একটি ওয়েবসাইট তৈরি করার পরেই আমাদের দরকার হয় সেই সাইটে ভিজিটর পাঠানোর। ভিজিটর নিয়ে আসতে আমাদের বিভিন্ন ধরনের কৌশল অবলম্বন করতে হয়। ওয়েবাসাইট থেকে ইনকাম জেনারেট করতে ট্রাফিকের প্রয়োজন অবশ্যম্ভাবী। কারণ ওয়েবসাইটে ভিজিটর বা ট্রাফিক না থাকলে ইনকাম করা সম্ভব নয়৷ তাই, একটি ওয়েবসাইটে ভিজিটর আনতে এসইও একটি গুরুত্বপূর্ণ ও সর্বোত্তম উপায়৷
এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন ওয়েবসাইটের জন্য একটি অতি জরুরী উপাদান। সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন বলতে আমরা কি বুঝি? একটি ওয়েবসাইট তৈরি করা হলে তার একটি ডোমেইন তৈরি হয়ে যায়। এখন একজন ভিজিটর কি কষ্ট করে সেই ডোমেইন লিখে আপনার ওয়েবসাইটটি সার্চ করবে? সেই সম্ভাবনা খুবই কম। এখন মানুষ কোনো কিছু জানতে চাইলে বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে, যেখানে অগণিত ওয়েবসাইট বিদ্যমান থাকে। আবার একজন ভিজিটর প্রথম দিকের ওয়েবসাইট গুল ব্রাউজ করতে পছন্দ করে অর্থাৎ নিচের দিকের ওয়েবসাইটে খুবই কম প্রবেশ করে। তাই ওয়েবসাইটে ট্রাফিক আনতে হলে এসইও করার বিকল্প নেই।
তাই ভালোভাবে এসইও করতে পারলে সয়ংক্রিয়ভাবে আপনার ওয়েবসাইট সার্চ রেজাল্টের উপরের দিকে চলে আসবে। এসইও এর প্রকারভেদ আছে। সাধারণত এসইও দুই প্রকার হয়ে থাকেঃ- ১. অন পেজ এসইও ২. অফ পেজ এসইও অন পেজ এসইও এর মধ্যে যেসকল বিষয় রয়েছে তারমধ্যে আর্টিকেল একটি। আজকে আমরা জানবো, কিভাবে ওয়েবসাইটে একটি এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখা যায়।
অন পেজ এসইও কি?
অন পেজ এসইও বলতে একটি ওয়েবসাইটের পেজে যেসব এসইও করা হয় তাকে বুঝায়। অন পেজ এসইও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত আছে টাইটেল, হেডার, কিওয়ার্ড ইত্যাদি। ওয়েবসাইট র্যাংক করানোর ক্ষেত্রে অন পেজ এসইও সবচেয়ে জরুরি। আর কিভাবে ভালো মানের এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখে দ্রুত ওয়েবসাইট র্যাংক করানো যায় সেই বিষয়ে আমরা এখন জানবো।
আর্টিকেলের গুরুত্ব
আর্টিকেলকে ওওয়েবসাইটের রাজা বলা হয়। আপনি যতো ভালো মানের আর্টিকেল লিখবেন, আপনার ওয়েবসাইটে ভিজিটর আসার সম্ভাবনা ততো বেশি। বিশেষকরে অর্গানিক ট্রাফিক পাওয়ার জন্য মানসম্মত আর্টিকেল লেখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অর্গানিক ভিজিটর বলতে কি বুঝায়? যেসব ভিজিটর নিয়মিত ভিজিট করে তাদেরকেই অর্গানিক ভিজিটর বলে।
তাই অর্গানিক ভিজিটর পেতে হলে যেভাবে আর্টিকেল লিখতে হবে তা হলো, আপনার লেখা থেকে ভিজিটররা যেনো উপকার পায়, কিছু জানতে পারে। মানসম্মত আর্টিকেল দিয়ে খুব সহজেই অর্গানিক ভিজিটর পাওয়া সম্ভব। কিন্তু আর্টিকেল এমনভাবে লিখতে হবে যাতে ভিজিটররা আপনার লেখার প্রতি আকৃষ্ট হয়।
কিভাবে এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখবেন?
