প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লিলাভূূমি আমাদের দেশ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলা। বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকাগুলো এমনিতে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের আধার। তবে খাগড়াছড়ি জেলার রামগড় উপজেলার সৌন্দর্য যেন পূণ্য মাত্রা পেয়েছে।
পাহাড়, ঝর্ণা, অরন্য কুটির,রাবার বাগান,রামগড় ঝুলন্ত ব্রিজ,রামগড় চা-বাগান সবকিছু মিলে তৈরি করেছে প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লিলাভূমি। পাহাড়ি সৌন্দর্যের পাশাপাশি পাহাড়ি মানুষের বৈচিত্র্যময় জীবন,তাদের সংস্কৃতি ও বেঁচে থাাকার আনন্দ তৈরি করবে।
রামগড় উপজেলার আয়তন ২৪০.৮৭ বর্গ কিলোমিটার। এর অবস্থান: এর সিমানা উওরে ভারত ত্রিপুরা রাজ্য ও মাটি রাঙ্গা উপজেলা দক্ষিণে মানিকছড়ি, পূর্ব মহাল ছড়ি ও পশ্চিমে ফটিকছড়ি। এখানে রয়েছে মুসলিম,, হিন্দু, বৌদ্ধ,খ্রিস্টান সহ অনন্য ধর্মের মানুষরা।রয়েছে ত্রিপুরা, মারমা,চাকমা জনগোষ্ঠীর বসবাস।
রামগড় উপজেলায় যা যা দেখতে পাবেন:
রামগড় লেক
রামগড় চা-বাগান
রামগড় রাবার বাগান
রামগড় অরন্য কুটির
কলসির মুখ
ছোট ছোট পাহাড়
রয়েছে বাংলাদেশের ও ভারতের একমাত্র মৈত্রী সেতু -০১
রামগড় থেকে ৪০ মিনিটে রাস্ত মোটর সাইকেলে নাকাপা দুঃসাহসিক পাহাড়ি পথ যেখানে বাংলাদেশের একমাত্র উৎপত্তি এবং বাংলাদেশের শেষ হালদা নদী উৎপত্তিস্থল।
রয়েছে ব্রাজিলের গহীন আমাজন বনের মতো রামগড় থেকে বৈদ্যপাড়া যাওয়ার রাস্তা
এই রামগড় হলো সুবিশাল এক সাফারি পার্কের মতো।।
যা কোন মানুষ কে করবে মনোমুগ্ধকর।
ইতিহাসের রামগড়
অসংখ্য পাহা,, ঝর্ণা, অপরূপ সৌন্দর্য্যের লিলাভূমি খাগড়াছড়ি। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে খাগড়াছড়ি জেলা ছিল না। রামগড় তথা মহকুমার অন্তর্ভুক্ত ছিল খাগড়াছড়ি। সময়ের নানান পরিবর্তনের খাগড়াছড়ি জেলা হয় আর রামগড় হয় জেলার অন্তর্ভুক্ত একটি উপজেলা।সীমা বর্তী এই উপজেলাতে সর্ব প্রথম জন্ম লাভ করে বাংলাদেশ রাইফেলস (বিডিআর) যা বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি)নামে পরিচিত।যেটি ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কৃতক ১৭৯৪ সালে গঠিত ফ্রন্টিয়ার প্রটেকশন ফোর্স এর নাম পরিবর্তন করে ১৭৯৫ সালে ২৯ জুন রামগড় লোকাল ব্যাটালিয়ন রাখা হয়।যা বর্তমানে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড।
৪৪৮ জন সদস্য নিয়ে ২ টি অনিয়মিত অশ্বারোহী দল নিয়ে ও ০৪টি কামান নিয়ে এ বাহিনীর পদযাত্রা। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে রামগড় রয়েছে আরও বড় সাক্ষী হয়ে । হাজার 1971 সালের 8 ডিসেম্বর পাক হানাদার মুক্ত হয় 1 নং সেক্টরের এ রামগড় মহাকুমার।। 1971 সালের 25 শে মার্চের কালো রাত্রিতে পাক হানাদার বাহিনী যখন নিরস্ত্র বাঙালিদের উপর ঝাপিয়ে পড়ে৷ তখন তার প্রতিরোধে ২৬শে মার্চ থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামে এই প্রাচীন জনপদের দামাল ছেলেরা সশস্ত্র সংগ্রাম শুরু করে।
এই রামগড়ের মধ্যে দিয়ে দেশের বিভিন্ন এলাকায় মুক্তিযোদ্ধা রা ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যে গিয়ে সেখানকার বিভিন্ন ক্যাম্পে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তি যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করে।।মিএ বাহিনীর বিমান হামলাম ০৬ ডিসেম্বর রামগড় পাক৷ বাহিনীর অস্ত্র গুদামে ধ্বংস হয়ে যায়। ফলে ০৮ ডিসেম্বর রামগড় হানাদার মুক্ত হয়।এভাবে রামগড় বাসী পেয়ে যায় আজকের এই নয়ানাভিরাম পাহাড়ি জনপদ রামগড়। সবমিলিয়ে রামগড় একটি প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি।