আসসালামু আলাইকুম,
প্রিয় শিক্ষার্থীবন্ধুরা,
আশা করি সবাই ভালো আছেন,সুস্থ আছেন।
বরাবরের মতোই আজকে আমি এই পোস্ট এ ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য সরকার কতৃক দেওয়া বাংলাদেশ ও বিশ্ব সভ্যতা এ্যাসাইনমেন্ট এর প্রশ্ন আপনাদের সুবিধার্থে একটি নমুনা উত্তর লিখে দিব।
আশা করি এই পোস্ট এর মাধ্যম এ উপকৃত হবেন।
আপনারা হয়তো জানেন যদি করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তাহলে নভেম্বরের ২য় সপ্তাহে এসএসসি ২০২১ এর পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। যদি পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব না হয় তাহলে এই এ্যাসাইনমেন্ট এবং ৫ম ও ৮ম শ্রেণির সাবজেক্ট ম্যাপিংয়ের এর মাধ্যমে মূল্যায়ন করে ফলাফল দেওয়া হতে পারে।
প্রথম ধাপে গত ১৮ তারিখ ৩ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট প্রকাশ করা হয়েছে। আপনারা প্রশ্ন টি মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ড এই সাইটে অথবা পোস্ট এ কমেন্ট করতে পারেন।
তো আর কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক-
বাংলাদেশ ও বিশ্ব সভ্যতা এ্যাসাইনমেন্ট প্রশ্ন –
সিন্ধু সভ্যতার আর্থ-সামাজিক অবস্থার
বিশ্লেষণপূবর্ক এ সভ্যতার নগর পরিকল্পনার সাথে তোমার এলাকার নগর পরিকল্পনার তুলনামূলক চিত্র উপস্থাপন।
নমুনা উত্তরটি হুবুহু না লিখে ধারণা নিয়ে নিজ মেধা দিয়ে লেখার অনুরোধ রইল।
সিন্ধু সভ্যতার পটভূমি-
সিন্ধু নদের অববাহিকায় গড়ে উঠেছিল বলে এই সভ্যতার নাম রাখা হয় সিন্ধু সভ্যতা। সিন্ধু সভ্যতা সংস্কৃতিকে অনেক সময় হাগি সংস্কৃতি বা হরা সভ্যতা বলা হয়ে থাকে। এই সভ্যতার আবিষ্কার কাহিনী খুবই চমৎপ্রদ। পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশের লারকানা জেলার মহেঞ্জোদারো শহরে উঁচু মাটির ঢিবি ছিল।সেখানকার লোকেরা বলতো মরা মানুষের ঢিবি( মহেঞ্জোদারো কথাটির মানে তাই)
বাঙালি প্রত্নতত্ত্ববিদ রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় এর নেতৃত্বে পুরাতত্ত্ব বিভাগ এর লোকেরা এ অঞ্চলে জাহাজের ধ্বংসাবশেষ আছে ধারণা করে মাটি খুড়তে থাকেন। অপ্রত্যাশিতভাবে বেরিয়ে আসে তাম্র যুগের নিদর্শন ১৯২০-১৯২২ খ্রিস্টাব্দে দয়ারাম সাহানির প্রচেষ্টায় পাঞ্জাবের পশ্চিম দিকে মন্টোগোমারি জেলার হরপ্পা নামক স্থানে ও প্রাচীন সভ্যতার নিদর্শন আবিষ্কৃত হয়। জন মার্শালের নেতৃত্বে পুরাতত্ত্ব বিভাগ অনুসন্ধান চালিয়ে আরো বহু নিদর্শন আবিষ্কার করে।
ভৌগলিক অবস্থান-
