গাণিতিক চিহ্ন, সংখ্যা বা অক্ষরকে চিহ্নের বিশেষ সমষ্ঠির সাহায্যে প্রকাশ করা হলে সেই চিহ্ন সমষ্টিকে কোড (code) বলা হয় । আমরা জানি, বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি 0 এবং 1 অংক দুটি দ্বারা গঠিত । অংক সমষ্ঠি দ্বারা কোন সংখ্যা কিংবা বিদ্যুতের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি নির্ণয় করা যায় । এ কারণে কম্পিউটারে অভ্যন্তরীণ প্রক্রিয়াকরণের জনয় অক্ষর, চিহ্ন বা সংখ্যাকে বিভিন্ন প্রকার সংকেতে রুপান্তর করার প্রয়োজন পড়ে । রুপান্তরের এই প্রক্রিয়াকে এনকোডিং (Encoding) বালা হয় ।
কম্পিউটারে ব্যবহৃত প্রতিটি সংখ্যা, চিহ্ন, বর্ণ বা বিশেষ চিহ্নে রুপান্তর করা হয় । এই পদ্ধতিকে বলা হয় ডিকোডিং (Decoding) । কাজেই ডাটা প্রসেসিং-এর জন্য এনকোডিং এবং ডিকোডিং উভয়ই গুরুত্বপূর্ণ ।
বিভিন্ন প্রকার কোড
ডাটা প্রক্রিয়াকরণ তথা কম্পিউটারের বিভিন্ন প্রকার কাজের জন্য ব্যবহৃত কোডগুলো হলো ।
১। বিসিডি (BCD) কোড
২। আলফানিউমেরিক (Alphanumeric) কোড
৩। অ্যাসকি কোড (ASCII code)
৪। অক্ট্যাল (Octal) কোড
৫। হেক্সাডেসিমেল (Hexadecimal) কোড
৬। ইবিসিডিক (EBCDIC) কোড
৭। ইউনিকোড (Uni Code); ইত্যাদি
বিসিডি কোড
বিসিডি (BCD) শব্দের পূর্ণরুপ হলো বাইনারি কোডেড দশমিক (Binary Coded Decimal) দশমিক (Decimal) সংখ্যার বাইনারি রুপান্তরই হলো বিসিডি কোড । এই পদ্ধতিতে দশমিক সংখ্যা 0 থেকে 9 পর্যন্ত মোট দশটি অংককে সমত্যল্য 4 বিট বাইনারি সংখ্যায় রুপান্তর করা হয় । 4 বিট দ্বারা ২4 অর্থাৎ 16 বিন্ন অবস্থা নির্দেশ করা যায় । তাই 16 টি অবস্থা ব্যবহার করে কয়েক প্রকার BCD কোড গঠন করা সম্ভব । এর মধ্যে BCD 8412 কোড বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য এবং বহুল ব্যবহৃত । BCD 8421 কোডিং দশমিক 0 থেকে 9 পর্যন্ত অংকটি দশটির BCD ড়ূপাণ্টোড় নিম্নরূপ
দেখা যাচ্ছে যে, 4 বিট BCD কোডের ক্ষেত্রে 24 বা 16 টি ভিন্ন অবস্থার মধ্যে শুধুমাত্র প্রথম দশটি অর্থাৎ 0000 থেকে 1001 পর্যন্ত অবস্থা ব্যবহৃত হয় ।
আলফানিউমেরিক কোড
অক্ষর (a-z), (A-Z),অংক (0-9) এবং বিভিন্ন গাণিতিক চিহ্নসহ (+,-,/,x ইত্যাদি) আর কতকগুলো বিশেষ চিহ্ন (!,@,#,৳,%,^ ইত্যাদি) এর জন্য ব্যবহৃত কোডকে আলফানিউমেরিক কোড বলা হয় । অ্যাসকি – ৭ (ASCII-7) একটি আলফানিউমেরিক কোড । এ কোডের মধ্যমে 27 বা 128 টি চিহ্নকে নির্দিষ্ট করা যায় । অনুরুপভাবে অ্যাসকি -৮ ও একটি আলফানিউমেরিক কোড । এ কোডের মাধ্যমে 28 বা 256 টি চিহ্নকে চির্দিষ্ট করা যায় ।
অ্যাসকি কোড
ASCII একটি শব্দ সংক্ষেপ যার পূর্ণ নাম American Standard Code for Information Interchange । এটি একটি বহুল ব্যবহৃত আলফানিউমেরিক কোড যা মাইক্র কম্পিউটার, মিনি কম্পিউটারসহ অনেক মেইনফ্রেম কম্পিউটারে ব্যবহৃতহয় । অ্যাসকি কোড ৭ টি বিট নিয়ে গঠিত । যেমন A অক্ষরটি অ্যাসকি কোড 1000001 । ASCII কোড দ্বারা 27 অর্থাৎ 128 টি ভিবিন্ন অংক,ম অক্ষর ও চিহ্ন নির্দিষ্ট করা যায় । ASCII কোডের ডান দিকের চারটি বিটকে সংখ্যাসূচক বিটি এবং বামদিকের তিনটি বিটকে জোন বলা হয় । তবে একেবারে বামে একটি প্যারিটি বিটি (Parity Bit ) যোগ করে অ্যাসকিকে ৮ বিটি (ASCII -8) –এ রুপান্তর করা হয় ।
ইবিসিডিক কোড
ইবিসিডিক (EBCDIC ) Extended Binary Coded Information Code-এর সংক্ষিপ্ত রুপ । এটি একটি ৪ বিটের কোড । সতরাং এ কোড দ্বারা 28 বা 256 টি অংক, অক্ষর বা চিহ্ন প্রকাশ করা যায় । এই কোডে জোন বিট হিসেবে 0 থেকে 9 পর্যন্ত, সংখ্যার জন্য 1111, A থেকে Z পর্যন্ত বর্ণের জন্য 1101, 1110 এবং বিশেষ চিহ্নের জন্য 0100, 0101, 011 ও 0111 ব্যবহৃত হয় । দশমিক সংখ্যাগুলোকে BCD 8421 কোডের মাধ্যমে প্রকাশ করা প্রত্যেক সংখ্যার সাথে 1111 যোগ করে EBCDIC কোড প্রকাশ করা হয় । যেমন- 5 কে EBCDIC-হবে 11110101 ।
‘A’ এর জন্য EBCDEC 1100 0001
‘N’ এর জন্য EBCDIC 1010 1100 ইত্যাদি ।
ইউনিকোড
ইউনিকোড হচ্ছে 16 বিট কোড । বিভিন্ন ধরনের ক্যারেক্টর এবং টেক্সটকে প্রকাশ করার জন্য ইউনিকোড ব্যবহৃত হয় । বিশ্বের সকল দেশের ভাষা সমূহকে প্রকাশ করার জনয় 16 বিট এই কোড ব্যবহার করা হয় । ইউনিকোডের সাহায্যে 216 =65,535 কোড গ্রুপ তৈরি করা সম্ভব । ফলে যে সমস্ত দেশের ভাষাকে প্রকাশ করতে 8 বিটের বেশি কোড ব্যবহৃত হয় সে সব ক্ষেত্রে ইউনিকোড ব্যবহৃত হয় ।