Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

পড়া ভুলে যাওয়া এখন আমাদের কাছে একটি বিরক্তিকর ও কষ্টের বিষয় হয়ে দাড়িয়েছে ,তাই শিক্ষার্থী বন্ধুদের উদ্দেশ্যে – ” পড়া মনে রাখার সহজ ও কার্যকর কিছু বৈজ্ঞানিক উপায়।”

আসসালামু আলাইকুম সবাইকে। আজকে একটা নতুন বিষয় নিয়ে আবারো উপস্থিত হলাম। তাহলে কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক। পড়ার কোনো শেষ নেই, পড়াশোনা আমাদের সবাইকেই কম বা বেশি করতে হয়। এক্ষেত্রে আমাদের যে জিনিসটা সবচেয়ে বেশি বিরক্ত করে সেটি হলো-“পড়া মনে রাখতে পারি না”। কি তাই তো? আজ এই বিষয়ে কিছু চমৎকার মতামত সবার সাথে ষেয়ার করতে চাই।

২০১৬ সালে কয়েকজন ব্রিটিশ বিজ্ঞানীরা আমাদের মেমোরি নিয়ে একটা বড় রকমের গবেষণা করে। এই গবেষণায় লক্ষ করা যায় যে বিষয়গুলো তা আমাদের সবার পড়ার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে সেগুলো হলো- একজন যদি টানা ৬০ মিনিট বা ১ ঘণ্টা পরে তবে সে-

১ম ১০ মিনিতে ২৭ লাইন, ২য় ১০ মিনিটে ২১ লাইন, ৩য় বারে ১৩, ৪র্থ বারে ৪ লাইন, ৫ম বারে ৬ ও ৬ষ্ঠ বারে অর্থাৎ ৬০ মিনিটের শেষ ১০ মিনিটে ৪ লাইন পড়তে পারে। সুতরাং এভাবে যে পড়ে সে মোট ৭৮ থেকে ৮০ লাইন মনে রাখতে পারে। অপরদিকে যে টানা ৬০ মিনিটে ১০ মিনিট পরে ৫ মিনিট রেস্ট নিয়ে পরে সে ১০৬ থেকে ১০৮ লাইন পড়ে মনে রাখতে পারে।

  • আমরা যখন পরি তখন আমরা সেই পড়াটাকে আমদের ব্রাইনের ইনবক্সে ঢুকানোর চেষ্টা করি। আর আমাদের সেই ব্রেইনের ইনবক্সের নাম হলো-“ hippocampus “ । আমাদের ব্রেইনের ইনবক্সে পড়া সহজে ঢুকানোর জন্য ৩ টা জিনিস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেগুলো হলো-
  1. ঘুমঃ ঘুম আমাদদের পড়াটাকে লং টার্ম মেমোরি সেন্টার থেকে সর্ট টের্ম মেমোরি সেন্টার এ নিয়ে যায়। এজন্য আমাদের দৈনিক ৭ ঘণ্টা ঘুমানো প্রয়োজন। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে জানতে পারে এই ঘুমানোর জন্য উত্তম সময় হলো রাত ৯ টা থেকে ৩টা অথবা সাড়ে ৩ টা। যা কিছুটা আমাদের রাসুল (সা.) এর সুন্নতের মতো।
  2. খাবারঃ বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে দেখেন যে কিছু পুষ্টিকর খাবার আমাদের পড়া মনে রাখার ক্ষেত্রে অনেক গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে। বিজ্ঞানীরা গবেষণা করে ২টি খাবারকে সবচেয়ে পুষ্টিকর হিসেবে গণ্য করেছেন। সেই ২টি খাবার হলো- ক) লাউ ও খ) মধু। এটাও তো কিন্তু আমাদের রাসুল (সা.) এর পছন্দের ২টি খাবার।
  3. রক্ত সঞ্চালনঃ নামায যে কত উপকারী তা আমরা বিজ্ঞানীদের গবেষনা থেকেই স্পষ্ট ধারনা পেতে পারি। নামায পড়ার সময় আমাদের মনটা শান্ত থাকে যার কারণে রক্ত সঞ্চালনটা স্বাভাবিক থাকে তাই আমরা প্রতিনিয়ত নামায পড়ার চেষ্টা করব। এছাড়াও নামাযের আগে যে আমরা ওযু করি তখন তো আমরা আমাদের ঘাড়ে পানি দিয়ে মাসেহ করে থাকি, সেটা আমাদের পড়ার সময় যে স্পাইনাল নার্ভটা কাজ করে তার রক্ত সঞ্চালনটা মসৃণ করে।
  • আমরা কঠিন পড়া বেশিরভাগই মনে রাখতে পারি না, তাই এর সমাধান হলো- প্রতিটি বিষয় পড়ার সময় তার মাঝে ৫ মিনিট করে ব্রেক দিয়ে একটু চোখ বন্ধ করে রেস্ট নিয়ে না হলে ঘুমিয়ে নিয়ে পড়তে হবে। এর কারণ উপরে ঘুমের বিষয় নিয়ে আলোচনা করার সময় বলা হয়েছিলো।
  • আমরা কোনো কঠিন পড়া মনে রাখার জন্য সবসময় পড়াটা মুখস্ত করি, কিন্তু বিজ্ঞানীরা পরীক্ষা করে একটা মজার বিষয় সম্পর্কে ধারণা লাভ করে আর সেটি হলো- আমরা কোনো কঠিন পড়া মনে রাখার জন্য মুখস্ত করে পড়ার চেয়ে বুঝে পড়লে পড়ার গতি ৯ গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়।
  • এছাড়াও আমরা যেখানে পড়ি সেই যায়গা থেকে যদি গাছপালা দেখা যায় তাহলে পড়ার গতি ২.৫ থেকে ৩ গুণ পর্যন্ত বেড়ে যায়।

