আসসালামুয়ালাইকুম, কেমন আছেন আপনারা সবাই? আশা করি সবাই অনেক ভালোই আছেন। তো আবারও চলে আসলাম নতুন একটি আর্টিকেল নিয়ে আপনাদের মাঝে। একজন ভালো বন্ধুর গল্প । প্রকৃত বন্ধুত্বের বাস্তব গল্প –
জীবনে বন্ধুদের ছাড়া চলা প্রায় অসম্ভব এই কথাটি নিশ্চই আমরা সবাই মানি। কারণ আমাদের জীবনে বন্ধুর প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। একজন মানুষ সবদিক থেকে কখনো সুখী হয়না, ঠিক তেমনি বন্ধু ছাড়া আপনি সবদিক থেকে সুখী হতে পারবেন না।
দিনশেষে নিজের ভালো খারাপ কথাগুলো শেয়ার করার জন্য হলেও একজন মনের মত বন্ধু চাই। তবে আজকে আমরা বন্ধুত্ব নিয়ে কোনো স্ট্যাটাস বা উক্তি শুনবো না। বরং আসল বন্ধুত্বের একটি গল্প শুনবো। সত্যিকারের বন্ধুত্বগুলো কেমন হয় সেটা আপনারা এই গল্পের মাধ্যমে জানবেন। চলুন তবে শুরু করা যাক।
একজন ভালো বন্ধুর গল্প । প্রকৃত বন্ধুত্বের বাস্তব গল্প
গল্পটা হচ্ছে দুইজন বেস্ট ফ্রেন্ড এর। যারা ছোট থেকে একই পাড়ায়, একই স্কুলে পড়ে বড় হয়েছে। দুজনের প্রতিদিন কথা না বললে যেন দিন কাটত না। যে যেখানেই থাকুক না কেন, দিনশেষে একে অপরকে নিজেদের সিক্রেট কথাগুলো শেয়ার না করে ঘুমাতে পারতো না।
এভাবে তাদের বন্ধুত্বের কেটে যায় ১০ টি বছর। আর একটি বন্ধুত্ব ১০ বছর টিকে থাকা, কোনো সাধারণ বিষয় নয়। তাদের দুই বন্ধুর মধ্যে একজন হচ্ছে সিধু, যে ছিল হিন্দু আর দ্বিতীয় বন্ধু হচ্ছে আদি, যে ছিল মুসলিম।
তারা ধর্মীয় দিকে ভিন্ন হলেও তাদের বন্ধুত্বতে সেটা কোনো বিষয় না। তারা কলেজে উঠলো, দুজনেই একই কলেজে ভর্তি হলো। বলে রাখা ভালো সিধু একটু শান্ত স্বভাবের, লজ্জার ভাবটা তার একটু বেশি। কিন্তু আদি অনেকটাই চালাক এবং সে সহজে যেকারো সাথে মিশে যেতে পারে।
কলেজ জীবনের এক পর্যায়ে আদি একটি মেয়ের সাথে সম্পর্কে জড়িয়ে পরে। কিন্তু মেয়েটি আদির সাথে কেবল টাইম পাস করতো। আদি সেটা বুঝতো না। একদিন সিধু দেখতে পেলো মেয়েটি অন্য একটি ছেলের সাথে রেস্টুরেন্টে বসে আড্ডা দিচ্ছে। দুজন অনেকটা কাছাকাছি ছিল, মনে হচ্ছিল তারা স্বামী স্ত্রীর মতোই।
সিধু কথাটা গিয়ে সরাসরি আদিকে বললে, আদি প্রচন্ড রেগে যায় এবং সিধুকে একটি থাপ্পড় মারে। কিন্তু সিধু পাল্টা কিছুই না বলে আদির বাসা থেকে বেরিয়ে যায়। সিধু থাপ্পড় এর কথাটি একটি ডায়েরিতে লিখে রাখে একটি Bad Memories হিসেবে।
অনেকদিন তাদের মধ্যে কোনো যোগাযোগ হয়না। আদি মেয়েটাকে এতটাই বিশ্বাস করে যে নিজের ১০ বছর পুরোনো বেস্ট ফ্রেন্ড এর কথা পর্যন্ত তার বিশ্বাস হলো না। কিন্তু একদিন বিকেলে আদি নিজেই দেখতে পেলো মেয়েটি একটি ছেলের সাথে ঘুরছে।
তখন তার কান্না পেল খুব, এবং সে এক পর্যায়ে কেঁদে ফেললো। কিন্তু তার কান্নার কারণ মেয়েটি নয়। সে তার ১০ বছরের বেস্ট ফ্রেন্ড কে এমন একটা মেয়ের জন্য থাপ্পড় মেরেছে এটা ভেবেই সে কাদঁছে।
সিধু তাদের এলাকার একটি স্কুলের দেয়াল আছে সেখানে মন খারাপ হলে বসে থাকতো। আদি সরাসরি চলে গেলো সেখানে। এবং তাকে জড়িয়ে ধরে বললো “আমাকে ক্ষমা করে দে বন্ধু, আমি বড্ড বড় ভুল করে ফেলেছি”। তখন কিন্তু সিধু আদির উপরে রাগ করেনি, উল্টে তাকে জড়িয়ে ধরে সান্তনা দিতে থাকলো।
এটাই হচ্ছে প্রকৃত বন্ধুত্বের উদাহরণ। বন্ধুত্বের মধ্যে রাগ, অভিমান, হাসি ঠাট্টা সব কিছুই থাকবে। দিন শেষে একে অপরের বিরাট বড় সঙ্গী। গল্পটি আপনাদের কেমন লেগেছে অবশ্যই জানাবেন, শেষ করছি আর্টিকেলটা। আল্লাহ হাফেজ।