আমরা যারা ২০০০ সালের আগে জন্মেছি।
আমরা বিশেষ কিছু ছিলাম না কিন্তু উপভোগের মুহুর্তও কম ছিলো না।
সত্যি আমরা ভাগ্যবান ছিলাম
ছোটবেলায় হাতগুলো জামার ভিতর ঢুকিয়ে রেখে বলতাম আমার হাত নাই।
একটা কলম ছিলো যার চার রকমের কালি ছিলো
আর তার চারটা বোতাম একসাথে টেপার চেষ্টা করতাম।
আমাদের সময়ে এক হাত সমান কলম পাওয়া গেলেও আমরা সে কলম ছোট ছোট করে কেটে অনেকগুসো কলম আবিষ্কার করতাম। সাথে তিনটাকা দামের মোটা কলমতো ছিলোই।
দরজার পিছনে লুকিয়ে থেকে কেউ এলে চমকে দেওয়াটা ছিলো অন্যরকম একটা মুহুর্ত,
আবার সে আসতে দেরি করতো বলে অধৈর্য হয়ে বেরিয়ে আসতাম।
রাতে হাটার সময় ভাবতাম আমি যেখানে যাচ্ছি চাঁদ টাও আমার সাথে যাচ্ছে।
পড়ার বই সমাজ কিংবা বিজ্ঞান বইয়ে পৃথিবী ঘুরার কথা শুনে ভয়ও পেতাম না জানি কখন আমরা পৃথিবীর বাহিরে পড়ে যাই।
বন্ধুরা মিলে রমজানের আর ঈদের চাদঁ দেখে মিছিলটা ছিলো আবেগের,আনন্দের,খুশির।
হাতে মেহেদী লাগিয়ে প্রতিযোগিতা হতো কার হাতের আলপনা কত সুন্দর হয়েছে।
আর এখনকার ছেলে মেয়েরা দেখে টিভিতে কখন ঘোষনা দিবে কালকে ঈদ।
ঈদের দিন নতুন জামা পড়ে দুই টাকার নোটের একটা কাগজ সালামী পাওয়াটা যে কতটা অনুভূতির,কতটা ভাল লাগার বলাটা কঠিন।
এক টাকার পোটকা-বাশিঁ কিনে দল বেধে বাজানোটা ছিলো হাসি ফোটানোর মাধ্যম।
মাঝে মাঝে বড়রা বিরক্ত হয়ে দোউড়ানি দিতো ,সবাই যে যার মত পালিয়ে যেতাম, আবার বের হয়ে শুরু হতো বাজানো।
কারেন্টের সুইচের দুইদিকে আঙ্গুল চেপে দরে সুইচটাকে অন অফ এর মাঝামাঝি অবস্থানে আনার চেষ্টা করতাম।
স্কুলে যাওয়ার সময় সবাই এক সাথে দৌড়াদৌড়ী করে যেতাম,
ক্লাসে কলম কলম খেলা,খাতায় ক্রিকেট খেলা,চোর-ডাকাত,বাবু-পুলিশ খেলাটা ছিলো মনে রাখার মত।
অনেক সময় স্কুল ফাকি দিয়ে কয়েক জন বন্ধু মিলে ঘুরতে যেতাম আড্ডা দিতাম আর ও কত কি!
