Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

করোনার এই প্রকোপে অফিসের কাজ কিভাবে বাড়িতে করতে পারেন তার উপায়

বিশ্বজুড়ে করােনাভাইরাসের ভয়ে অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠান কর্মীদের অফিসে আসতে নিষেধ করছে। এর বদলে তাঁদের বাড়িতে বসেই দূর থেকে অফিসের কাজ করার কথা বলছে তারা। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে-বাড়িতে বসে কর্মীরা কাজ করলে কি উৎপাদনশীলতা কমে যাবে? বিসিসি অনলাইনের এক প্রতিবেদনে সে প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে।

গুগল, মাইক্রোসফট, টুইটার, হিটাচি, অ্যাপল, আমাজন, শেভরন, সেলসফোর্স, স্পটিফাইয়ের মতাে কোম্পানি কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে। যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুক্তরাজ্য, জাপান থেকে দক্ষিণ কোরিয়ার অনেক বড় বড় প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা গত কয়েকদিন ধরেই। বাড়িতে বসে কাজ করছেন। কর্মীদের আমাদের দেশের টেলিকম প্রতিষ্ঠানগুলােও ইতিমধ্যে এ পথে হেঁটেছে। এর বাইরেও বেশ কয়েকটি ছােট বড় প্রতিষ্ঠান কর্মীদের বাড়ি থেকে কাজ করতে বলেছে।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) গত বুধবার। করােনাভাইরাসকে আনুষ্ঠানিকভাবে মহামারি বলায় বাড়ি বসে অফিস’ ধারণাটি অনেকের জন্য স্বাভাবিক নতুন ধারণা হয়ে দাঁড়াবে। অনেকেই প্রথমবারের মতাে এ ধরনের অভিজ্ঞতার মুখে পড়বেন। বাড়িতে বসে কাজ করে কীভাবে উৎপাদনশীলতা ধরে রাখার বিষয়টি তাই খেয়াল রাখা জরুরি। এ কাজের জন্য বাড়িতেই তৈরি করতে হবে কাজের উপযুক্ত পরিবেশ এবং মানতে হবে দূরে বসেই দলগতভাবে কাজ করার সব নিয়মকানুন। দেখে নিন কীভাবে এসব কাজ করতে পারেন:দক্ষ হােন যােগাযোগে: বাড়িতে বসে কাজ করা মানেই যা খুশি তা করা নয়। করােনাভাইরাসের কারণে হােক বা অন্য কারণেই হােক, বাড়ি থেকে কাজের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলাে পরিষ্কার যােগযােগ। আপনার ব্যবস্থাপক যেমন অফিসে সব সময় আপনার সঙ্গে যােগাযােগ রাখতে পারে, বাড়ি বসে কাজের ক্ষেত্রেও তাই হওয়া উচিত। তিনি আপনার কাছ থেকে কি আশা করছেন, তা জানা সবচেয়ে জরুরি। বােস্টনের নর্থইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির ব্যবস্থাপনা বিষয়ের অধ্যাপক বারবারা লারসন বলেন, ‘প্রতিদিন যােগাযােগের জন্য নির্ধারিত প্রত্যাশা রাখুন। প্রতিদিন কাজ শুরুর আগে ও শেষে আপনার ব্যবস্থাপকের সঙ্গে ১০ মিনিট কথা বললে তিনি কিছু মনে করবেন কিনা তা জেনে রাখুন। অনেক সময় ব্যবস্থাপকেরাও এটা ভাবেন না।

একাকিত্ব দূর করুন: অনেক সময় দূরে বসে। কাজ করতে থাকে যােগযােগের ঘাটতিটাই বড় হয়ে দেখা যায়। অনেক ব্যবস্থাপক আছেন, যাঁরা ভার্চুয়াল দুনিয়ায় কীভাবে কর্মীকে ব্যবস্থাপনা করা যায়, সে বিষয়ে অভিজ্ঞ নন। অনেক সময় প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রেও কর্মীকে দূরে থেকে। ব্যবস্থাপনা করার টুল যেমন ব্ল্যাক বা ভিডিও কনফারেন্স অ্যাপ জুম থাকে না। এ ছাড়া যে কর্মী বাড়িতে বসে কাজ করবেন, নিজেকে তাঁর অগােছালাে ও একা মনে হতে পারে। গত বছর অনলাইন ব্র্যান্ড ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি বাফার ২ হাজার ৫০০ জনকে নিয়ে একটি গবেষণা চালায়। তাতে দেখা যায়, বাড়িতে বসে কাজের দ্বিতীয় বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে-একাকিত্ব। কর্মী একাকী বােধ করলে তখন তার উৎসাহ কমে যায় এবং উৎপাদনশীলতা কমে।

চোখের আড়াল মানেই মনের আড়াল নয়:

যাঁরা দূরে বসে কাজ করেন তাঁদের জন্য আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে চোখের আড়ালে চলে যাওয়া। লারসন বলেন, বাড়িতে বসে যখন বস বা সহকর্মীদের সঙ্গে যােগাযােগ করবেন, তা যেন মুখােমুখি যােগাযােগের মতােই সমৃদ্ধ হয়। এদিকে বিশেষ খেয়াল রাখতে হবে। এ ক্ষেত্রে ভিডিও কল, স্কাইপ, জুমের মতাে টুলগুলাে কাজে লাগে। দূর নিয়ন্ত্রিত কাজের সাইট ফ্লেক্সজবের প্রধান নির্বাহী সারা সাটন বলেন, চোখের আড়াল হলে মনের আড়াল হয়ে যেতে পারে। দূরে বসে কাজের দক্ষ কর্মীরা সহকর্মী ও ব্যবস্থাপকের সঙ্গে নিয়মিত যােগাযােগ রাখেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরা নানারকম টুল ব্যবহার করেন।

