সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাইবোনেরা, আজ আমি হাজির হলাম নতুন আরো একটি আর্টিকেল নিয়ে। আশাকরি মনোযোগ সহকারে আর্টিকেলটি পড়বেন এবং নিজের অজ্ঞতাকে দূর করার চেষ্টা করবেন। তাহলে শুরু করা যাক…… মানুষ মহান আল্লাহর সর্বশ্রেষ্ঠ সৃষ্টি। এই সৃষ্টি জগতে মানুষ ব্যতীত যা-কিছু আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন সবকিছুই আমাদের উপকারের জন্যই করেছেন।
আমরা জানি জীব প্রধানত দুই ভাগে বিভক্ত:
তথা – উদ্ভিদ ও প্রাণী।
প্রাণী আবার কয়েকটা প্রজাতিতে বিভক্ত। এর মধ্য থেকে মানুষ হলো সর্বশ্রেষ্ঠ প্রজাতির প্রাণী। বাকি অন্যান্য বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে যা-কিছু পৃথিবীতে আমরা দেখতে পাই এ সবকিছুই আমাদের কোনো না কোনো ভাবে উপকার করে থাকে। আমি আজ এ আর্টিকেলে পৃথিবীতে বিদ্যমান বিভিন্ন পশু পাখির অবদান অর্থাৎ বিভিন্ন পশু পাখি আমাদের জীবনযাত্রার মানকে কিভাবে উন্নত করে এবং কিভাবে আমাদের জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহ করে, এ বিষয়ে তাদের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করব। পাশাপাশি পশু পাখির প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হওয়া উচিত সে বিষয় নিয়েও আলোচনা করার সর্বত্বক চেষ্টা করব।
প্রথমেই একটি উদাহরণ দিয়ে শুরু করা যাক-
আমরা আমাদের গৃহে লালন পালন করি এমন কয়েকটি পশুপাখি যেমন গরু, মহিষ,ছাগল,হাঁস, মুরগি ইত্যাদি, এগুলো আমাদের জীবনযাত্রার মানকে উন্নত করতে এবং জীবন ধারণের প্রয়োজনীয় অনেক উপকরণ সরবরাহ করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। গ্রামাঞ্চলে আমরা প্রায়ই দেখি কৃষক গরু-মহিষ ব্যবহার করে হাল চাষ করে থাকে অর্থাৎ কৃষি পণ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে গরু-মহিষের ব্যবহার গ্রাম অঞ্চলে এখনো অহরহ প্রচলিত রয়েছে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বলা যায় গ্রামাঞ্চলের একজন কৃষক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ ভাবে গৃহপালিত জন্তু তথা গরু-মহিষের উপর নির্ভরশীল।
আমরা কি করি জানেন????
গরু, মহিষ সহজে পোষ মানিয়ে তাদের দিয়ে অসাধ্য অনেক কাজ কৃষকেরা করিয়ে থাকেন। মাঝে মাঝে বহনযোগ্য নয় এমন অনেক ভারী ওজনের বস্তু যখন গরু-মহিষ বহন করতে পারে না, অনেক কৃষক এমন দেখা যায় যে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে নির্বিচারে গরু-মহিষকে আঘাত করে।
এটা করা কখনই উচিত এবং কাম্য নয়। মনে রাখবেন তারা অবলা প্রাণী তারা মুখে কথা বলতে কিন্তু তাদেরও সুখ দুঃখ অনুভব করার ক্ষমতা আছে, তাদেরও ব্যথা পাওয়ার অনুভূতি আছে। শুধু তারা অকাতরে সবকিছু সহ্য করে যায় কিন্তু প্রতিবাদ করতে পারে না, কারণ এই সমস্ত জীব জন্তু আমার আপনার অধীনস্থ করে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন।
এক্ষেত্রে আমার আপনার করনীয় কী কিছুই নাই??
