ঈদ মানে খুশি ঈদ মানে আনন্দ। এই কথাটি আমরা সবাই জানি। বড় হওয়ার পর মনে হয় ছোটবেলার ক্ষেত্রে মনে হয় এ কথাগুলো একদম পারফেক্ট ছিল। বড় হওয়ার পর ঈদ উদযাপনে অন্যরকম হয়ে যায়।
ছোটবেলার ঈদ
ছোটবেলায় ঈদের আগের দিন অনেক মজা করতাম। চাঁদ দেখার জন্য অনেক ব্যাকুল থাকতাম। অনেক কৌতুহল কাজ করত। কাজিনদের সাথে ছুটে যেতাম মাঠে ঈদের চাঁদ দেখার জন্য। ভাবতাম মাঠে গেলে মনে হয় সত্যি সত্যিই চাঁদ দেখতে পারবো। চাঁদ দেখার পর্ব শেষ হলে মেহেদি দেওয়ার পর্ব শুরু হতো। তারপর কাজিনদের সাথে অনেক মজা করতাম। চেষ্টা করতাম চাঁদরাতে সবাই একসাথে ঘুমানোর। একজন আরেকজনের নতুন ড্রেস দেখার জন্য অনেক চেষ্টা করতাম। কিন্তু কেউ কাউকে নতুন ড্রেস দেখাতাম না। ভাবতাম নতুন ড্রেস দেখলে মনে হয় eid শেষ হয়ে যাবে, ঈদ হবে না। তখন আমাদের ভিতরে এ রেওয়াজটা কাজ করতো। রাতে ৫০০ এসএমএস কিনে রাখতাম এবং ১২ টা বাজার অপেক্ষায় থাকতাম। ১২ টা বাজলে কে আগে মেসেজ দিতে পারে সেটা নিয়ে কম্পিটিশনে যেতাম।
তারপর আসলো ঈদের দিনের কথা। খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠতাম। সবার আগে গোসলটা সেরে ফেলতাম। তারপর নতুন ড্রেস পরতাম। তারপর কাজিনদের সাথে দেখা করতাম। আর কুরবানী ঈদের ক্ষেত্রে গরু জবাই দেখার জন্য প্রস্তুতি নিতাম। তারপর আত্মীয়-স্বজনদের বাসায় যেতাম, সালামি নিতাম। সালামি নিয়েও কাজিনদের ভিতর দারুণ উত্তেজনা কাজ করত। তারপর দোকানে গিয়ে অনেক খাওয়া দাওয়া করতাম। বিশেষ করে আইসক্রিম এবং ফুসকা খেতাম। কে বেশি সালামি পেলাম সেটা নিয়েও নিজেরা হিরো/হিরোইন হতাম। আমিতো মাঝে মাঝে বাড়িয়ে বলতাম 🙂 যাতে top লেভেলে থাকতে পারি। আরও কত কিছুই না করতাম।
বড় বেলার ঈদ
চাঁদ দেখা নিয়ে তেমন কোন প্ল্যান থাকে না। সন্ধ্যায় হাতে মেহেদী পরি,তাও সব ঈদে পরা হয়না। রাতে সোশাল মিডিয়াতে ফ্রেন্ডদের কে ঈদ মোবারক জানাই। রাতে তারাতাড়ি ঘুমিয়ে পরি। নতুন ড্রেস নিয়েও তেমন মাথা বেথা থাকেনা। কোন ঈদে নতুন ড্রেসও পরা হয়না।
খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠি। ফ্রেশ হয়ে আম্মুকে কিচেনে হেল্প করি। গরু জবাই নিয়ে কোন ফিলিংসই কাজ করে না। কাজ শেষ করে গোসল, খাওয়া-দাওয়া করি। তারপর দিব্বি ঘুম দেই। এভাবেই ঈদের দিন কাটে।
এই হচ্ছে আমার ঈদের দিন।