সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাই ও বোনেরা, একজন ডায়েটিশিয়ান ও নিউট্রিশিয়ান হিসাবে আজ আমি ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীরা যে যে খাবার খেয়ে ডায়াবেটিসের মাত্রা কে নিয়ন্ত্রণ করে রাখতে পারবে সে সমস্ত খাবার নিয়ে আলোচনা করব। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গুরুত্বপূর্ণ এই আলোচনাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ার জন্য বিনীত অনুরোধ করা হল
আপনি উদ্বিগ্ন হতে পারেন যে, ডায়াবেটিস হওয়া মানে আপনি যে খাবারগুলি আগে গ্রহণ করতেন তা পুরোপুরি পরিত্যাগ করা। আপনার জন্য আনন্দ ও স্বস্তিদায়ক খবর হলো, যে আপনি এখনও আপনার প্রিয় খাবার খেতে পারেন, তবে আপনাকে ছোট অংশ বা নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় গ্রহণ করতে হবে।
আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী ডায়েটিশিয়ান বা স্বাস্থ্যকর্মী আপনার জন্য একটি ডায়াবেটিস খাবার পরিকল্পনা তৈরি করতে সাহায্য করবে যা আপনার চাহিদা এবং পছন্দগুলি পূরণ করে। ডায়াবেটিসের সাথে খাওয়ার চাবিকাঠি হল সকল প্রকার খাদ্য গ্রুপ থেকে বিভিন্ন ধরণের স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া যা হবে আপনার খাবার পরিকল্পনার রূপরেখার পরিমাণে। সহজে পাওয়া যায় এমন উৎস থেকে খাদ্য তালিকা প্রণয়ন করা আপনার ডায়েটিশিয়ান বা স্বাস্থ্য সেবা প্রদান প্রদানকারীর দায়িত্ব হবে বলে আমি মনে করি।
ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য নিম্নোক্ত খাদ্য গুলো অনুসরণ করার জন্য অনুরোধ করা হলো
- সবজি:
নন-স্টার্চি: ব্রকলি, গাজর, সবুজ শাক, গোলমরিচ, এবং টমেটো
স্টার্চি : মিষ্টি আলু, ভুট্টা, এবং সবুজ মটর জাতীয় সবজি।
- ফল:
কমলা, তরমুজ, বেরি, আপেল, কলা এবং আঙ্গুর
- শস্য/গ্রেইন:
আপনার প্রতি দিনের জন্য অন্তত অর্ধেক শস্য হোল গ্রেইন শস্যের মধ্য থেকে হওয়া উচিত।
গম, চাল, ওটস, কর্নমিল, বার্লির মধ্য থেকে যেমন : রুটি, পাস্তা, সিরিয়াল বিনস্।
- আমিষ
চর্বিহীন মুরগির মাংস বা টার্কির চামড়া ছাড়া মাংস, নন ফ্যাটি মাছ, ডিমও খেতে পারবেন।
এছাড়াও বাদাম এবং চিনাবাদাম, শুকনো মটরশুটি, নির্দিষ্ট মটর- যেমন ছোলা ইত্যাদিও উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে আমিষ হিসেবে খেতে পারবেন।
- দুগ্ধজাত – ননফ্যাট বা কম চর্বিযুক্ত খাবার
কম চর্বিযুক্ত বা ল্যাকটোজ-মুক্ত দুধ খাবেন যদি আপনার ল্যাকটোজ অসহিষ্ণুতা থাকে। আবার দই ও পনিরও আপনার জন্য আদর্শ সব খাবার।
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাইবোনেরা উল্লেখিত খাবারগুলোর যথাযথ মাত্রায় গ্রহণের মাধ্যমে ডায়াবেটিস রোগীরা তাদের এই দীর্ঘমেয়াদী রোগ কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন।
তবে বলে রাখি শুধু খাবার নয়, শরীর থেকে অতিরিক্ত গ্লুকোজ কে বার্ন করতে হলে অবশ্যই আপনাকে নির্ধারিত সময় পর্যন্ত শারীরিক ব্যায়াম করতে হবে, সুনির্ধারিত জীবনযপন নিশ্চিত করতে হবে তথা পরিমাণমতো ঘুম ও পর্যাপ্ত বিশ্রাম গ্রহণ করতে হবে। মাসে অন্তত একবার ডায়েটিশিয়ান বা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ নিতে হবে।
আপনাদের সুস্থতা কামনা করে আজ এখানেই শেষ করছি।
আল্লাহ হাফেজ।।।