অবশ্যই আছে নিজের বিবেককে জাগ্রত করুন। অবলা এ সমস্ত প্রাণীকে পরিহার করা থেকে বিরত থাকুন। মনে রাখবেন তাদের দ্বারাই আপনার প্রয়োজনীয় কাজ সম্পাদিত হয়। গরু-মহিষের মাংস আমাদের জন্য আমিষ জাতীয় উপাদেয় সুষম খাদ্য। গরু মানুষের চামড়া দিয়ে আমাদের পরিধেয় বিভিন্ন বস্ত্র ও জুতা তৈরি হয়।
তাহলে আমরা বুঝলাম গরু, মহিষ, ভেড়া, ছাগল, উট, দুম্বা এগুলো আমাদের শুধু উপকারই করে না বরং উন্নত জীবনযাপনে সহায়তা করে।
এখন আসুন হিংস্র প্রাণী নিয়ে কিছু আলোচনা করি।
হিংস্র প্রাণীরা শুধু কি ক্ষতিই করে???
আমাদের পরিবেশে অনেক প্রাণী রয়েছে যাদেরকে আমরা হিংস্র প্রাণী নামে জেনে থাকি। যেমন সাপ, বাঘ, সিংহ, কুমির আরো হরেক রকমের। এগুলো কি আমাদের উপকার করে না?? এগুলো কি শুধু ক্ষতিই করে?? অবশ্য এগুলো আমাদের কোনো না কোনো ভাবে উপকার করে। চিকিৎসাবিজ্ঞানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা ক্ষেত্রে সাপের বিষ ব্যবহার করে দুরারোগ্য ব্যাধির ঔষধ তৈরি করা হয়।
অনুরূপভাবে বাঘ-সিংহ বা অন্যান্য হিংস্র প্রাণী জৈব বৈচিত্র্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে । আমাদের দেশেই রয়েছে সুবৃহৎ সুন্দরবন, এই সুন্দরবনের সৌন্দর্য এবং জৈববৈচিত্র রক্ষার্থে বাঘ-সিংহ তথা অন্যান্য হিংস্র প্রাণীর ভূমিকা অস্বীকার করা যায় না।
আমার আপনার করণীয় কী???
জৈব বৈচিত্র্য রক্ষা করার জন্য সমস্ত হিংস্র প্রাণীদেরকে আমাদের রক্ষা করতে হবে। রয়েল বেঙ্গল টাইগার তথা বাঘ আমাদের জাতীয় সম্পদ। আমরা নির্বিচারে বাঘ ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণী হত্যা করব না। মনে রাখবেন তারা কোনো না কোনোভাবে তথা প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে আমার আপনার জীবনের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িত অর্থাৎ তাদের সাহায্য সহযোগিতা ছাড়া আমার আপনার অস্তিত্বও এক সময় বিলীন হয়ে যেতে পারে। সুন্দরবনের বাঘ ও অন্যান্য হিংস্র প্রাণীরা বসবাস না করলে এতদিনে আমাদের সুন্দরবন অরণ্য শূন্য হয়ে যেত। এতে করে বৈশ্বিক উষ্ণতা আরো বৃদ্ধি পেত, যা আমাদের জীবন ধারণের জন্য অত্যন্ত ভয়াবহ ও ক্ষতিকর।
সর্বশেষ কথাঃ
এজন্য আসুন জীবে দয়া করুন, জীবের প্রতি সদয় হোন। তাহলে মহান আল্লাহও আমাদের প্রতি সদয় হবেন। আজ এ পর্যন্তই…….
সুপ্রিয় পাঠক পাঠিকা ভাই ও বোনেরা, আর্টিকেলটি আপনাদের কাছে কেমন লেগেছে তা কমেন্ট বক্সে মতবাদ জানাবেন।
অসংখ্য ধন্যবাদ সবাইকে। ভালো থাকবেন।
আল্লাহ হাফেজ।।।।