আরেক জনের কদর বেশি থাকে। একজন আরেকজনের চেয়ে বেশি সম্মান পায়। এই সম্মানটা মানুষ কি জন্য পায়। ব্যাংক ব্যালেন্স না লোকবল? আসলে এর কোনোটিই না। তাহলে এর পিছনে কোন শক্তি কাজ করে? সমাজে মানুষের সম্মান প্রতিষ্ঠা করতে প্রয়োজন সচেতনতা, বিবেক-বুদ্ধি, আত্মনিয়ন্ত্রণ এগুলিই।

সচেতনতা সমাজকে উন্নতির দিকে নিয়ে যায়। সমাজে কোনো অনৈতিক কাজ প্রচলিত থাকলে সচেতন ব্যক্তি তা শনাক্ত করে প্রতিহত করার চেষ্টা করে। এতে সমাজে কোনো অনৈতিক কাজ সংঘটিত হতে পারে না। এক্ষেত্রে ব্যক্তির সচেতনতা গুণের মাধ্যমে সমাজকে রক্ষা করে ব্যক্তির মর্যাদা বৃদ্ধি করতে পারে।

বিবেক-বুদ্ধি হলো ব্যক্তির পরিচায়ক। জ্ঞান-বুদ্ধিহীন ব্যক্তিকে মানুষ পাগল বলে। বুদ্ধি থাকলেই শুধু হবে না। বিবেকও থাকতে হয়। বুদ্ধি তো চোরেরও থাকে। এই বলে সে কি সম্মান পাওয়ার যোগ্য? তাই বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন ব্যক্তি সমাজে সম্মানিত হয়। আত্মনিয়ন্ত্রণ সম্মানিত ব্যক্তিদের অন্যতম গুণ। মানুষ যা ইচ্ছা তাই করতে পারে না। কিছু করতে গেলে সেখানে প্রয়োজন হয় ভালো কিছু, উপকারিতা বা অন্তত ক্ষতিকর নয় এমন কিছু। নিজের ভালো হবে এমন কিছু করা উচিৎ নয় যা অন্যের ক্ষতির কারণ। এমন কছু করা বাঞ্চনীয় যা সমাজের জন্য ভালো। যেকোনো অপরাধ থেকে মুক্ত থাকাই হলো আত্মনিয়ন্ত্রণ।

এই গুণগুলি অর্জন করা সহজ ব্যাপার নয়। এগুলি অর্জন করতে সমাজের বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হতে হয়। প্রতিনিয়ত বিভিন্ন বাধা অতিক্রম করে এগিয়ে যেতে হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য কিছু প্রতিবন্ধকতা হলোঃ-

১। শিক্ষার অভাবঃ শিক্ষা আমাদের মৌল মানবিক চাহিদার মধ্যে অন্যতম একটি চাহিদা। শিক্ষার অভাব ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব বিকাশের অন্তরায় হিসেবে কাজ করে। ফলে সমাজে ব্যক্তি নিজেকে ফুটিয়ে তুলতে পারে না। শিক্ষার মাধ্যমেই ব্যক্তির মধ্যে সচেতনতাবোধ, জ্ঞান-বুদ্ধি, বিবেক জাগ্রত হয়। এর মাধ্যমে ব্যক্তির সম্মান বৃদ্ধি পায়।

২। পারস্পরিক মমত্ববোধের অভাবঃ আমরা এখন প্রযুক্তির যুগে বাস করছি। ফলে আমাদের মনটাও যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছে। পরস্পরের প্রতি মমত্ববোধ উঠে যাচ্ছে। একে অপরের প্রতি টান অনুভব করতে পারি না। তাই সমাজের কেউ ভুল করলে শোধরে দিতে পারছি না। বরং তাকে হেয় করার চেষ্টা করছি। কারো শারীরিক গঠন স্বাভাবিক না হলে তাকে নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করতে ভুল করছি না। সেও যে মানুষ আমরা তা ভুলে যাই। নিচু শ্রেণির প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি খুবই করুণ। গরীব ঘরের ছেলে মেয়েদের প্রতি আমাদের নিচু দৃষ্টি থাকে। তারা দূর্বল বলে ঝড়টা তাদের উপর দিয়েই যায়।

৩। হিংসা/অহংকারঃ হিংসা হলো এমন একটি নেতিবাচক চিন্তাধারা যা মানুষের মধ্যে এক অদৃশ্য দেয়াল সৃষ্টি করে। পারস্পরিক সম্পর্কের অবনতি ঘটে। সমাজে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। আগুন যেমন শুকনো কাঠকে জ্বালিয়ে শেষ করে দেয় তেমনি হিংসা মানুষকে ধ্বংস করে দেয়।

অহংকার মানবজীবনের আরো একটি নেতিবাচক গুণ। হিংসা থেকেই অহংকারের সৃষ্টি হয়। সমাজে কারো সম্মান বেড়ে গেলে পার্শ্ববর্তী মানুষের মধ্যে হিংসা কাজ করে। কেউ তা মেনে নিতে পারে না। মানুষ তার ক্ষতি করতে চায়। হিংসা/অহংকারবশত এভাবেই মানুষ নিজের ক্ষতি করে থাকে।

৪। অপরিকল্পিত সমাজব্যবস্থাঃ অপরিকল্পিত সমাজব্যবস্থা সমাজিক মূল্যবোধের জন্য হুমকিস্বরূপ। সমাজে ধনী-গরিব, উচু-নিচু, কৃষ্ণাঙ্গ-শ্বেতাঙ্গ ইত্যাদি শ্রেণির উপস্থিতি সমাজের মানুষের মধ্যে বিরুপ প্রভাব ফেলে। মানুষের প্রতি মানুষের দৃষ্টিভঙ্গির তারতম্যের সৃষ্টি হয়। এতে নিম্নশ্রেণীর মানুষের সম্মান ভূলুণ্ঠিত হতে পারে।

তাছাড়া সমাজের কিছু লোকের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা উচিৎ। যেমনঃ

সমাজে কিছু লোক আছে যারা জামেলা পাকাতে পারদর্শী। মানুষের কল্যাণের চেয়ে ক্ষতিটাই তারা চায়। একে অপরের সাথে জামেলা পাকিয়ে নিজে তা উপভোগ করে। এ ধরনের মানুষ সমাজে অনেকেই আছে। তাদের থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকাই ভালো।আরেক শ্রেণির মানুষ আছে যারা কথার মাধ্যমে মানুষকে বিরক্ত করে। তর্কে জয়ী হওয়া তাদের লক্ষ্য। হোক সঠিক আর বেঠিক কথার মাধ্যমে মানুষকে বিভ্রান্ত করে। তাদের থেকেও দূরে থাকা উচিৎ।

স্বার্থপর ব্যক্তিকে কখনো নিজের বন্ধু বানাবেন না। তারা বন্ধুবেশী শত্রু। প্রকাশ্যে যতই বন্ধুত্বের ছড়া কাটুক না কেন একদিন ঠিক নিজের স্বার্থ বুঝে পালাবেই। তারা বিশ্বাসের অযোগ্য। তাই তাদের থেকেও নিজের রাস্তা মাপুন। উপরিউক্ত কারণগুলো ছাড়াও সমাজে আরো অনেক শ্রেণির মানুষ আছে যাদের সংস্পর্শ আমাদের এড়িয়ে চলা উচিৎ।

……….ইমন………

কটিয়াদি কিশোরগঞ্জ

Related Posts

13 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No