তিব্বতি মালভূমির বিশাল সমুদ্রের কারণে এটিকে “বিশ্বের ছাদ” বলা হয়। এই পর্বতমালার হাজার ফুট উচ্চতা বিমানগুলোকেকে উড়ে চলা অসম্ভব করে ফেলেছে!
অন্য দেশের প্লেনগুলি তিব্বতের উপর দিয়ে উড়ে না গিয়ে একে পাশ কাটিয়ে যায় কেনো জানতে চান?
পৃথিবীর এই বিশেষ অংশটিকে কেন্দ্র করে বিমানগুলি যখন উড়ে আসে তখন একটি সাধারণ বিমান চালনা নিয়মের ব্যাত্যয় ঘটে যার কারনে বিমান চালানো কঠিন হয়ে পরে।
এতে কোনও বিস্ময়কর বা আধিভৌতিক ঘটনা জড়িত না, বরং সমস্যাটি হলো এই অঞ্চলের হাজার ফুটি অত্যন্ত উঁচু পর্বত গুলো। যার কোনো কোনোটা প্রায় ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে! যেখানে বিমানগুলোর সর্বোচ্চ উচ্চতাও ২০/২৫ হাজার এর ই মতো। এরফলে এই এলাকার উপর দিয়ে বিমান চালাতে গেলে সংঘর্ষ হওয়ার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে!
কেনো অযথা এতগুলো জীবনের রিস্ক নেবেন!!
তিব্বত এর বিশালাকার মালভূমির কারণে “বিশ্বের ছাদ” নামে পরিচিত। তিব্বতের সুউচ্চ এই পাহাড়গুলোর যথেষ্ট উচ্চতা বিমানগুলির পক্ষে উড়ে যাওয়া অসম্ভব করে তোলে।
যুক্তরাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থার টিম হিবিবেটস উল্লেখ করেছেন যে বিশ্বের এই অংশে, “নিম্ন” অঞ্চলগুলিও গড়ে ১২,০০০ এর উপরে!
এটি বিশাল সমস্যার সৃষ্টি করে কারন এত উচুতে উঠলে কেবিনের তৈজসপত্র ক্ষয় হওয়ার ভয় থাকে। তাছাড়া বেশিরভাগ এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের জন্য কেবল 20 মিনিটের মতো বাড়তি অক্সিজেন থাকে বিমানে!
“সেখানে ফ্লাইটের নিয়ম রয়েছে যেগুলি অপারেটররা জরুরি অক্সিজেনের বাইরে চলে যাওয়ার আগে ১০,০০০ মিটারের কাছাকাছি নামিয়ে আনতে হবে। স্পষ্টতই, এশিয়ার এই অঞ্চলটি একটি বিশাল অঞ্চল!
তিব্বতের উপর নির্ভরযোগ্য অব্যাহতি রুটের উন্নয়নের একমাত্র বিমান সংস্থা হল ক্যাথে প্যাসিফিক।
বালাজি বিশ্বনাথন নামে একজন মন্তব্যকারী, যিনি বিমানের লাভ সম্পর্কে পড়াশোনা করেছিলেন, তিনি বলেছিলেন যে তিব্বতি মালভূমিতে বিমানের যানবাহনের অভাবের অপর একটি অপরিহার্য কারণের প্রয়োজনের অভাবের সাথে অন্য কিছু করার দরকার নেই।
“ভারত এবং চীন উভয়ের মধ্যে ঘন ঘন ফ্লাইট নেই।
যদি সেগুলি হত, সম্ভবত কিছু ফ্লাইট তিব্বতের উপর দিয়ে উড়তে গিয়ে প্রায়ই ঝামেলায় পরতে হতো!
আরেকটা কারন হলো পাহাড়গুলোর উপরের বায়ু প্রচন্ড অশান্ত এবং যখন তখন তুষার ঝড় শুরু হতে পারে।এটি সাধারণত জেট স্ট্রিম বা বায়ুর অস্থির পকেটের সাথে সম্পর্কিত।
পর্বতমালার দ্বারা তৈরি এয়ারফ্লো ব্যাহত হলে এটার সৃষ্টি হয়, যযখন এর ভেতর দিয়ে বিমান উড়ে যাবে তখন স্বভাবতই বাঁধার সৃষ্টি হবে। এই ঝড় প্রচন্ড অশান্ত হয়।
বায়ুর এই অশান্ত ব্যবহারের পূর্বানুমানও সম্ভব নয়, কারন সবসময় একই ধরন হয়না ঝড়ের রুপ। তিব্বত মালভূমির ঝড়ের রূপের সাথে কোথাও ই মিল পাওয়া যাবেনা।
মালভুমির অবস্থানঃ
মালভূমিটি হিমালয়ের বিস্তৃত পর্বতমালা দ্বারা বেষ্টিত।
এটি উত্তরে একটি প্রশস্ত এসকরপমেন্ট দ্বারা আবদ্ধ যেখানে এর উচ্চতা প্রায় ৩০০০০ফুট ও হতে পারে!
বিশ্বের এই অংশে ফ্লাইট চালু হওয়া কষ্টকর ও ভয়াবহ হওয়ার সম্ভাবনা থাকার কারনে এই অঞ্চলে এখনও বিমানবন্দর দিয়েই যাতায়াত করা হয় মূলত।
প্রতিবছর প্রায় ৩০ হাজার পর্যটক এই বন্দর দিয়ে যাতায়াত করেন!
তারপরও এখানে সম্প্রতি ২ টি আন্তর্জাতিক মানের বিমানবন্দর চালু হয়েছে।
বিমান চালানোর সময় যে পরিমান ফুয়েল গ্যাস বহন করা হয় এই এলাকার উপর দিয়ে চলতে গিয়ে তার প্রচুর খরচ হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিব্বতের উপর দিয়ে শর্টকাট রাস্তা ভেবে উড়ে চলে আসা যুদ্ধ বিমান এর প্রায় ৯৭ টির মতো বিমান পথেই ধ্বংস হয়ে গেছে! হঠাৎ উঠা তুষার ঝড় ও প্রচন্ড ঠাণ্ডায় বিমানের মোটর বন্ধ হয়ে যায় বা মেকানিজম কাজ করছিলো না ফলস্বরূপ বিমানগুলো ভূমিতে ছিটকে পরে। চারদিকে পাহাড়ি ঢাল থাকার কারনে জরুরি অবতরনও সম্ভব নয়!!