চট্টগ্রামেই আমার বড় হওয়া। আর ঢাকায় এসেছি প্রায় ছয় বছর আর তারপর পাঁচ বছর আর ঢাকার বাইরেই যাওয়া হয়নি। সমুদ্রের কাছাকাছি বড় হওয়াতে ছোট বেলা থেকেই নীল সাগর আমাকে টানে। সেই থেকেই একধরনের ভালো লাগা কাজ করে। আমি মনে করি, সমুদ্র আর আকাশ যেখানে মেশে সেটাই আমার গন্তব্য।
পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিবারের সবাই মিলে চলে গেলাম চট্টগ্রাম ডিসেম্বরের ২৭ তারিখ। এরপরের দিনই চলে গেলাম কক্সবাজার। একরাত থেকে কলাতলী আর সুগন্ধা এবং লাবণী পয়েন্টে ঘুরেছি। ওখানেই খেয়েছি আলাদা আলাদা রেস্তোরায়। প্রথমে গিয়েই দুপুরে খেলাম শালিক হোটেলে, তারপর সন্ধ্যার নাস্তা করেছি কলাতলী বিচেই এরপর রাতে লাবণী পয়েন্ট ঘুরে ঢাকা রেস্তোরায় খেয়ে ফিরেছি আবাসিক হোটেলে।
পরেরদিন চট্টগ্রাম চলে আসবো। ভোরে উঠেই সবাই চলে গেলাম সূর্যোদয় আর ভোরের সমুদ্র দেখতে। বেলাভূমি বেশ শান্ত আর নিরিবিলিই ছিলো তখন। বেলা বাড়তেই শহরে ঘুরলাম। বার্মিজ মার্কেট হয়ে চলে গেলাম কক্সবাজার এয়ারপোর্ট দেখতে। এরপর সুগন্ধা বিচে ঘুরে টুকটাক কেনাকাটা করে দুপুরে খেয়ে বাসে চড়ে রওয়ানা দিলাম চট্টগ্রামের উদ্দেশ্যে।
কি কি কিনেছি? ব্রেসলেট, মালা, ফুলের টায়রা, হ্যাট, ব্যাগ আরও কত কি। একটা বার্মিজ চদরও কিনেছি। অনেকগুলো সুন্দর সুন্দর ব্রেসলেট কিনেছি। আচার কিনেছি। আমার সব থেকে পছন্দের হলো হলুদ ফুলের টায়রাটা যেটা আমি খুব সাবধানে নিয়ে এসেছি আর যত্ন করে আলমারিতে তুলে রেখেছি।
পরেরদিনই আবার ঢাকা চলে আসবো। মোট চারদিনের ফ্যামিলি ট্যুর ছিলো। বিকাল পাঁচটার ট্রেন। তাতে কি হয়েছে? সকালে চলে গেলাম পার্কি বিচে ঘুরতে। সেখানে জাহাজ কাটা দেখলাম। নাগরদোলায় চড়েছি। ফুচকা খেলাম। এরপর ফিরে দুপুরে খেয়েই ব্যাগ নিয়ে ছুটলাম ট্রেন স্টেশন।
চারদিনের ট্যুর শেষে সবাই খুশি। এই চারদিনই সমুদ্রে ঘুরেছি। কিভাবে? যেদিন ঢাকা থেকে গেলাম সেদিনই বিকেলে চলে গেছি পতেঙ্গা বিচে। সেখানে বিখ্যাত ছোট পেয়াজু আর মজাদার ফুচকা খেয়েছি। এরপর কক্সবাজার গিয়ে ভাত, ভর্তা, ডাল, কোরাল মাছ, চিংড়ি, মুরগি খেয়েছি। রাতে খেলাম নান আর গ্রিল। পরেরদিন সকালে খেলাম নানরুটি, ভাজি, গরুর কালো ভুনা আর খিচুড়ি। দুপুরে ভর্তা, ভাত, ডাল, মাছ। রাতেও ভাত, মাছ খেয়েছি। কক্সবাজার তো বিভিন্ন সমুদ্র পয়েন্টে ঘুরেছি। এরপর যেদিন ঢাকায় চলে আসবো সেদিন সকালে চলে গেলাম পার্কি বিচে। এই তো হয়ে গেলো চারদিনের সমুদ্র ভ্রমণ।
এইসব জায়গা গুলো আমাদের চেনা। অনেক বছর পর গিয়ে স্মৃতি হাতড়েছি কেবল। ছোটবেলার সেই কত কত স্মৃতি। এছাড়া অনেক দিন পর প্রকৃতির কাছাকাছি গিয়ে দারুণ অনুভূতি হয়েছে। গাড়ির চাপ নেই। জ্যাম নেই। কাজের তাড়া নেই। শুধু আনন্দ আর আনন্দ। যাবার সময় ট্রেনে চট্টগ্রাম। এরপর মাইক্রোতে চড়ে কক্সবাজার। তারপর চট্টগ্রাম আবার ফিরলাম বাসে এবং সবশেষে ট্রেনে চড়ে আবার ব্যস্ত নগরী ঢাকায় ফিরলাম।
এই ছিলো সংক্ষেপে চারদিনের সমুদ্র ভ্রমণ আর ছুটি কাটানোর গল্প। সবাইকে ধন্যবাদ পোস্টটি মনোযোগ সহকারে পড়ার জন্য।