সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাই ও বোনেরা আশা করি সবাই ভালো আছেন। ফিরে এলাম গ্রাথোর প্লাটফর্মে নতুন আরো একটি শিক্ষণীয় আর্টিকেল নিয়ে। আজকের আলোচ্য বিষয়বস্তু ” ধৈর্যের পরীক্ষা মানুষকে শিক্ষার প্রকৃত স্বাদ প্রদান করে”। মনোযোগ দিয়ে আর্টিকেল টি পড়ার ও অনুধাবন করার অনুরোধ রইলো।
বন্ধুরা ” ধৈর্য্য ” শব্দটি আমাদের বাস্তব জীবনে বহুল পরিচিত একটি শব্দ। আমার বিশ্লেষনে ধৈর্য্য শব্দের পূর্ণাঙ্গ অর্থ ‘ধ’ তে ধীশক্তি এবং ‘য’ তে যন্ত্রণা তে লুকায়িত। মানবজীবন সুখ- দুঃখের মিলনমেলাতে সজ্জিত রয়েছে। আমাদের জীবনে যখন সুখের দেখা মেলে তখন আমরা আনন্দে আত্নহারা হয়ে যায়। পক্ষান্তরে যখন দুঃখের ছোঁয়া স্পর্শ করে তখন স্বাভাবিকভাবে আমরা বিমর্ষ ও বিচলিত হয়ে পড়ি। এটাই আমাদের স্বাভাবিক জীবনধারা। দুঃখের অশুভ আঘাত আমরা অনেকে পছন্দ করি না ও প্রত্যাশাও করি না। তবে জীবন যতদিন থাকবে সুখের পাশাপাশি দুঃখও অতিথির বেশে জীবনে আনাগোনা করবে। এটাই স্বাভাবিক, এটাই অকাট্য বাস্তবতা।
প্রকৃত বুদ্ধিমান দাবীদার মানুষেরা দুঃখ নামক এই অথিতি কে কখনো অবহেলা, বা অসম্মান করে না বরং বাস্তব জীবনের সঙ্গী হিসেবে আলিঙ্গন করে নেয়। এই অসাধ্য ও অনাকাঙ্ক্ষিত কাজটি তারা ধৈর্য্য নামক সমাধান যন্ত্রে যন্ত্রণা হিসাবে সমর্পন করে থাকেন। যে সমাধান যন্ত্র টি ধীশক্তি নামক ফুইল বা জ্বালানি দিয়ে পরিচালিত করে থাকে। এই ধীশক্তি নামক জ্বালানি পুড়িয়ে দুঃখ নামের যন্ত্রণা কে জীবন থেকে দূরীভূত করে। এ এক অনন্য অর্জন যা তার জীবনের প্রকৃত শিক্ষাকে জাগ্রত করে এবং সুখের অনাবিল প্রশান্তি কে অর্জন করতে সক্ষম হয়।
জ্ঞানী ও বুদ্ধিমান মানুষেরা বিশ্বাস করে ” সবরে মেওয়া ফলে” । এজন্য তারা নিরাশ হয় না, বরং বুকভরা আশা নিয়ে জীবন সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ে। পাশাপাশি অর্জনকে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে, দুঃখের সাথে মোকাবেলা করে সুখ নামক অমিয় তৃপ্তিকে ছিনিয়ে আনতে সক্ষম হয়। জীবনযুদ্ধে হার মানাকে তারা কাপুরুষিতা মনে করে। এজন্যই তারা হয়ে ওঠে হার না মানা সৈনিক, দীপ্ত মনোবলের অপ্রতিরধ্য জীবনযোদ্ধা। একবার না পারিলে শতবার চেষ্টা করাকে তারা সহজ একটি সমীকরণে রূপ দিয়েছে। এজন্যই তারা অপ্রতিরোধ্য জীবনযোদ্ধা।
সুখ – দুঃখ জীবনে আসবেই। এটা স্বাভাবিক। এটাকে মেনে নিতে হবে। সুখ ভোগ করার সময় দুঃখকে ভুলে গেলে চলবে না। দুঃখকে সাহসের সাথে বরণ করার জন্য সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। মনে সততার সাথে সাহস সঞ্চার করতে হবে। আকুলতা- ব্যকুলতাকে জীবনের সঙ্গী হিসেব বহন করা শিখতে হবে। এজন্য নিজের জীবনকে সুন্দরভাবে সাজাতে হলে প্রয়োজন ধৈর্য্য নামক প্রতিপালনীয় গুনাবলী। যেটাকে ধীশক্তি ব্যবহার করে পরিচালনা করতে হয়।তাহলে বাস্তব জীবনে প্রকৃত সুখের দেখা মেলে।
আমাদের জীবনে পথচলার ক্ষেত্রে নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়। সমস্যাগুলো সমাধানও করতে হয়। এর জন্য প্রয়োজন ধৈর্য্য। এটি ছাড়া সঠিক সমাধানও পাওয়া যাবে না। এজগতে যত গুনী মানুষের আবির্ভাব হয়েছে তারা সবাই ধৈর্য্যশীল ছিলেন। জীবনকে তারা ধৈর্যের সাথে পরিচালনা করেই চির স্বরণীয় ও মানুষের জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে বেঁচে রয়েছে মানুষের অন্তরে।
আজ আমরা নিরাশ হওয়াকে জীবনের সাথে আলিঙ্গন করে নিয়েছি তাই সমস্যার আধিক্য বেড়ে গিয়েছে। জীবনের প্রকৃত স্বাদও হারিয়ে যাচ্ছে। ধৈর্যের সাথে জীবনকে মোকাবেলা করুন দেখবেন অফুরন্ত প্রশান্তি আপনার মনকে শীতল করে দেবে। অসাধ্য সব কাজ সহজ হয়ে যাবে। পাঠক হৃদয়ের মণিকোঠায় লেখাটি সাড়া দিলে আমি অধম কৃতজ্ঞ থাকবো। সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। ধৈর্য্যময় জীবন গঠন করুন।। আল্লাহ হাফেজ।