আসসালামু আলাইকুম,
প্রিয় শিক্ষার্থীবৃন্দ, সবাই কেমন আছেন?
আশা করি সবাই ভাল আছেন, সুস্থ আছেন।
আপনাদের সামনে আবারো হাজির হলাম সপ্তম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় দ্বিতীয় ় সপ্তাহের প্রশ্ন ও উত্তর নিয়ে।
সপ্তম শ্রেণীর বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়দ্বিতীয় ় সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের প্রশ্নটি হচ্ছে –
অ্যাসাইনমেন্ট বা নির্ধারিত কাজ-
ভাষা আন্দোলনের ঘটনাবলী ধারাবাহিকভাবে লেখ।
তোমার দের বিদ্যালয় সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কিভাবে পালন করা হয়েছে তার একটি পর্যায়ক্রমিক বর্ণনা দাও।
ভাষা আন্দোলনের ঘটনাবলী ধারাবাহিকভাবে বর্ণনা দেওয়া হল-
বাংলা ভাষা আন্দোলন ছিল ১৯৫২ সাল ১৯৫৬ সালে পর্যন্ত তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের (বর্তমান বাংলাদেশের) ইতিহাসে সংঘটিত একটি সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক আন্দোলন। বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সৃষ্ট এই আন্দোলনের মাধ্যমে তদানীন্তন পাকিস্তানে গণদাবি বহিঃপ্রকাশ ঘটে।১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি আন্দোলন চূড়ান্ত রূপ ধারণ করলেও এর প্রতিক্রিয়া এবং ফলাফল ছিল সুদূর প্রসারী। ১৯৪৭ সালের দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ব্রিটিশ ভারত ভাগ হয় পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি স্বাধীন রাষ্ট্রের উদ্ভব হয়। পাকিস্তান ভাগ হয়ে দুটি অংশে বিভক্ত হয় একটি পূর্ব পাকিস্তান ও অন্যটি পশ্চিম পাকিস্তান দুটি অংশের মধ্যে প্রায় বারোশো মাইলের দূরত্ব ব্যবধান।
এছাড়াও দুই অংশের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও ভাষাগত দিক থেকে অনেকগুলো পার্থক্য বিরাজমান ছিল।
১৯৪৮ সালে ঢাকায় এক জনসভায় মোহাম্মদ আলী জিন্নাহ এক জনসভায় বলেন -উর্দুই হবে পাকিস্তানের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা। এই ঘোষণার প্রেক্ষাপটে পূর্ব বাংলার অবস্থানকারী সাধারন জনগন মধ্যে তীব্র ক্ষোভের জন্ম হয় এবং বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি করে। এই ঘোষনার বিরুদ্ধে বাংলার মানুষ শুরু করে আন্দোলন। আন্দোলন দমানোর জন্য পুলিশ ১৪৪ ধারা জারি করে। তবে বাংলার ছাত্ররা এ আদেশ অমান্য করে হাজার ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি আন্দোলন মিছিল করতে থাকে।
আন্দোলনে ঢাকা মেডিকেলে সামনে পৌঁছানো মাত্রই পুলিশ নির্বিচারে গুলিবর্ষণ শুরু করে, গুলিতে নিহত হন রফিক, জব্বার, বরকত আরো অনেকে। শহীদের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়ে ওঠে।
শোকাবহ ঘটনা অভিমতে সমগ্র পূর্ব বাংলার জনগণের মধ্যে খুব ছড়িয়ে পড়ে। একুশে ফেব্রুয়ারি ছাত্র হত্যার প্রতিবাদে সারাদেশে বিদ্রোহের আগুন দাউদাউ করে জ্বলে ওঠে। ২২ ও ২৩ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-শ্রমিক সাহিত্যিক বুদ্ধিজীবী শিক্ষক ও সাধারন জনতা পূর্ণ হরতাল পালন করে।
ভাষা আন্দোলনের শহীদ স্মৃতি ধরে রাখার জন্য মেডিকেল কলেজের হোস্টেল প্রাঙ্গনে রাতারাতি ছাত্রদের দ্বারা গঠিত হয়। শহীদ মিনার যা ২৪ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধন করেন শহীদ শফিউর রহমানের পিতা।
★তোমাদের বিদ্যালয়ে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস কিভাবে পালন করা হয়েছিল তার একটি পর্যায়ক্রমিক বর্ণনা দাও –
আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে একুশে ফেব্রুয়ারি স্কুল প্রাঙ্গনে আয়োজন করা হয-
★ বিভিন্ন কর্মসূচি ২১ শে ফেব্রুয়ারি এ তারিখে মডেল একাডেমী মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে সারাদিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন হয়।
কর্মসূচির মধ্যে ছিল প্রভাতফেরী, জাতীয় পতাকা উত্তোলন, শহীদ মিনারে পুষ্পস্তবক অর্পণ আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
*ভোর ছয়টার দিকে ছাত্র-ছাত্রীরা খালি পায়ে স্কুল গিয়ে শহীদ মিনারে পুষ্প অর্পণ করে এরপর স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সকল শিক্ষকগণ শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
* সকাল সাতটার দিকে শুরু হয় আলোচনা সভা আলোচনা সভায় প্রথমেই বক্তব্য রাখেন স্কুলের সভাপতি কমিটির প্রধান। তারপরে বক্তব্য রাখেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক। এছাড়া স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
*আলোচনা অনুষ্ঠান শেষে শুরু হয় মনমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান প্রথমে বাজানো হয় ভাষা শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন গান। তারপরে স্কুলের শিক্ষার্থীরা তাদের গান, নাচ কবিতা ইত্যাদি উপস্থাপন করেন।
*সকাল নয়টার দিকে শুরু হয় চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা ও রচনা প্রতিযোগিতা। প্রতিযোগিতা চলে দশটা পর্যন্ত প্রতিযোগিতা শেষে বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন স্কুলের প্রধান শিক্ষক।
* সার্বিক বিচারে অনুষ্ঠান অত্যন্ত গোছানো ও মার্জিত ছিল।
সবাইকে ধন্যবাদ।