মানুষের সেবামূলক কাজে নিজেকে অনেকেই আত্মনিয়োগ করতে চান। আর মানুষের সেবা করার একটি অনন্য পেশা হচভহে নার্সিং। নার্সিং পেশায় মানুষের সেবা করার পাশাপাশি নিজের ভবিষ্যৎও উজ্জ্বল রয়েছে। সারাদেশে জেলা-উপজেলায় বিভিন্ন স্থানে সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে ছোট বা বড় হাসপাতাল ও ক্লিনিক গড়ে উঠছে। ক্রমাগত এই সংখ্যা বাড়ছে। এসব হাসপাতাল বা ক্লিনিকে প্রতিবছরই অনেক নার্সের প্রয়োজন হয়ে থাকে।
বাংলাদেশ সেবা পরিদপ্তর বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠানে নার্স নিয়োগ দেয়। বিভিন্ন সময় এই পরিদপ্তরের মাধ্যমে অনেক নার্স নিয়োগ দেয়া হয়। ভবিষ্যতে আরও নার্স নিয়োগ করা হবে। তাই মানবতার সেবার মহান এই পেশার মাধ্যমে যারা ক্যারিয়ার গড়তে চান, তারা প্রস্তুতি নেয়ে শুরু করে দিন এখন থেকেই।
নার্সিং পেশা শুরু করতে চাইলে আগে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং অথবা ব্যাচেলর অব সায়েন্স ইন নার্সিং বা (বিএসসি) কোর্স করতে হয়। বর্তমানে প্রায় ৪৩ টি সরকারি ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কলেজ এবং ৭০ টি বেসরকারি নার্সিং কলেজ আছে। এছাড়াও ৯ টি বিএসসি ইন নার্সিং কলেজ এবং ২১ টি বেসরকারি কলেজ রয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল। বিভিন্ন সময় ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে থাকে এসব নার্সিং কলেজ।
শিক্ষাগত যোগ্যতাঃ
নার্সিং পেশায় নিয়োজিত হতে হলে আবেদনকারীকে কিছু শর্ত পূরণ করতে হবে। আর তা হলো, বাংলাদেশ নার্সিং কাউন্সিল অনুমোদন দিয়েছে এমন কোনো নার্সিং কলেজ থেকে ডিপ্লোমা ইন নার্সিং বা বিএসসি ইন মার্সিং কোর্স করে পাস করতে হবে। তাই নার্সিংয়ে যেতে চাইলে এসব কোর্স আপনাকে করে নিতে হবে৷ আর নার্সিং কলেহে ভর্তি হওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই সর্বনিম্ন এসএসসি পাস হতে হবে।
আর যদি আপনি বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সে ভর্তি হতে চান তাহলে আপনাকে এসএসসি ও এইচএসসি পাস করতে হবে এবং উভয় পরীক্ষা মিলিয়ে গড়ে জিপিএ-৬ থাকতে হবে৷ আবার পৃথক পরীক্ষায় সর্বনিম্ন জিপিএ-২.৫০ থাকতে হবে। তাছাড়া আবেদন করতে পারবেন না। সাধারণত ডিপ্লোমা ইন নার্সিং কোর্সগুলো তিন বছরমেয়াদি হয় এবং বিএসসি ইন নার্সিং কোর্সগুলো হয় চার বছরমেয়াদি।
যেভাবে আবেদন করবেন এবং নির্বাচিত হবেনঃ
সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বা কলেজগুলো এসব কোর্স করানোর জন্য বিভিন্ন সময়ে জাতীয় দৈনিক পত্রিকাগুলোতে ভর্তি বিঘপ্তি দিয়ে থাকে৷ এসব প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব ওয়েবসাইটও রয়েছে যার মাধ্যমে তারা ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। ভর্তির জন্য কিছু ধাপ রয়েছে, যেমনঃ লিখিত পরীক্ষা, মৌখিক এবং ডাক্তারি পরীক্ষা।
এসব ধাপের মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীকে ভর্তি করানো হয়। মেয়েদের পাশাপাশি এসব পরীক্ষায় ছেলেদের জন্য ১০ শতাংশ আসন খালি রাখা হয়। লিখিত পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, পদার্থবিজ্ঞান, জীববিজ্ঞান ও সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন করা হয়ে থাকে।
নার্সিং কোর্স করতে যেমন খরচ হতে পারেঃ
যেহেতু নার্সিং একটি দীর্ঘমেয়াদি কোর্স। তাই আপনাকে খরচের বিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নার্সিং কোর্স সম্পন্ন করতে হলে আপনার খরচ হবে প্রায় এক লাখ থেকে এক লাখ আশি হাজার টাকার মতো৷ আর বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে কোর্স শেষ করতে চাইলে চার বছরে আপনার খরচ হতে পারে প্রায় দুই বা তিন লাখ টাকা।
কিন্তু সকল বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে খরচ একইরকম নয়৷ কলেজভেদে খরচ কম বা বেশিনহতে পারে। কিন্তু সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে নার্সিংয়ে ডিপ্লোমা করতে কোর্স ফি তে টাকা দিতে হয় না। প্রতি মাসে ভাতা হিসেবে কিছু টাকা পাওয়া যায়।