ভাবনায় পরিবর্তন আনুন: অনেকে বাড়িতে কাজের সুযােগকে যা খুশি তাই ভেবে বসতে পারেন। কিন্তু আসলে তা করা উচিত নয়। অফিসে যাওয়ার জন্য যেমন প্রস্তুতি লাগে,

তেমনি বাড়ি বসে কাজের জন্য একই রকম প্রস্তুত থাকতে হবে। সকালে গােসল করে ঠিকঠাক মতাে পােশাক পরে কাজ শুরু করতে হবে। একে অফিসের কাজের মতােই ভাবতে হবে। যাদের বাড়িতে অফিসের মতাে সেটআপ

নেই তাঁদের অফিসের মতাে করে নিজেদের গুছিয়ে নিতে হবে, কাজের জায়গা বের করে নিতে হবে। সাটন বলেন, ঠিকমতাে গােছানাে কাজের পরিবেশ না পেলে দূরে বসে কাজের ক্ষেত্রে উৎপাদনশীলতা কিছুটা কমতে পারে। তবে দুটি মনিটর, ওয়্যারলেস কিবাের্ড ও মাউসের মতাে সাধারণ বিষয়গুলােও উৎপাদনশীলতা বাড়াতে পারে।

শুয়ে শুয়ে কাজ নয়: অনেকেই বাড়িতে কাজের সুযােগ পেলে ল্যাপটপ নিয়ে বিছানায় শুয়ে পড়েন। অফিসের কাজের ক্ষেত্রে এ নিয়ম অনুসরণ না করাই ভালাে। কাজে ব্যাঘাত ঘটতে পারে এমন কিছু থেকে দূরে গিয়ে অফিসের। মতাে চেয়ার টেবিলে কাজ শুরু করেন। অফিসের ডেস্কে যেভাবে নিজেকে কাজের সঙ্গে যুক্ত রাখেন সেভাবেই বাড়ি থেকে কাজের বেলায় চিন্তা করুন।

পরিবারের সদস্যদের সীমানা নির্ধারণ করুন:

যেসব পরিবারে সন্তান আছে, তাদের জন্য বাড়িতে বসে কাজ করাটা কঠিন। কারণ এখন স্কুল বন্ধ। তবে ব্যবস্থাপকের সঙ্গে যােগাযােগ ঠিক রেখে কাজের জন্য নিজেকে নিয়ােজিত করলে সব সমস্যা দূর করা যায়। জর্জিয়া | বিশ্ববিদ্যালয়ের সাইকোলজি বিভাগের সহযােগী
অধ্যাপক ক্রিস্টেন শকলি বলেন, আপনার বাড়ির মধ্যে এমন সীমানা তৈরি করুন যা আপনার পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারে। যখন দরজা বন্ধ করে দেবেন মনে করুন, আপনি সেখানে নেই। অফিসে বসেই কাজ করছেন। যদি নির্দিষ্ট কাজের জায়গা থাকে, তবে বাড়িতে বসে কাজের ক্ষেত্রে সুবিধাগুলাে কাজে লাগানাে যায়। গত বছর ৭ হাজার কর্মীকে নিয়ে ফ্লেক্সজবের করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাড়িতে বসে কাজের ক্ষেত্রে ৬৫ শতাংশ আরও বেশি উৎপাদনশীল হয়েছেন। এ জন্য সহকর্মীদের নানা ঝামেলা, অফিসের রাজনীতি ও যাতায়াতের ধকল না থাকায় এ সুবিধা প্রতিষ্ঠানকে দিতে পেরেছেন কর্মীরা।

ব্যায়াম ও কফি ব্রেক নিন:বাড়িতে বসে কাজের ক্ষেত্রেও ২০ মিনিটের জন্য সকালে কফি খাওয়ার জন্য বা বিকেলে কিছুক্ষণ ব্যায়ামের জন্য কাজের বাইরে থাকতে পারেন।যদি যাতায়াতের ঝামেলা কমে যায় তবে কাজের জন্য একটি সীমারেখা তৈরি করতে পারবেন সহজেই। এর বাইরে নিজের জন্য বাড়তি কিছু সময় পাবেন। মনের মধ্যে সত্যিকারের কাজের একটি চিত্র ধরতে পারলে দূরে বসে কাজের সুবিধা পাওয়া যাবে।

পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিন:

করােনাভাইরাসের কারণে কর্মীকে কতক্ষণ বাড়িতে থাকতে হবে, তা পরিষ্কার নয় বলে বাড়তি সমস্যা সৃষ্টি করছে। অফিসের পরিবেশ থেকে হঠাৎ ভিন্ন পরিবেশে কাজ শুরু করার পর পরিবর্তনটা সহজে মেনে নেওয়া কঠিন হয়। স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতির অধ্যাপক নিকোলাস ব্লুম বলেন, করােনাভাইরাস সবাইকে বাড়ি থেকে এই ধরনের চরম কাজ করার দিকে ঠেলে দিচ্ছে। বাড়ি থেকে মূলত দুই ধরনের কাজ হয়। সংক্ষিপ্ত মেয়াদের কিছু কাজ ও স্থায়ী বা পূর্ণকালীন কাজ। এটি ম্যারাথন প্রশিক্ষণের সঙ্গে হালকা ব্যায়ামের তুলনা করার মতাে। স্থায়ী বা পূর্ণকালীন কাজ এ ক্ষেত্রে খুবই কম হয়। যুক্তরাষ্ট্রে মাত্র ৫ শতাংশ কর্মী বাড়িতে বসে পূর্ণকালীন কাজ করেন।

Related Posts

14 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No