ওয়েবসাইটের এসইও যেহেতু অনেকাংশেই নির্ভর করে আর্টিকেলের উপর। তাই কোয়ালিটিফুল আর্টিকেল লেখা জরুরি। এখন বিষয় হচ্ছে কিভাবে আর্টিকেল লিখলে ভিজিটররা তাতে আকৃষ্ট হবে। একটি নির্দিষ্ট বিষয়ের উপর আপনার আর্টিকেল লিখতে হবে।
আপনি যদি শুধুমাত্র ইনকাম করার মানসিকতা নিয়ে আর্টিকেল লেখা শুরু করেন তাহলে ভালো ও মানসম্মত আর্টিকেল লিখতে পারবেননা। ভিজিটর যাতে উপকৃত হয় সেই উদ্দেশ্য নিয়ে আর্টিকেল লিখতে হবে। আপনার আর্টিকেলের বিশেষ গুরুত্ব থাকতে হবে অর্থাৎ অন্যের লেখা আর্টিকেলের চেয়ে ভিন্ন কিছু পাঠকের কাছে তুলে ধরতে হবে। অবশ্যই শিক্ষামূলক আর্টিকেল লিখতে হিতে হবে। সার্চ ইঞ্জিন গুলো সবসময় আর্টিকেলের মধ্যে নতুন কিছু খোজে এবং ওয়েবসাইট র্যাংক করিয়ে থাকে।
তাই ওয়েবসাইটে নতুন কিছু থাকতে হবে৷ একটি এসইও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখতে নিচের নিয়মগুলো অনুসরণ করতে পারেন।
১. কিওয়ার্ড রিসার্চ
আমরা কোনো তথ্য জানতে একটি ওয়েবসাইটে বা সার্চ ইঞ্জিনে একটি শব্দ বা একাধিক শব্দ লিখে সার্চ দেই। আমাদের সার্চ করা সেই একটি বা একাধিক শব্দই হচ্ছে কিওয়ার্ড। এসইও এর ক্ষেত্রে কিওয়ার্ড একটি জরুরি বিষয়। কোটি কোটি ওয়েবসাইট বর্তমানে গুগল সহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে বিদ্যমান আছে।
সময়ের পরিবর্তনের সাথে সাথে মানুষের চাহিদার পরিবর্তন হয়। তাই সঠিক কিওয়ার্ড বাছাই করতে হবে। কেমন কিওয়ার্ড বাছাই করবেন? প্রথমেই এমন কিওয়ার্ড বাছাই করতে হবে যেটি কম ব্যাবহার করা হয়েছে। পরবর্তীতে খেয়াল করতে হবে সেই কিওয়ার্ড জনপ্রিয় কিনা অথবা ভবিষ্যতে জনপ্রিয় হবে কিনা। দক্ষতার সাথে কিওয়ার্ড বাছাই করতে পারলে দ্রুতই আপনার ওয়েবসাইট সার্চ ইঞ্জিনের প্রথম পেজে চলে আসবে।
কিওয়ার্ড রিসার্স করার জন্য অনেক টুল রয়েছে। তবে ভালোমানের কিওয়ার্ড বাছাই করতে পেইড টুল ব্যাবহার করা উত্তম।
২. টাইটেল
একটি আর্টিকেলের পরিচয় বহন করে একটি ভালো ও আকর্ষণীয় টাইটেল। আপনি যে বিষয়ে আর্টিকেল লিখছেন সেই বিষয়ের উপর সুন্দর করে একটি টাইটেল লিখতে হবে। একটি কথা মনে রাখবেন। অগোছালো এবং অসামঞ্জস্যপূর্ণ টাইটেল লিখলে আপনার আর্টিকেল সহজে র্যাংক হবেনা এবং পাঠকগণ পড়তে বিরক্তবোধ করবেন।
