আসসালামু আলাইকুম পাঠকবৃন্দ,
আশাকরি সকলে ভালো আছেন।
আজকে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে পোষ্ট লিখতে বসলাম।
তা হলো কম্পিউটার প্রযুক্তি ও তার ব্যবহারের কারণে সৃষ্ট সকল স্বাস্থ্য সমস্যা ।
বর্তমানে কম্পিউটার এবং ইন্টারনেট প্রযুক্তি ছাড়া জীবন প্রায় অচল।
এসব ছাড়া যেন আমরা চলতে পারি না।
কিন্তু মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে এর কিছু অপকারিতা আমাদের ওপর প্রভাব ফেলে।
এই অপকারিতা গুলোর মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকিই বেশী।
তথ্যপ্রযুক্তির অনিয়ন্ত্রিত ব্যাপক ব্যবহারের ফলে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
যারা রোজই মাত্রাতিরিক্ত সময় ধরে কম্পিউটারের কোন গেম খেলে, তারা হাতের আঙ্গুলের মাথায় সুই ফোটানো মাথা ব্যথা অনুভব করা এমনকি আঙ্গুলের মাথায় ফোসকা পড়া ,আঙ্গুল ফুলে যাওয়ার মত স্বাস্থ্য সমস্যায় পড়ে যাওয়ার উদাহরণও আছে।
যারা অধিক্ষণ ধরে কম্পিউটারে নিয়ে কাজ করে, মাউসের দীর্ঘক্ষণ ও দীর্ঘদিন ব্যবহারের ফলে তাদের হাতের রগ, স্নায়ু ,কব্জি, বাহুতে, কাঁধ ও ঘাড়ে অতিরিক্ত টান ও চাপ পড়ে।
কাজেই কাজের ফাঁকে যথেষ্ট বিশ্রাম না নিলে এসব অঙ্গ ব্যথাসহ নানা রকম সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে।
কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম না নিয়ে দীর্ঘদিন ও দীর্ঘক্ষণ কম্পিউটারে কাজ করলে চোখে নানারকম সমস্যা সৃষ্টি হয় ,একে বলা হয় কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম।
এই সিনড্রোম এর মধ্যে রয়েছে চোখ জ্বালাপোড়া করা, চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া, চোখ চুলকানো, চোখ লাল হয়ে যাওয়া এবং চোখের পানি শুকিয়ে যাওয়া।
প্রতিকারের উপায়:
কম্পিউটার ব্যবহার থেকে সৃষ্ট স্বাস্থ্য সমস্যার চিকিৎসার চাইতে এই সমস্যা সৃষ্টি হতে না দেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ।
এজন্য যা করতে হবে তা হল::
১. কম্পিউটারের কাজ করার সময় সঠিকভাবে বসতে হবে এবং সোজা সামনে তাকাতে হবে।
২. সঠিক পদ্ধতিতে টাইপ করতে হবে।টাইপ করার সময় হাত যেন কোনো কিছুর ওপর রাখা না থাকে এবং হাত ও আঙ্গুল যেনো সোজা থাকে ।
৩. কাজের ফাঁকে ফাঁকে অন্তত আধাঘন্টা পর পর ৫ মিনিটের জন্য হলেও বিশ্রাম নিতে হবে এবং কাঁধ ও ঘাড় কে রিল্যাক্স করতে দিতে হবে।
কম্পিউটার ভিশন সিনড্রোম এর কারণে সৃষ্ট চোখের সমস্যা প্রতিরোধে যেসব সর্তকতা অবলম্বন করবে তা হল:
১. আপনার কম্পিউটারে পর্দাটি যেন অবশ্যই আপনার চোখ থেকে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার দূরে থাকে।
২. কোন ডকুমেন্ট হোল্ডার ব্যাবহার করলে তা অবশ্যই পর্দার কাছাকাছি রাখবেন।
৩. মাথার উপরকার বাতির আলো এবং টেবিলের বাতির আলো এমন ভাবে কমিয়ে দিতে হবে তারা যেন আপনার চোখে বা কম্পিউটারের পর্দায় না পড়ে।
৪. প্রতি ১০ মিনিট পর পর কিছুক্ষণের জন্য দূরের কোনো কিছুর দিকে তাকাবেন, এতে চোখ আরাম বোধ করবে।
এই সহজ কিছু নিয়ম মেনে চললেই কম্পিউটার ব্যবহারের কারণে শারীরিক সমস্যাগুলোকে এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে।
মানসিক সমস্যা:
কম্পিউটার ব্যবহারে যেসব শারীরিক সমস্যা হতে পারে ,তার চাইতে অনেক গুরুতর সমস্যা হচ্ছে মানসিক সমস্যা। ইন্টারনেট সহজলভ্য হওয়ার কারণে প্রায় সবাই এটি ব্যবহার করছে।
ইন্টারনেটে একদিকে যেমন তথ্য ও জ্ঞানের ভান্ডার উম্মুক্ত করে রাখা আছে, ঠিক সেরকম সামাজিক নেটওয়ার্ক জাতীয় সার্ভিসের মাধ্যমে অসচেতন ব্যবহারকারীদের মোহগ্রস্ত করে রাখার ব্যবস্থাও করে রাখা আছে। মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণা করে দেখাতে শুরু করেছেন যে, মানুষ যেভাবে মাদকে আসক্ত হয়ে যায় সেভাবে অতিরিক্ত কম্পিউটার ব্যবহার, ইন্টারনেট বা সামাজিক নেটওয়ার্কে আসক্ত হয়ে যেতে পারে ।
অতিরিক্ত কম্পিউটার গেম খেলে মৃত্যুবরণ করেছে এরকম উদাহরণ আছে।
কাজেই সব সময় মনে রাখতে হবে , আধুনিক প্রযুক্তি মাত্রই ভালো নয় , পৃথিবীতে যেমন অনেক অপ্রয়োজনীয় এবং ক্ষতিকর প্রযুক্তি আছে, ঠিক সেরকম ভালো প্রযুক্তির অপব্যবহারের কারণে সেটি আমাদের জীবনে অভিশাপ হয়ে দেখা দিতে পারে।
আশা করি পোস্টটি সকলের ভাল লেগেছে।
ভালো লাগলে অবশ্যই কমেন্ট করে জানাবেন।
ভাল থাকবেন ,সুস্থ থাকবেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলবেন।
আল্লাহ হাফেজ।।