একটি গ্রামের একদম শেষ প্রান্তে ছিল একটি ভেড়ার খামার। খামারটি দেখাশোনা করতো একটি রাখাল। খামারের অপর পাশেই ছিল একটি ঘন জঙ্গল। সেখানে একটি ধূর্ত শিয়াল বাস করত। শেয়ালটি ভেড়াগুলোকে দেখি প্রায়ই স্বীকার করার চিন্তা করত। কিন্তু খামারটির চারপাশ ভালো করে ঘেরাও করা ছিল। যার কারণে সে ভেতরে ঢুকতে পারত না এমনকি কোন ভেড়া বাইরে আসতে পারত না। একদিন হঠাৎ করে সে দেখতে পেল যে একটি ভেড়া জঙ্গলের ভেতরে একাকী প্রবেশ করেছে। সে তৎক্ষণাৎ ভেড়াটির পিছু নিল এবং তাকে শিকার করল।
ভেড়াটির মাংস খেয়ে সে তৃপ্তি অনুভব করল। এমন সময় তার মাথায় একটি বুদ্ধি এলো। সে চিন্তা করলো যে সে একটি ভেড়ার বেশ নিয়ে খামারে প্রবেশ করবে। যখন রাত হবে এবং রাখাল টি সবাইকে একত্রে রেখে ঘুমাতে যাবে তখন সে সবগুলোকেই আস্ত গিলে খাবে। এতে তার শিকার করার জন্য কোন কষ্ট হবে না। যেই চিন্তা সেই কাজ। শেয়ালটি মরা ভেড়ার চামড়া টি গায় দিল। এখন সে ভেড়ার বেশে খামার টিতে প্রবেশ করল।
খামারের বাইরে একটি ভেড়া দেখে রাখাল টি অবাক হল। সে ভাবল ছুটে যাওয়া ভেড়াটি ফিরে এসেছে। সে ওই ভেড়াটি কে খামারে প্রবেশ করালো। ভেড়ার রূপ ধারণ করা শিয়ালটি এতগুলো ভেড়া কে একসাথে দেখে পাগল প্রায় হয়ে গেল। এদিক ওদিক ছোটাছুটি শুরু করলো। রাখাল টির ভেড়াটি কে দেখে সন্দেহ হলো। সে ভাবল এটির সম্ভবত কোন রোগ হয়েছে। অপরদিকে শেয়াল এর চিন্তা ছিল শুধু সে এতগুলো ভেড়া কে কিভাবে সাবাড় করবে।
তাই সে চিন্তা করল সে প্রতিদিন একটি একটি করে ভেড়া কে খেয়ে ফেলবে। তাহলে কেউ কিছু টের পাবে না। সেদিন রাতে সে একটি ভেড়াকে সাবার করল। এভাবে কয়েকদিন চলে গেল। রাখাল টি কিছুই বুঝে উঠতে পারছেনা। প্রায় প্রতিদিনই একটি করে ভেড়া তার খামার থেকে গায়েব হয়ে যাচ্ছে। সে চিন্তায় পড়ে গেল এবং খামার নিয়ে কি করবে সেই বিষয়ে ভাবতে থাকে। কোন উপায় মাথায় না এসে সে ভেড়াগুলোকে বেঁচে ফেলবার সিদ্ধান্ত নিল। যেই কথা সেই কাজ।
সে তার সবগুলো ভেড়া কে ই বেঁচে ফেলল। কিন্তু একটি ভেড়াকে কেউই কিন্তু চাইল না। তাই সে চিন্তা করল একটি শেষ ভেড়া কে সে নিজের রাতের খাবার এর সাথে যোগ করবে। সে ভেড়াটি কে জবাই করতে গেল।সে সময় শিয়াল কোন উপায় না পেয়ে তার আসল চেহারা প্রকাশ করল। রাখালটি বিস্মিত হয়ে গেল। সে এখন সব কিছুই বুঝতে পারলো এবং তাকে জবাই করল। শুধু আফসোস এই টুকুই ছিল যে তার রাতের খাবারে কোন মাংস যোগ হলো না সেই রাতে।