“এবারই শেষ চান্স, এবার যদি ফেল করিস তাহলে তোকে কোনও রিক্সাওয়ালার সাথে বিয়ে দিয়ে দিব”।
কোন মেয়ে যদি একাধিকবার এস, এস, সি কিংবা এইচ, এস, সি পরীক্ষায় ফেল করে স্বভাবতই তার বাবা রাগ করে এমন কথা বলে থাকেন। অপর দিকে ছেলেদের বাবারাও তো কম যান না! তারাও বার বার ফেল করা ছেলেদের উদ্দেশ্যে বলে থাকেন, “এবার যদি ফেল করিস তাহলে তোর পড়া – লেখা বন্ধ। একটা রিক্সা কিনে দিব, নিজের রাস্তা নিজে দেখে নিবি”।
কিন্তু কথা হলো গিয়ে, কেউ কি শুনেছেন বাবা রেগে গিয়ে পরীক্ষায় ফেল করা মেয়েকে রিক্সাওয়ালার সাথে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন? কিংবা ছেলেকে রিক্সা কিনে দিয়ে আলাদা করে দিয়েছেন এমন ঘটনা ঘটেছে কোথাও? মনে হয় এমন কথা কেউ শুনেন নি বা দেখেন নি। কিন্তু আজ আমি আপনাদের এমনই একটি ঘটনার কথা বলতে যাচ্ছি। আসলে এটিকে ঘটনা না বলে কাহিনী বলাটাই শ্রেয়। কারন এটি রূপকথার কল্প – কাহিনীকেও হার মানাবে!
তো কথা না বাড়িয়ে চলুন ঢুকে যাই মূল কাহিনীতে –
কল্পনার আব্বু এক কথার মানুষ। তিনি তার কথা রেখেছেন। তিন তিনবার ইন্টারমিডিয়েট ফেল করার পর কল্পনার বড় বোন আল্পনাকে এক রিকশাওয়ালার সাথে বিয়ে দিয়ে দিয়েছেন। তিনি যে তার কথা এভাবেই রক্ষা করবেন তা কল্পনা, আল্পনা তো দূরের কথা তাদের মা পর্যন্ত ভাবতে পারেন নি!! সে যাই হোক ঘটনা কিন্তু যা ঘটার ঘটে গেছে।
রিকশাওয়ালা দুলাভাইকে নিয়ে কল্পনা তো মহা বিরক্ত। যখন তখন লোকজনের মধ্যে এসে কল্পনার সাথে শালী শালী বলে ঢং করে, যেটা তার কাছে খুবই বিরক্ত লাগে।
এদিকে কল্পনা একটু ভয়ও পেয়ে যায়। কি জানি তার বেলায়ও যদি এমনটি ঘটে! ভয়ে ভয়ে সে ভালোভাবে পড়াশোনা চালিয়ে যায়। কারন, সে ফেল করতে চায় না। সে কোন রিকশাওয়ালাকে বিয়ে করতে আগ্রহী নয়।
কল্পনার দুলাভাইয়ের পারিবারিক ইতিহাস বা অবস্থা তারা কেউই জানতো না। তার বাবা একদিন ঐ রিক্সাওয়ালার রিকশায় বাজার থেকে ফিরছিলেন। তখন উনি কল্পনার আব্বুর সব বাজার নিজে হাতে করে বাসায় পৌছে দিয়ে যান। যা দেখে কল্পনার আব্বু মুগ্ধ হয়েছেন। যার ফলস্বরূপ ওনার সাথে তার বোনের বিয়ে। কিন্তু ওনার ফ্যামিলির সাথে কল্পনাদের এখনো দেখাই হয়নি। দুলাভাই সারাদিন রিকশা চালিয়ে এসে বাসায় এসে ঘাম মুছতে মুছতে ডাকেন,”ও বউ! কই গেলা? ও শালী! এক গ্লাস পানি দেও।”
মনের দুঃখে আল্পনা কয়েকবার আত্নহত্যা করতে চেষ্টা করেছিল। কিন্তু প্রতিবারই বাবার হাতে জোরসে থাপ্পড় খেয়ে রণে ভঙ্গ দিয়েছে।
অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন পরের পর্বের জন্য ……