প্রিয় দ্বিনি ভাই ও বোনেরা,আস সালামু আলাইকুম। কেমন আছেন? আশা করি সবাই ভালো আছেন। মুসলমানদের সবচেয়ে খুশির দুইটি দিন হলো ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা। ঈদুল ফিতর দীর্ঘ ১ মাস সিয়াম সাধনার পরে আসে এবং ঈদুল আযহায় মূলত কুরবানী করার মাধ্যমে পালিত হয়। বর্তমানে চলছে রমজান মাস। এই মাস প্রায় শেষের দিকে।আর মাত্র ১/২ দিন পরেই ঈদুল ফিতর।
ঈদুল ফিতরে মুসলমানদের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি সুন্নত। যা পালন করতে ভালো আর না করতে পারলে কোনো গুনাহ নেই। তবে তার ও আগে আমাদেরকে সুন্নত গুলো জানতে হবে।আসুন ব্যাখার সাথে জেনে নেই প্রিয় নবীজির সেই সুন্নাতগুলোঃ
আমরা রমজান মাসে প্রায় সবাই দেরিতে ঘুম থেকে উঠি। কিন্তু না ঈদের দিনে আমাদের উচিত খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠা। অর্থাৎ ফজরের ওয়াক্তে উঠার পর আর না ঘুমানোই ভালো হবে। প্রতি দিনের তুলনায় আগে আগে ঘুম থেকে জাগ্রত হওয়া। (বায়হাকী ৬১২৬)
প্রতিদিনের মতো আমরা যেনো এ দিনে ও মিসওয়াক করি বা দাঁত পরিষ্কার করি। এটি ও নবীর সুন্নাত।
মিসওয়াক করা বা দাঁত পরিষ্কার করা । (তাবয়ীনুল হাকায়েক ৫৩৮)
দাঁত পরিষ্কার করা হয়ে গেলে আমরা সবাই গোসল করে নিবো। এবং অবশ্যই অজু করবো।
ভালোভাবে ওজু গোসল করা। (ইবনে মাজাহ ১৩১৫)
আমাদের সবাইকে একটা বিষয় মাথায় রাখতে হবে আমরা কেউ যেনো বেশি পরিমাণে সাজসজ্জা না করি। কোনো জিনিসই অতিরিক্ত করা ভালো নয়। আর আমরা যতটুকুই করি না কেনো সেটা অবশ্যই হতে হবে শরিয়তসম্মত।
শরীয়তসম্মত বা শালীনতা বজায় রেখে সাজসজ্জা করা। (বুখারী ৯৪৮)
তারপর আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যে ঈদের কাপর কিনেছিলাম সেটা পড়ে নিবো।
সামর্থ অনুপাতে উত্তম বা তাকওয়াবান পোশাক পরিধান করা। (বুখারী -৯৪৮, মুস্তাদরাকে হাকেম ৭৫৬০)
আতর ব্যবহার করা সুন্নাত। বেশি এ্যালকোহলযুক্ত সেন্ট ব্যবহার না করে আতর ব্যবহার করবো।
সুগন্ধি বা আতর ব্যবহার করা। (মুস্তাদরাকে হাকেম,৭৫৬০)
যেহেতু এটি ঈদুল ফিতর তাই আমরা কিছু খেয়ে ঈদের সালাতে যাবো।
ঈদুল ফিতরে দিন সকালে ঈদগাহে যাবার আগে মিষ্টি জাতীয় যেমন খেজুর ইত্যাদি খাওয়া। তবে ঈদুল আযহাতে কিছু না খেয়ে ঈদের নামাযের পর নিজের কুরবানীর গোশত আহার করা উত্তম। (বুখারী৯৫৩, তিরমিজী, ৫৪২, সুনানে দারেমী১৬০৩)
আমরা চেষ্টা করবো সবাই যেনো আগে আগে ঈদগাহে গিয়ে উপস্থিত হতে পারি।
সকাল সকাল ঈদগাহে যাওয়া। (আবু দাউদ, ১১৫৭)
আমাদের নির্ধারিত ফিতরাগুলো আমরা নামাজের আগেই পরিশোধ করে দিবো।
ঈদুল ফিতরে ঈদগাহে যাওয়ার পূর্বে সদকায়ে ফিতর আদায় করা। (দারাকুতনী, ১৬৯৪)
বর্তমান পরিস্থিতিতে যদি আমাদেরকে মসজিদে আদায় করতে হয় তাহলে আমরা তা করতে পারবো।
ঈদের নামায ঈদগাহে আদায় করা, জরুরতের কারণে মসজিদে আদায় করতে পারিবেন । (বুখারী, ৯৫৬, আবু দাউদ, ১১৫৮)
১১. অর্থাৎ যাওয়ার সময় ডান দিক দিয়ে গেলে আসার সময় বাম দিক দিয়ে আসবো।আর যাওয়ার সময় বাম দিক দিয়ে গেলে আসার সময় ডান দিকে আসবো।
যে রাস্তায় ঈদগাতে যাবে, সম্ভব হলে ফিরার সময় অন্য রাস্তা দিয়ে ফিরা। (বুখারী -৯৮৬)
সবচেয়ে ভালো হবে গাড়ি বা অন্যকোনো যানবাহন ব্যবহার না করে পায়ে হেটে যাওয়া। এটি হলো সুন্নাত।
পায়ে হেটে যাওয়া। (আবু দাউদ, -১১৪৩)
এই দোয়া মোটামুটি আমাদের সবার-ই জানা। এই দোয়া মুখস্ত না থাকলে আমরা মুখস্ত করে নিবো ইনশাআল্লাহ। ঈদগাহে যাবার সময় এই তাকবীর পড়তে থাকাঃ
اللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ لَا إِلَهَ إِلَّا اللَّهُ، وَاللَّهُ أَكْبَرُ اللَّهُ أَكْبَرُ وَلِلَّهِ الْحَمْدُ
(মুস্তাদরাকে হাকেম ১১০৫)
সবাইকে অগ্রীম ঈদ মোবারাক। ভালো থাকুন,সুস্থ থাকুন,নিরাপদে থাকুন।