আসসালামুয়ালাইকুম সবাইকে । আশা করি সবাই ভাল আছেন। আজকের টপিক হলো দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে ।শুধু এশিয়া নয় , সারাবিশ্বের শিক্ষাক্ষেত্রে দক্ষিন কোরিয়া নেতৃত্বস্থানীয় । দক্ষিণ কোরিয়ার শিক্ষাব্যবস্থা পুরো বিশ্বে সর্বশ্রেষ্ঠ বলে গণ্য করা হয়। যা ২০১৫-১৬ তে বিশ্বব্যাপি ১ম স্থান দখল করেছে পরপর দুই বার । দক্ষিণ কোরিয়ার হাইস্কুলের শিক্ষার্থীরা দিনে ১৬ ঘন্টা পড়াশুনা করে ।তাদের সকাল ৮ টায় স্কুল শুরু হয় ও শেষ হয় রাত ১০ টা নাগাদ ।এ কারনে প্রতিদিন তাদের স্কুল থেকেই খাবার দেয়া হয় ।
অন্যদিকে এদেশের প্রাইমারী স্কুলগুলোতে ক্লাস হয় দিনে ৫ ঘন্টা ।সেসব স্কুলে গনিত , ইংরেজি ও বিজ্ঞান শিক্ষার পাশাপাশি পিয়ানো ,মার্শাল ও চাইনিজ ক্যালিগ্রাফিও শেখানো হয় । এতে একজন শিক্ষার্থীর পেছনে মাসে ১৭০০ ডলারেরও বেশি খরচ হয় । দক্ষিণ কোরিয়ায় সবচেয়ে বেশি মর্যাদা দেয়া হয় একজন শিক্ষককে।প্রতিটি শিক্ষককেই পাঁচ বছর পর পর অন্য স্কুলে বদলি হতে হয় । এতে তিনি কোনো স্কুলে যতই সুযোগ সুবিধা পান না কেন , তার ব্যাপ্তি মাত্র পাঁচ বছর । এ নিয়মের মূল কারণ হলো প্রতিটি শিক্ষক যেন সমান সমান সুবিধা ভোগ করতে পারে ।
দক্ষিণ কোরিয়ায় দৈহিক শাস্তিকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয় না । শাস্তির জন্য প্রতিটি ক্লাসরুমেই একটি বিশেষ লাঠি বরাদ্দ থাকে ।তবে শুধু খারাপ আচরণের কারনেই এই লাঠি ব্যবহার করা হয়। দক্ষিণ কোরিয়ার স্কুল প্রাঙ্গন পরিষ্কারের মূল দায়িত্ব থাকে শিক্ষার্থীদের ওপর । প্রতিদিন পাল্লা দিয়ে ক্লাস পরিষ্কার করা রীতিমত উপভোগ করে শিক্ষার্থীরা । এই দেশের স্কুলগুলোতে প্রতি মুহূর্তে শেখানো হয় নৈতিক আচরণ । শিক্ষার্থীরা কখনোই জুতা পরে ক্লাসরুমে প্রবেশ করে না । প্রবেশের সময় জুতা খুলে পায়ে স্লিপার পরে প্রবেশ করতে হয়।
দক্ষিণ কোরিয়া ২০১৫ সালে শুধু শিক্ষা খাতেই খরচ করেছে ৪৩.১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার । ২০২০ পর্যন্ত যা দাড়িয়েছে ৪৮.৬ বিলিয়নে।এই অর্থ তাদের বার্ষিক বাজেটের প্রায় ১৮ ভাগ । বাংলাদেশের ক্ষেত্রে যা সচরাচর হয় ১১ ভাগ। দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ৯৮% শিক্ষার্থীই উচ্চশিক্ষা গ্রহন করে । তাদের শিক্ষাজীবন অনেক পরিশ্রমের হলেও শিক্ষাজীবনের প্রতিটি মুহূর্ত তারা আনন্দের সাথে উপভোগ করে । পরবর্তীতে তারাই দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
আজকের পোস্ট এই পর্যন্তই । আগামি পোস্টে নতুন কিছু নিয়ে আসবো ইনশাআল্লাহ। সে পর্যন্ত সবাই ভালো থাকবেন , সুস্থ থাকবেন। আল্লাহ হাফেজ।।