হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব

অ্যালার্জিজনিত সমস্যায় বেশি ভুগতে হয়। অ্যালার্জির কারণে শ্বাসকষ্টও বেড়ে যায় বহুগুণে। গ্রিক ভাষায় অ্যাজমা শব্দের অর্থ হলো হা করে শ্বাস নেওয়া। গ্রিক চিকিৎসক হিপোক্রেটিস সর্বপ্রথম অ্যাজমা শব্দটি ব্যবহার করেন। অ্যাজমা বা হাঁপানি হলো এমন একটি শারীরিক অসুস্থতা যার দ্বারা সব বয়সের লোকজন আক্রান্ত হতে পারে।
অ্যাজমার লক্ষণসমূহ :
 দম বন্ধ অনুভূত হওয়া।
 শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া।
 বুকের ভিতর বাঁশির মতো শাঁ শাঁ শব্দ অনুভব করা।
 বুক ভরে শ্বাস নিতে না পারা।
 অল্প পরিশ্রম করলে রোগী হয়রান অনুভব করবে।

হাঁপানি রক্ষার উপায়

• প্রতিদিন একটি কলা খেলে ৩৪% পর্যন্ত হাঁপানি ভালো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
• হাঁপানি রোগীদের জন্য পালং শাক খুবই উপকারী।
• হাঁপানি রোগীদের খাবারে হলুদের পরিমাণ বেশি
• ফুসফুসকে রক্ষা করার জন্য হাঁপানি রোগীদের প্রতিদিনের খাবারের তালিকায় একটি করে আপেল রাখতে হবে।
• হাঁপানি রোগীদের পুষ্টিকর, সুষম ও হালকা মসলাযুক্ত খাবার খেতে হবে
• লাল বা হলুদ রঙের ফল, সবুজ শাক সবজি হাঁপানি রোগীদের জন্য খুবই ভালো।
• সবুজ রঙের ফল ও শাক সবজিতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি পাওয়া যায় আর মারজারিন, সয়াবিন ও অলিভ অয়েলে প্রচুর ভিটামিন ই পাওয়া যায়। এসব খাবারগুলো হাঁপানি রোগীদের জন্য খুবই উপকারী।
• প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে সবুজ শাকসবজি রাখুন খাবার তালিকায়। সবজিতে আছে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট ও প্রচুর ভিটামিন,যা শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং হাঁপানির ঝুঁকি কমিয়ে দেয়।
• রাতে ঘুমানোর আগে এক কাপ কুসুম গরম পানি পান করতে হবে। এটি হজমে সহায়ক হবে এবং শ্বাসতন্ত্র থেকে বিষাক্ত উপাদান অপসারণ করবে।
• শ্বাস নিতে প্রায়শই অস্বস্তি লাগলে নিয়মিত পরিষ্কার পানির ভাপ নিতে পারেন। মনে রাখতে হবে, পানিতে কোনো কিছু মেশানো যাবে না।
• শ্বাস নিতে সমস্যা হলে বুকের ওপর কুসুম গরম পানির ব্যাগ চাপিয়ে রাখলে আরাম পাওয়া যায়।
• মাঝেসাঝে হলুদ মেশানো দুধ পান করার অভ্যাস গড়ে তোলাটা শ্বাস-প্রশ্বাসের সমস্যায় বেশ উপকারী। হলদি দুধ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং নিঃশ্বাস চলাচল সহজ করে।

হাঁপানি রোগীর সাবধানতা
বিশেষ করে ডিম, চিংড়ি মাছ, গরুর মাংস,ইলিশ মাছ, বেগুন, মিষ্টি কুমড়া, কাজু বাদাম, চীনা বাদাম, সরিষা, চকলেট, গুড়, মধু, দুধ ও দুধ থেকে তৈরি খাবার না খাওয়াই ভালো।
হাঁপানি রোগীর জন্য অ্যালার্জিযুক্ত খাবার বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। তাই যার যে খাবারে অ্যালার্জি হতে পারে, তার সেটা এড়িয়ে চলা উচিত। প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে খালি পেটে একগ্লাস কুসুম গরম পানি পান করতে হবে।
অ্যাজমা বা হাঁপানি অ্যাটাকের সময় আচার এড়িয়ে যাওয়া ভাল।
বাজারের কৃত্রিম লেবুর রস এবং জুস না খেয়ে বরং তাজা লেবুর রস পান করার চেষ্টা করুন, এটি আপনার শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা কিছুটা হলে কমিয়ে দেয়।
হাঁপানি রোগীর আনারস, এপ্রিকট, ক্র্যানবেরি জাতীয় খাবার খাওয়া উচিত নয়।
অ্যাজমা অ্যাটাকের সময় যেকোন সফট ড্রিঙ্ক এড়িয়ে চলুন।
ফ্রেঞ্চ ফ্রাই খাওয়া উচিত নয়।
হাঁপানি রোগীর আশপাশে ধূমপান বর্জনীয় ও মশার কয়েল জ্বালানো যাবে না।
ধুলো ঝাড়াঝাড়ি করা চলবে না।
ধোঁয়াযুক্ত বা খুব কড়া গন্ধওয়ালা কোনো পরিবেশে থাকা চলবে না।

সতর্ক জীবনযাপন ও চিকিৎসার মাধ্যমে শতকরা ৮০ ভাগ হাঁপানি নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।

Related Posts

4 Comments

মন্তব্য করুন