উপমহাদেশের প্রাচীনতম সিন্ধু সভ্যতা বিশাল এলাকাজুড়ে অবস্থিত। মহেঞ্জোদারো ও হরপ্পাতে এ সভ্যতার নিদর্শন সবচেয়ে বেশি আবিষ্কৃত হয়েছে তা সত্ত্বেও সভ্যতাটি সিন্ধু অববাহিকা ওই দুটো শহরের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল না। পাকিস্তানের পাঞ্জাব, সিন্ধু প্রদেশ, ভারতের পাঞ্জাব, রাজস্থান, গুজরাটের বিভিন্ন স্থানে এ সভ্যতার নিদর্শন পাওয়া গেছে। ঐতিহাসিক মনে করেন পাঞ্জাব থেকে আরব সাগর পর্যন্ত বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে সিন্ধু সভ্যতা গড়ে উঠেছিল।
অর্থনৈতিক অবস্থা –
সিন্ধু সভ্যতার অর্থনীতি ছিল মূলত কৃষিনির্ভর। তাছাড়া অর্থনীতির আরো একটি বড় দিক ছিল পশুপালন। কৃষি ও পশুপালন এর পাশাপাশি মৃৎপাত্র নির্মাণ, বয়ন শিল্প, অলংকার নির্মাণ, পাথরের কাজের ইত্যাদিতে তারা যথেষ্ট উন্নতি লাভ করেছিল। এই উন্নতমানের শিল্প পণ্য বিক্রয়ের উদ্দেশ্যে সেখানকার বণিকরা বিদেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ রক্ষা করে চলত। বণিকদের সাথে আফগানিস্তান, বেলুচিস্তান মধ্য এশিয়া পারস্য, মেসোপটেমিয়া দক্ষিণ ভারত, গুজরাটি দেশের সঙ্গে বাণিজ্যিক যোগাযোগ ছিল।
সামাজিক অবস্থা- সিন্ধু সভ্যতার যুগে মানুষ সমাজবদ্ধ পরিবেশে বসবাস করত। সেখানে একক পরিবার পদ্ধতি চালু ছিল। সিন্ধু সভ্যতার যুগে সমাজে শ্রেণীবিভাগ ছিল । সব মানুষ সুযোগ সুবিধা পেত না। সমাজ ধনী ও দরিদ্র দুই শ্রেণীতে বিভক্ত ছিল। কৃষকরা গ্রামে বসবাস করত। শহরে ধনী এবং শ্রমিকদের জন্য আলাদা আলাদা স্থানে নিদর্শন পাওয়া গেছে। পোশাক-পরিচ্ছেদ এর জন্য তারা মূলত পশমের কাপড় ব্যবহার করত। সিন্ধু সভ্যতার সমাজ ব্যবস্থা ছিল মাতৃতান্ত্রিক।
সিন্ধু সভ্যতার( মহেঞ্জোদারো হরপ্পা) নগরের সাথে আমার এলাকার নগর পরিকল্পনা সাদৃশ্য নিম্নে দেওয়া হল –
১/রাস্তাঘাট -প্রাচীন সভ্যতা সিন্ধু সভ্যতার নগর রাস্তাঘাট ছিল পাকা। এছাড়াও এই সভ্যতায় ড্রেনেজ ব্যবস্থা ছিল। প্রত্যেক বাড়ি থেকে ছোট ছোট ময়লা-আবর্জনার ড্রেনগুলো বড় একটি বড় ড্রেন এ এসে মিলিত।
২/ গোসলখানা- মহেঞ্জোদারো নগরে আবিষ্কার হয়েছে এই বিশাল গোসলখানা অনেকটা এখনকার সুইমিং পুলের মতো।
৩/শস্যাগার – হরপ্পাতে পাওয়া গেছে শস্য জমা রাখার জন্য বিশাল শস্যাগার।
সিন্ধু সভ্যতার( মহেঞ্জোদারো হরপ্পা) নগরের সাথে আমার এলাকার নগর পরিকল্পনার বৈসাদৃশ্য নিম্নে দেওয়া হল-
১/ সিন্ধু সভ্যতা বাড়িঘর গড়ে উঠেছিল রোদে পোড়ানো ইট দিয়ে। এছাড়া বাড়িগুলো ছিল একতলা দোতলা।
আমার এলাকায় প্রায় সমস্ত বাড়ি ইট দিয়ে তৈরি।
২/ ঘরবাড়ি নির্মাণের স্থান-
সিন্ধু সভ্যতায় প্রায় সমস্ত বাড়িগুলো নির্মিত ছিল উঁচু ঢিবি এর উপর।
আমাদের এলাকায় তেমন ঘরবাড়ি দেখা যায়না।
ভুল-ত্রুটি থাকলে ক্ষমা দৃষ্টিতে দেখবেন।
ধন্যবাদ।