অর্গানিক ভিজিটর আপনার ওয়েবসাইটের জন্য অনেক বেশি জরুরি। একটি মানসম্মত আর্টিকেল কিভাবে লিখা যায়? আগে খেয়াল করুন আপনি কোন বিষয়ের উপর আর্টিকেল লিখছেন। তারপরে আপনার আর্টিকেলের উপর ভিত্তি করে একটি সুন্দর আর্টিকেল টাইটেল দিন। সতর্ক থাকবেন, আপনি টাইটেলে যা ব্যাবহার করবেন তা যেনো আপনার আর্টিকেলে থাকে।
৩. কিওয়ার্ড যুক্ত করা
আর্টিকেলের মধ্যে কিওয়ার্ড যুক্ত করতে হবে৷ আপনি কি বিষয়ে আর্টিকেল লিখছেন এবং সেটির প্রধান কিওয়ার্ড কি সেটা আগে দেখুন। এরপর আপনার লেখা আর্টিকেলের মধ্যে সেই কিওয়ার্ড গুলো যুক্ত করুন। আর্টিকেলের মধ্যে কিওয়ার্ড গুলো বোল্ড করে দিতে পারেন। এতে এসইও খুব ভালো কাজ করে।
তারপর আরও কিছু কিওয়ার্ড বাছুন যেগুলো আপনার আর্টিকেল রিলেটেড হবে। আরও একটি বিষয় খেয়াল রাখুন, সেটি হচ্ছে কিওয়ার্ড ডেনসিটি। আর্টিকেলের প্রতি ১০০ ওয়ার্ডে প্রধান কিওয়ার্ড ৫ বার ব্যাবহার করতে পারেন।
৪. টেবিল অব কন্টেন্ট
টেবিল অব কন্টেন্ট হচ্ছে আর্টিকেলের বিষয়বস্তু গুলোর হেডলাইন। এগুলো আর্টিকেলের সূচিপত্র হিসেবে কাজ করে সেই সাথে পাঠকগণ খুব সহজেই আর্টিকেল সম্পর্কে ধারণা লাভ করতে পারে। অর্থাৎ আপনি কোন বিষয়গুলো নিয়ে আর্টিকেল লিখবেন তার একটি তালিকা হচ্ছে টেবিল অব কন্টেন্ট। বড় আর্টিকেলের জন্য টেবিল অব কন্টেন্ট ব্যাবহার করা অতি জরুরী।
ধরুন আপনি বড় একটি আর্টিকেল লিখেছেন, কিন্তু একজন পাঠকের নির্দিষ্ট কিছু তথ্য প্রয়োজন। যদি আপনার আর্টিকেলে টেবিল অব কন্টেন্ট দেয়া থাকে তাহলে একজন পাঠক খুব সহজেই আপনার আর্টিকেল থেকে কাংখিত তথ্য খুজে পাবে এবং সময়ের অপচয় রোধ হবে। সার্চ ইঞ্জিন গুলোও টেবিল অব কন্টেন্ট পছন্দ করে এবং দ্রুত আর্টিকেল র্যাংক করে। তাই টেবিল অব কন্টেন্ট ব্যাবহার করা গুরুত্বপূর্ণ।
৫. রিলেটেড আর্টিকেল
মনে করুন আপনি কোন একটি বিষয়ে আর্টিকেল লিখেছেন এবং সেই আর্টিকেলের কিছু অংশ আলোচনা ইতোমধ্যে রয়েছে। আপনি সেই আর্টিকেলের লিংক আপনার নতুন আর্টিকেলের মধ্যে দিয়ে দিতে পারেন। এর ফলে ভিজিটর খুশি হয় এবং অর্গানিক ভিজিটর বেড়ে যায়। এছাড়া আপনার অন্য আর্টিকেল গুলো ভিজিটরের কাছে প্রমোট করা হয়ে যায়। সার্চ ইঞ্জিন গুলো রিলেটেড আর্টিকেল লিংক করাকে পছন্দ করে। এসইও এর ক্ষেত্রেও এটি বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করে।