প্রতিবেদন রচনা লেখার নিয়ম – বোর্ডের বিভিন্ন পরীক্ষাসহ প্রতিযোগিতামুলক বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রতিবেদন লিখতে বলা হয়৷ আজকে আলোচনা করতে যাচ্ছি কিভাবে সহজে ও সুন্দরভাবে একটি প্রতিবেদন লিখা যায়।
প্রতিবেদন কথাটির অর্থ হচ্ছে কোনো একটি বিষয় সম্পর্কে তথ্যে ভরপুর একটি বিবরণী বিশেষ। বাংলায় একে প্রতিবাদন বলে এবং ইংরেজিতে রিপোর্ট বলা হয়ে থাকে। পত্রিকায় প্রকাশের জন্য মুলত তথ্যবহুল ও সহজ এবং সাবলীল ভাষায় প্রতিবেদন লেখা হয়। প্রতিবেদন লেখার রয়েছে কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়মাবলি, যেগুলো মেনে কোনো একটি বিষয় সম্পর্কে পাঠকদের সুস্পষ্ট ধারণা দেয়া হয়।
প্রতিবেদন রচনা লেখার নিয়ম – প্রতিবেদনের শ্রেণীবিভাগ ও বৈশষ্ট্যাবলিঃ
বিষয় ও চরিত্রভেদে প্রতিবেদন সব সময় এক রকম হয়না। প্রতিবেদন বিভিন্ন রকমের হতে পারে। যেমনঃ
- কোনো ঘটনা বা দূর্টনাজনিত প্রতিবেদন।
- তদন্তের উপর ভিত্তি করে প্রতিবেদন
- পরিবেশ সম্পর্কে প্রতিবেদন
- খেলাধুলা সংক্রান্ত প্রতিবেদন
- বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিবেদন
- একটি সাক্ষাৎকার সম্পর্কিত প্রতিবেদন
- সম্পাদকীয় বা সংবাদপত্রে কলাম সংক্রান্ত প্রতিবেদন
- সংস্কৃতি, রাজনীতি বা সামাজিক প্রতিবেদন ইত্যাদি।
এখন বিভিন্ন ধরনের চাকরির পরীক্ষা বা প্রতিযোগিতামুলক পরীক্ষায় যে-ধরনের প্রতিবেদন লিখতে বলা হয় সে বিষয়ে একটি সংক্ষিপ্ত রূপ বা ধারণা প্রশ্নপত্রে দিয়ে দেয়া হয়। এবং এই ধারণার উপর নির্ভর করে প্রতিবেদন লিখতে হয়। প্রশ্নপত্রে প্রতিবেদন লেখার জন্য একটি বিষয় উল্লেখ করে দেয়া হয়।
একটি ভালো মানের প্রতিবেদনের বৈশিষ্ট্যঃ
- সংক্ষিপ্ত ও তথ্যপূর্ণ প্রতিবেদন হতে হবে
- সম্পূর্ণ প্রতিবেদনের তথ্যগুলো হবে বিশুদ্ধ, নির্ভুল বানান এবং সহজ সরল ভাষায়
- বিষয়ের উপর নির্ভর করে প্রতিবেদনে একটি শিরোনাম উল্লেখ থাকবে
- শিরোনামটি কৌতুহলোদ্দীপক ও আকর্ষণীয় হতে হবে যাতে প্রতিবেদনটি পড়তে ইচ্ছে করে।
- প্রতিবেদনের মুল বিষয়বস্তু ও শিরোনামের মধ্যে অবশ্যই মিল থাকতে হবে।
- প্রতিবেদনে ভবিষ্যৎবাণী দেয়া অনুচিত।
গঠনগতভাবে প্রতিবেদনটি যেমন হবেঃ
প্রতিবেদনের গঠন হচ্ছে অন্যতম একটি প্রধান বিষয়। গঠনগত সৌন্দর্য ছাড়া প্রতিবেদন আকর্ষণীয় হয়না। তাই সুনির্দিষ্ট কিছু নিয়ম মেনে প্রতিবেদনকে একটি গাঠনিক রূপ দিতে হয়। নিম্নে প্রতিবেদনের গঠন নিয়ে আলোচনা করা হলো।
যেসব আবশ্যিক বিষয় প্রতিবেদনে থাকতে হবেঃ
- একটি শিরোনাম
- প্রতিবেদনকারীর নাম
- স্থানের উল্লেখ
- প্রতিবেদনের তারিখ
এই চারটি বিষয় হচ্ছে একটি প্রতিবেদনের আবশ্যিক বিষয়। এগুলো লিখতে আবার কিছু সুনির্দিষ্ট নিয়ম মানতে হয়। নিচে এই চারটি বিষয়ের সম্পর্কে জেনে নেয়া যাক।
একটি প্রতিবেদনের সবচেয়ে তাৎপর্য ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে এর শিরোনাম। এমনভাবে শিরোনাম লিখতে হবে যেনো পাঠক শিরোনামটি পড়ে পুরো প্রতিবেদনটি পড়ার আগ্রহ পায়। শিরোনাম হচ্ছে প্রতিবেদনের দরজাস্বরুপ। তাই পাঠকরা যেনো পুরো প্রতিবেদন পড়ার আগেই শিরোনাম দেখে যথেষ্ট আকৃষ্ট হয়ে সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে৷
২. প্রতিবেদনকারীর নাম একটি জরুরি অংশ। যদি সংবাদপত্র পড়ে থাকেন তাহলে দেখতে পাবেন সেখানে প্রতিবেদনকারীর নাম উল্লেখ রয়েছে অথবা নিজস্ব প্রতিবেদক বলে উল্লেখ করা আছে৷
৩. প্রতিবেদন করার একটি ঠিকানা বা স্থান রয়েছে। অর্থাৎ যে স্থান থেকে প্রতিবেদন করা হয় বা ঘটনাস্থলের নাম প্রতিবেদনে উল্লেখ করতে হয়।
৪. প্রতিবেদনের তারিখ অবশ্যই উল্লেখ করতে হয়। তারিখ লেখার সময় বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়। প্রতিবেদনের তারিখ বাংলায় উল্লেখ করতে হবে৷ বিভিন্নভাবে তারিখ লেখা যায়। নিচের উদাহরণগুলো খেয়াল করুনঃ
যেমন-
৫ই জুন ২০২০৫
জুন ২০২০
- ৫ই জুন ২০২২
- ৫ জুন ২০২২
তারিখ লেখার পর কোলন চিহ্ন (ঃ) ব্যাবহার করে প্রতিবেদন লেখা শুরু করা হয়ে থাকে।