হাজার বন্ধুর চেয়েও উত্তম একটা ভালো মানের বই । আমরা আজকাল বই একেবারে-ই পড়িনা। একসময় আমরা নাওয়া-খাওয়া ভুলে যেতাম। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা লাইব্রেরী থেকে বই এনে পড়ার জন্য ঝগড়া হতো। হতো কতো তুলকালাম। কখনো কখনো আঁড়ি পাতাতাম বন্ধুদের সাথেও! শেয়ার করেতাম। আমরা লাইব্রেরী গড়ে তুলতাম ঘরে-ঘরে , পাড়া-মহল্লায়। । আমরা একটি বই ছিলো রাশিয়ান পেরোস্ত্রাইকা নামে যা আমার খুব প্রিয়। বইটি যে কতো খাবে পড়েছি বিছানায় শুয়ে-শুয়ে, বটগাছের কোলে হেলান দিযে, নৗকোর পাটাতনে বসে কিংবা দোর খেতে-থেতে। কয়েক পাতা পড়ার পরই রাজ্যের সমস্ত ঘুম এসে যেতো আমার দুচোখে। আপনা আপনি দুচোখজুড়ে ঘুম আসতো বলে বইটির নাম দিয়েছিলাম ঘুম পাড়ানি বই।
আমরা যখন ক্রামে থাকতাম কতো কি সংসগ্রহে রাখতাম। বইয়ে লাইব্রেতি বানিয়ে ফেলতাম। পাঠ্য বইয়ের পাশাপাশি অনেক বই রাখা হতো বাংলা সাহিত্য ঐতিহ্য ও কৃষ্টি-কালচার রক্ষা করার জন্য। আর পাড়া-মহল্লায়তো সারা মাস-বছর জুড়ে একটি বই পড়পর উল্লাসে মেতে উঠতাম। বাংলার বার মাসের চিত্রপট নিয়ে দেয়াল পত্রিকা গড়তাম বিভিন্ন ক্লাবের নিয়মিত কার্যক্রম হিসেবে আমর া লিখতাম। ৗশল্পিকভাবে রিকতাম দেয়াল্ । একুশে বইমেলায় পড়েই থাকতাম বিশেষ করে বাংলা অ্যাকাডেমির । আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় থাকতাম গ্রন্থমেলা ফ্রেব্রুয়ারি মসের আগমনে। এবং লেখক – প্রকাশকরা প্রতিযোগিতা করে বই ছাপাতো।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে আমাদের সাথে আর ছাপানো কোন বই থাকেনা। এখন ভার্চুয়াল জগতের মানুষ আমরা্ প্রযুক্তি আমাদের প্রকৃতিকে করেছে অদ্রশ্যমান অন্ধকারে আর অর্থের অভাবে প্রযুক্তি হয়ে আছে দূসাধ্য। জ্ঞান-বিজ্ঞান এখন মোবাইল ইন্টারনেটে। একটি স্মার্ট ফোন-ই যথেষ্ট। রাজ্যের মোবাইল থেকে যে রেডিয়েশান বিস্ফোরিত হয়ে আমাদের স্বাস্থ্য সমস্যা হচ্ছে সেদিকে কোন ভ্রুক্ষেপ করছিনা। লেখক- প্রকাশকরাও এখন বই ছাপানোতে উৎসাহ হারিয়ে ফেলছে। আমরা সব লেখক শ্রেণির সাধারণ মানুষরা এখন আন যেতে পারিনা নিজ শরীরে। লিখছি মনের আনন্দে আমরা অনলাইন ব্লগ, পত্রপত্রিকা, ফেইসবুকে । ঢাকা শহরের বাংলা বাজার, নীলক্ষেত, নিউমার্কেটের বই পাড়া এখন বড্ডো নিস্তব্ধ, খুব শান্ত।
আমাদের আগামি প্রজম্মকে পরিপূর্ণভাবে মানুষের মতো মানুষ করতে হলে হাতের স্মার্ট/আই ফোন বা ল্যাপটপ/ট্যাব খানাটিকে তুলে নিয়ে ভালোমানের বই ধরিয়ে দিতে হবে। নইলে তাদের মধ্যে কখনো মনুষত্যের বিকাশ ঘটানো সম্ভব হবেনা। আসুন আমরা সবাই মিলে আমাদের সন্তানদের বেই পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। তাদেরকে বাংলা সামাজিক সংস্কৃতির আদলে কৃষ্টি-কালচার তৈরি তে সহযোগিতা করতে হবে।