অন্যদিকে “হার্বার্ট এভিংগাস” নামক এক বিজ্ঞানী পড়া মনে না থাকার উপরে গবেষনা করে সেটিকে একটি গ্রাফ এর মধ্যে কার্ভ আকারে উপস্থাপন করেন যা “এভিংগাস ফরগেটিং কার্ভ” নামে পরিচিত। তিনি দেখলেন আমরা যখন পড়ি তার,

১ঘণ্টা পর পড়ার প্রায় – ৪৪%

১দিন পর পড়ার প্রায় – ৩০%

১ সপ্তাহ পর পড়ার প্রায় – ২০% মনে থাকে।

অর্থাৎ ১ সপ্তাহ পর  আমরা সেই পড়ার প্রায় ৮০% ভুলে যায়। তখন এভিংগাস কে এর থেকে পরিত্রাণের উপায় সম্পর্কে জানতে চেলে তিনি বলেন- আমরা একটা বিষয় পড়ে শেষ করে স্বভাবতই অন্য বিষই ধরি অর্থাৎ সেই বিষটি শুধু একবার পড়ে আর ধরি না,কিন্তু তার পরই আমাদের উচিত সেঈ বিষয়টি আরেকবার পড়া। একটি উদাহরণ দিয়ে বুঝা যাক-

৭ টা থেকে ৭ঃ৪০ পর্যন্ত- বাংলা

৮ টা থেকে ৮ঃ৪০ পর্যন্ত- ইংরেজি

৯ টা থেকে ৯ঃ৪০ পর্যন্ত- বাংলা

১০ টা থেকে ১০ঃ৪০ পর্যন্ত- গণিত

১১ টা থেকে ১১ঃ৪০ পর্যন্ত- ইংরেজি……

অর্থাৎ ঘুরেফিরে একটা পড়া বারবার রিবিশন করা এবং অবশ্যই অবশ্যই পড়ার মাঝখানে বিরতি দিয়ে পড়তে হবে।

এতেই শেষ না, ২ শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নির্বাচন করা হলে এদের মদ্যে এক শ্রেণি হলো তারা, যারা হাসি-খিশি থাকে না, সবসময় নেগেটিভ চিন্তা করে এবং আরেক দল তারা যারা হাসি-খুশি থাকে, চিন্তা ভাবনায় পজিটিভ তাদের মধ্যে আলোচ্য শেষের হাসি-খুশি শ্রেণির শিক্ষার্থীরায় পড়াশোনায় সাধারণত ভালো হয়।

আর হ্যা, অবশ্যই আমরা পড়ার সময় লিখে পড়ব, এতে করে আমাদের রেটিকুলার এক্টিভিটি সিস্টেম আমাদের পড়া মনে রাখার গতি বাড়িয়ে দেয়।

“ইনশাল্লাহ” আগামীতে এমন আরও নতুন  নতুন বিষয় নিয়ে উপস্থিত হব সকলের সামনে।

সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।

ধন্যবাদ।

Related Posts

2 Comments

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No