Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

আল্লাহ নম্রতাকেই ভালোবাসেন

মানবজাতি সৃষ্টির পর পৃথিবীতে আল্লাহ যুগে যুগে বহু নবি রাসূল প্রেরণ করেছেন। তারা তাদের জীবদ্দশায় মানবজাতিকে আল্লাহর নির্দেশিত পথের সন্ধান দিয়েছেন। তারা মানুষকে শিখিয়েছেন কীভাবে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশ করতে হবে। কীভাবে পৃথিবীকে আখিরাতের শস্যক্ষেত্র হিসেবে ব্যবহার করতে হবে। কীভাবে ইহকাল ও পরকালের শান্তি ভোগ করা যাবে। আল্লাহ তার প্রেরিত নবি রাসূলগণের মাধ্যমে এটাও শিখিয়েছেন কীভাবে মানুষে মানুষে ভ্রাতৃত্বভাব বজায় রেখে কল্যানের পথে জীবন অতিবাহিত করতে হবে। । সৃষ্টির সেরা জীব মানুষের আচরণ কেমন হবে, কেমন হবে তার চারিত্রিক গুণাবলি তাও শিখিয়েছেন, যাতে করে মানুষ পথভ্রষ্ট না হয়। তাই ইসলামে সদাচরণ একটি মহৎ গুণ হিসেবে বর্ণিত হয়েছে। কুরআন ও হাদিসের বিভিন্ন জায়গায় এই সদাচরণ, সুচরিত্র তথা আখলাকের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বাণী তথা নির্দেশনা রয়েছে। বলা হয়েছে যার আখলাক যত বেশি ভালো আল্লাহর কাছে সে তত বেশি ভালো। পবিত্র আল কুরআনে বলা হয়েছে … তোমরা মাতাপিতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। আত্মীয়, প্রতিবেশী, নিকটবর্তীজন, পাশর্^বর্তী লোকজন সহচর, মুসাফির এবং তোমার অধীন দাসদাসীসহ সবার প্রতি ইহসান ও ভালো ব্যবহার কর’- সুরা আন নিসা । সুরা আল ফুরকানের এক আয়াতে আল্লাহ ইরশাদ করেন وَعِبَادُ ٱلرَّحۡمَـٰنِ ٱلَّذِينَ يَمۡشُونَ عَلَى ٱلۡأَرۡضِ هَوۡنً۬ا وَإِذَا خَاطَبَهُمُ ٱلۡجَـٰهِلُونَ قَالُواْ سَلَـٰمً۬ا ٦٣ ‘ রহমানের (আসল) বান্দা তারাই যারা পৃথিবীর বুকে নম্রভাবে চলাফেরা করে এবং মুর্খরা তাদের সঙ্গে কথা বলতে থাকলে বলে দেয় তোমাদের সালাম। তারা নিজেদের রবের সামনে সিজদায় অবনত হয়ে ও দাঁড়িয়ে রাত কাটিয়ে দেয়। ’ শুধু মা বাবা কিংবা আত্মীয় পরিজন নয় সমাজের সব স্তরের মানুষের সাথেই নম্র ও ভদ্র আচরণের নির্দেশ রয়েছে ইসলামে। সুরা বনি ইসরাইলের ২৮ নং আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামিন ইরশাদ করেন ‘ যদি তাদের থেকে ( অভাবী, মিসকিন, আত্মীয়স্বজন ও মুসাফির থেকে) তোমাদের মুখ ফিরিয়ে নিতে হয় এজন্য যে তুমি এখন আল্লাহর প্রত্যাশিত রহমতের সন্ধান করে ফিরছ(অর্থাৎ তোমার সামর্থ্য নেই) তাহলে তাদের সঙ্গে মধুর ও নরম ব্যবহার কর। অর্থাৎ সাহায্যপ্রার্থী কাউকে যৌক্তিক কারণে ফিরিয়ে দিতে হলেও তাদের সঙ্গে নম্র ব্যবহার করতে হবে। তাদের ধমক দিয়ে তাড়িয়ে দেওয়া যাবে না। এ কাজটা আমরা এখন সমাজে অহরহই করে থাকি যা ইসলামের দৃষ্টিতে নিন্দনীয় অপরাধ। হাদিস শরীফেও নম্রও ভদ্র আচরণের প্রতি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। হযরত মোহাম্মদ (স) বলেছেন ‘আল্লাহ স্বয়ং নম্র, তাই তিনি নম্রতাকেই ভালোবাসেন। তিনি কঠোরতার জন্য যা দান করেন না তা নম্রতার জন্য দান করেন। নম্রতা ছাড়া অন্য কিছুতেই তা দান করেন না। এটি মা হযরত আয়েশা রা. থেকে বর্ণিত মুসলিম শরীফের হাদিস। হযরত জারির (রা.) থেকে বর্ণিত অন্য একটি হাদিসে আছে রাসুলুল্লাহ (স) বলেছেন ‘যার মধ্যে নম্রতা নেই সে প্রকৃত কল্যান থেকেই বঞ্চিত।’ (মুসলিম) । নবি কারিম (স) আরও বলেন ‘নম্রতা যে কোনো বিষয়কেই সৌন্দর্যমন্ডিত করে। আর কারও কাছ থেকে নম্রতা বিদূরিত করা হলে এটা তাকে কলুষিত করে ছাড়ে। ’(মুসলিম)। রাসূল (স) আরও বলেন ‘যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহরই সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে বিনয় ও নম্রতার নীতি অবলম্বন করে আল্লাহ তার মর্যাদা বাড়িয়ে দেন।’(মুসলিম) । অর্থাৎ বুঝা গেল, ্ইসলামে নম্রতা ও ভদ্রতার গুরুত্ব অপরিসীম। তাই আসুন আমরা একে অপরের সাথে কথাবার্তা, চলাফেরায়, আচরণে নম্রতা ও ভদ্রতার সর্বোচ্চ প্রদর্শন করি এবং আল্লাহ ও তার রাসূলের দেখানো পথকে অনুসরণ করি। এতেই মানবজাতির ইহকাল ও পরকালীন মঙ্গল নিহিত রয়েছে। আল্লাহ সবাইকে আমল করার তৌফিক দিন।

Related Posts

3 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No