কর্মক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক কর্মকাণ্ড সম্পাদন করতে বিভিন্ন ধরনের সফটওয়্যার এবং ইলেকট্রনিক যন্ত্রের ব্যবহার হয়ে থেকে। এসব আধুনিক প্রযুক্তিগুলোর যেমন আছে ভালো দিক পাশাপাশি রয়েছে খারাপ দিক। কেননা এসব বিষয়ের সাথে হ্যাক বিষয়টি জড়িত। প্রায় যেকোনো ধরনের বৈদ্যুতিক যন্ত্র হ্যাক এর শিকার হতে পারে। বিশেষ করে ইলেকট্রনিক যন্ত্রে ব্যবহৃত সফটওয়্যার গুলো। McAfee Labs Threats Report অনুযায়ী প্রতিদিন বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০ হাজার ওয়েবসাইট এবং সফটওয়্যার হ্যাকিং এর শিকার হয়। একটা সময় ছিল যখন Google, Amazon এর মত বড় বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো হ্যাকিং এর মত সমস্যায় পড়তো।
তবে এসব প্রতিষ্ঠান প্রতি বছর তাদের ওয়েবসাইটের নিরাপত্তার রক্ষার্থে বিপুল পরিমাণে অর্থ ব্যয় করছে। বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ছোট বড় কোম্পানি তাদের ব্যবসায় পরিচালনার ক্ষেত্রে একটি ওয়েবসাইট তৈরি করে থাকছে। একটি ওয়েবসাইট যেখানে তৈরি হচ্ছে সেখানে সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টা খেয়াল রাখা সকল ওয়েবসাইট মালিকদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এমনটা নয় যে এই আর্টিকেলটা পড়ে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সক্ষম হবে। তবে এই আর্টিকেলে বলা বিষয়গুলো সম্পর্কে খেয়াল রাখলে আপনিও আপনার নিজস্ব ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন।
হ্যাকারদের প্রচলিত ফাঁদসমূহঃ
১. যদিও হ্যাকিং এর সকল ধরনের ফাঁদ বুঝে উঠা ততটা সহজ নয় কেননা প্রতিনিয়ত সাইবার অপরাধীরা বিভিন্ন উপায় বের করে যাচ্ছে হ্যাকিং কার্যক্রম চালনার ক্ষেত্রে। তবে বিশ্বব্যাপী সাইবার নিরাপত্তা গবেষণাকারীদের মতে হ্যাকাররা বেশিরভাগ ফিশিং পদ্ধতিতে তাদের হ্যাকিং কার্যক্রম পরিচালনা করে থেকে। এই পদ্ধতিতে তারা বিভিন্ন ইমেইল, ফোন নম্বর এর মাধ্যমে লোভনীয় সব অফার দিয়ে থাকে। এসব অফার এর সাথে তারা মূলত একটি ফিশিং লিংক জুড়ে দিয়ে থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অফারগুলো লোভনীয় থাকতে যারা ততটা অভিজ্ঞ নন তারা সেই হ্যাকার এর ফাঁদে পা দিয়ে বসে।
২. হ্যাকাররা হ্যাকিং এর উদ্দেশে বিভিন্ন স্পামিং ওয়েবসাইট দ্বারা প্রিমিয়াম সফটওয়্যার ফ্রী ডাউনলোড বা ব্যবহার সম্পর্কিত অফার প্রদান করে থাকে। এক্ষেত্রে কেও তার ইলেকট্রনিক ডিভাইসে সেসব সফটওয়্যার ডাউনলোড করলে হ্যাকাররা কৌশলে সকল তথ্য এবং সেটা ছিনিয়ে নেয়। এছাড়াও তারা থার্ড বিভিন্ন সফটওয়্যার নানান প্লাটফর্ম দ্বারা কম দামে অফার করে থাকে। এছাড়াও আরো বিভিন্ন ফাঁদ প্রতিনিয়ত হ্যাকাররা তৈরি করে থাকছে।
হ্যাকারদের হাত থেকে ওয়েবসাইট সুরক্ষিত রাখতে করণীয়ঃ
১. সাইবার জগতের এসব কর্মকাণ্ড থেকে নিজের ওয়েবসাইট সুরক্ষিত রাখতে সচেতনতা বড় ধরনের ভূমিকা পালন করে। যেমন; ইমেইল,মোবাইল নম্বর কিংবা অন্যান্য প্লাটফর্ম দ্বারা আসা নানান লোভনীয় অফার এর ফাঁদে পা না দেওয়া। অর্থাৎ লোভনীয় বা সন্দেহজনক কোনো লিংক ক্লিক করা থেকে বিরত থাকতে হবে।
২. বিভিন্ন থার্ড পার্টি স্পামিং এবং অবিশ্বস্ত ওয়েবসাইট গুলো থেকে প্রিমিয়াম সফটওয়্যার ডাউনলোড করা থেকে বিরত থাকতে হবে। অনলাইনে হ্যাকারদের অনেক স্টোর থাকে যেখানে তারা ফাঁদ পেতে রয়েছে। আসল ওয়েবসাইট যাচাই করে সফটওয়্যার করতে হবে।
৩. ইকমার্স ব্যবসার ক্ষেত্রে সবসময় আসল সফটওয়্যার ব্যবহার করুন। ওয়েবসাইট পরিচালনার ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সেটাপ ওয়েবসাইটে করে নিতে হবে, পাশাপাশি প্রতিনিয়ত ওয়েবসাইটের বেকআপ নিয়ে রাখতে হবে।
সর্বশেষ পরামর্শ
পরিশেষে বলব, প্রতিনিয়ত হ্যাকাররা নতুন নতুন কৌশল তৈরিতে সক্রিয় আছে। একারণে বলা যাচ্ছে আপনাকে সক্রিয় থাকতে হবে যেনো তাদের ফাঁদ আপনি সহজে বুঝতে সক্ষম হোন। আর তাহলে আপনি আপনার ওয়েবসাইটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেন। ভালো থাকবেন সবাই, আর্টিকেলটা মূলত এই পর্যন্তই, আল্লাহ হাফেজ।