সন্ধ্যা ৬ঃ৪৫। শীত নিজের শাখা প্রশাখা ভালো বিস্তার করে রেখেছে চারপাশে। তার উপর হাসান সাহেবের কাশি আর শ্বাসের প্রবলেম। হাসান সাহেব অনেক দিন পর তার প্রিয় পাঞ্জাবীটা পড়ে বসে আছেন পার্কে। কারণ টা তাদের পরিবারের কেউ এখন আর বলতে পারে না। শুধু জানত তার মৃত স্ত্রী শাহেলা। হাসান সাহেব এখন আর ‘পরিবার’ শব্দ টা উচ্চারণ করতে পারে না। তার মুখে আসে না। আজ হাসান সাহেব আর তার স্ত্রী শাহেলার ৩৫ তম বিবাহবার্ষিকী। তাই তিনি সখ করে শাহেলার দেয়া পাঞ্জাবীটা পড়েছেন। হাসান সাহেব থাকেন তার বড় ছেলের সাথে। বড় ছেলে করিম। সামর্থ্যের মধ্যে সব কিছু করার চেষ্টা করে। তাই বাবার সাথে কথা বলা তো দূরে ফিরে তাকানোর ও সময় হয় না।
আজ বড় ছেলে করিমের বৌয়ের বাপের বাড়ি থেকে মানুষ আসছে। তাই বড় বৌ ৪০০০ টাকা হাতে ধরিয়ে দিলো। কিন্তু বাজারে যাওয়ার সময় তিনি টাকা গুলো হারিয়ে ফেলেছেন। ভাগ্যের নির্মম সাহায্যের জন্য আজ তিনি বৃদ্ধ হয়ে ও ছোট বাচ্চার মত ভীত। অনেক করে মনে করের চেষ্টা করছেন টাকা গুলো কোথায় পড়ে গেছে বা তিনি কোথায় রেখেছেন? ভাবছেন, ভাবছেন আর এক সময় রাতের নির্মম শীত নিয়ে ঘুমিয়ে গেলেন। পর দিন পত্রিকার এক পাশে ছোট একটা সংবাদ,”গত রাতে প্রচুর শীতে পার্কে শুয়ে থাকা ঘরবাড়ি ছাড়া এক বৃদ্ধ লোক মারা গেছেন। তার পরিচয় এখন ও পাওয়া যায় নি। তার বাম পকেটে ভেতর কায়দা করে রাখা অবস্থায় পাওয়া গেছে ৪০০০ হাজার টাকা। এতে প্রাথমিকভাবে তাকে চোর হিসেবে মনে করছে পুলিশের কর্মকর্তা।” বাকি টা আর জানা হয় নি। জানি না পাগলের গল্পের সেই করিম সাহেবের বাসায় কেউ পত্রিকা পড়ে কিনা?!