সুপ্রিয় পাঠক এবং পাঠিকা , সবাই কেমন আছেন। আমি ২০১৯ সালের নভেম্বর মাস থেকে grathor.com এর সদস্য ।
আমি নিয়মিত না, আমার ইচ্ছে হলে মাঝেমধ্যে একটু লেখালেখি করি। আমি জানি আমার লেখাতে তেমন কিছু নেই কারণ আমি লেখালেখি জগতে নতুন।
এতদিন ভাবতাম কি বিষয়ে লেখা যায়, ভাবতাম আর ভাবতাম। কিন্তু যখন কোন বিষয়ে লিখতে যাবো তখন দেখি যে এই বিষয়ে অনেকেই বলে ফেলেছে। মাঝেমধ্যে মনে হয় এসব ভুলে যাবো। পরিশেষে ভাবলাম কেন নয় নিজের জীবন সম্পর্কে লিখি এতো আর কপিরাইট আইন ভঙ্গ হবে না। তাই আবার আপনাদের মাঝে ফিরে আসলাম।
আমি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি সেই মানুষকে যিনি আমাদের জন্য গ্রাথোর ওয়েবসাইট তৈরি করেছেন।আর আপনারা সবাই মন থেকে আশীর্বাদ করবেন।
আজকে লেখব একটা সিগারেট এর আত্মকাহিনী।
” আমার নাম সিগারেট। পরিচয় করিয়ে দেওয়ার কিছু নেই। আমার অনেক জাত ভাই আছে। সেই সাথে আপনাদের সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা আমার জাত ভাই দের ব্যবহার করে থাকে।
আমার জন্ম হল একটি কারখানায়। আমাকে তৈরি করলেন এক বৃদ্ধ ব্যক্তি। তিনি বলছিলেন তার দুঃখের কথা। কিন্তু তার গল্পটা শেষ না হতেই আমাকে একটা প্যাকেটের ভিতর ঢুকিয়ে দেওয়া হলো। আমার সাথে আর কয়েকজন কে রাখা হলো। সেই প্যাকেটের গায়ে লিখা ছিল “ধুমপান মৃত্যুর কারণ”.
খুব দুঃখ পেলাম। আমাকে এতো সুন্দর করে বানানো হলো অথচ আমি নাকি মৃত্যুর কারণ।
অতঃপর আমাকে নিয়ে যাওয়া হলো একটি দোকানে। সেখানে ছিলাম কয়েকদিন। হঠাৎ একদিন একটা ছেলে বিষাদগ্রস্ত অবস্থায় সেই দোকানে আসল। দোকানির সাথে কি যেন কথা বললো। তখন দোকানি তাকে আমার প্যাকেট থেকে একটা সিগারেট বের করে ওই ছেলেকে দিল।
ছেলেটি চলে গেলে দোকানি চাপা স্বরে বলল “হায়রে প্রেম! ”
দুদিন বাদে আরেক ব্যক্তি আসল।সে বলতে লাগল তার সংসারের হাল চাল। তিনি দোকানিকে বলছেন ” আমি সারাজীবন খেটে গেলাম। দুটো ছেলেকে পড়াশোনা করালাম, ছোট মেয়েটার বিয়ে দিলাম।বড় ছেলে কে চাকরি নিয়ে দিলাম। কিছুদিন আগে সে বিয়ে করে ঘরে বৌ এনেছে। অথচ কোমরের ব্যাথা আমি চলতে পারিনা। ছেলে কে বলতেই ছেলে বলল শুধু শুধু টাকা খরচ করে ডাক্তার দেখিয়ে কি লাভ।তার থেকে দুটো ব্যাথার বড়ি খেলেই তো পারো। পাশের ঘর থেকে বেরিয়ে এসে বৌমা বলল” সারাদিন বসে বসে খেলে তো ব্যাথা করবেই” ।
তারপর তিনি দোকানিকে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন একটা সিগারেট দাও। তখন দোকানি প্যাকেট থেকে আমাকে বের করে দিলেন। লোকটি আমাকে আগুনে জ্বালিয়ে ধোঁয়া নিতে লাগলেন আর তখন ওনার চোখের জলে দেখলাম পুরানো সব স্মৃতি।আস্তে আস্তে আমার শরীরের সব জায়গা পুড়ে ছাই হয়ে গেল কিন্তু তখনও একটা প্রশ্ন জাগলো সত্যই কি আমি মৃত্যুর কারণ? নাকি মনুষ্যত্ব হীন মানুষ এই পৃথিবীকে দূষিত করে চলেছে?
এটা তো কেবল একটি সিগারেটের গল্প। কিন্তু প্রতিনিয়ত একেকটি সিগারেট একটি করে গল্পের সাক্ষ হয়ে পুড়ে ছাই হয়ে যায়।কত মানুষের মনের কথা বের হয়ে আসে সিগারেটের ধোঁয়ায় ।
আমি জানিনা আমি কি লিখেছি ।যদি ভালো লাগে তবে কমেন্ট করবেন আর অভিজ্ঞ দাদা এবং দিদিরা আমার জন্য কিছু উপদেশ দিলে কৃতজ্ঞ থাকব।
ধন্যবাদ সবাইকে ভাল থাকবেন।