জামাই বউ খেলাটা ছিলো লজ্জার, কিন্তু ভয়েরও ছিলো যদি বড়দের মার খেতে হয়।
রাত্রে গ্রামের বাড়িগুলোতে ইরি-আউশ-আমন ধানের মাড়াইয়ের মুহুর্তটা কষ্টের হলেও ছিলো আনন্দের,
কেউ ধান দিতো,কেউ বা আবার মাড়াই করতো, পাশের বড় একটি খুটিতে জুলানো থাকতো বড় একটি ট্যাপ রেকোডার,ফিতা যুক্ত কেসেট(ডিক্স)চালিয়ে এন্ডুকিশোর আর মনির খানের গান বাজানোটা ছিলো ধান মাড়াইয়োর শক্তি।
সবাই সুরসমিলাতো যে যার মত।
এক টাকার রঙ্গিন বা নারকেলি আইসক্রিমের বাক্সের আওয়াজ শুনে শুরু হতো কি দিয়ে নেওয়া যায়,প্লাস্টিকের বতল,লোহা,টিন ছিলো এবং এক টাকার কয়েন তো ছিলো আইসক্রিম নেওয়ার একমাত্র পন্থা।
হাওয়াই মিঠাই খেতে না পারলে মনটাই খারাপ হয়ে যেত।
হঠাৎ আকাশ দিয়ে হেলিকপ্টার গেলে সবাই রুম থেকে বের হয়ে আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকতাম। মনে হতো একহাত উপরে দিয়ে যাচ্ছে, লাফিয়ে লাফিয়ে দরার চেষ্টা করতাম।
রাত্রে যদি কোনো বিমান যাওয়া দেখতাম, ভাবতাম এটা বুঝি চোরা প্লেন, চুরি করে পালিয়ে যাচ্ছে কোথাও।
দশ টাকার পিস্তল দিয়ে খেলা হতো মুক্তিযুদ্ধ মুক্তিযোদ্ধা।
স্কুল ছুটি হলে দৌড়ে বাসায় আসতাম মিনা কার্টুন দেখবো বলে।
শুক্রবার দুপুর ৩ টা থেকে আপেক্ষা করতাম কখন BTV তে সিনেমা শুরু হবে,এবং সন্ধার পর আলিফ লায়লা,সিন্দবাদ,রবিনহুড,ম্যাকাইভার দেখার জন্য পুরো সপ্তাহ অপেক্ষা করতাম।
ফলের গুটি খেয়ে ফেললে দুশ্চিন্তা করতাম পেটের ভিতর না জানি গাছ হয়ে যায়,তাহলে তো পেট চিরে বের হবে তাহলে তো মরে যাবো।
মাথায় মাথায় ধাক্কা লাগলে শিং গজানোর ভয়ে আবার নিজে ধাক্কা দিতাম।
কেউ বসে থাকলে তার মাথার উপর দিয়ে ঝাপ দিতাম যাতে সে আর লম্বা হতে না পারে।
ছোটবেলার দোকান গুলো চালাতাম কাঁঠাল গাছের পাতাকে টাকা বানিয়ে।
সকালে ঘুম থেকে উঠে মক্তবে যেতাম,
আর বৃষ্টিতে ভিজে ফুটবল খেলার মজাই ছিল অন্য রকমের এক আনন্দের মূহুর্ত।
বিকেলে কিতকিত,কানামাছি,গোল্লাছুট না খেললে বিকাল টাই যেন মাটি হয়ে যেত।
ফাইনাল পরিক্ষা শেষ হলে তো সকালে পড়া নেই এতো মজা লাগতো যা বলার বাইরে। নানু বাড়ি,দাদু বাড়ি যাওয়ার এটাই তো ছিলো সময়।
ব্যাডমিন্টন,কেরাম,লুডু না খেললে কি হয়? ডিসেম্বর মাস ও শীতকালটা আমাদের ছেলেবেলায় এমনি কালারফুল ছিলো।
তবে ডিসেম্বরের ৩১ তারিখ যতই আগাই আসতো মনের মধ্যে ভয় ততই বাড়তো,ওই দিন যে ফাইনালের রেজাল্ট দিবে। এখন আমরা এই গুলো খুব মিস করি যা এই বর্তমান জেনারেশনরা বুঝবেনা,আমরা এখন হারে হারে টের পাচ্ছি ছোটবেলাটা ছিল কত সুন্দর আনন্দের সময়,আরতো মদন কটকটির কথা ভুলতে পারবোনা কিন্ত এখন আর সেগুলো চোখে দেখতে পাইনা,আর এখনকার জেনারেশনের ছেলে মেয়ে গুলো দেখতেও পাবেনা হয়তো,যা আমরা পেয়েছি।
সত্যি সেই দিন গুলো খুব মিস করি।
আসলেই ঐ দিন গুলোকে খুব মিস করি।
জেনে নিন শীতকালে ভালো থাকার সহজ দশটি উপায়
যেহেতু আমরা শীতের ঠাণ্ডার মুখোমুখি হওয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করি, এটা কল্পনা করা বেশ কঠিন যে এই হিমশীতল নিম্ন তাপমাত্রা...