মানুষ তো স্বাভাবিকভাবেই নিজের স্বার্থ আগে দেখে। এতে করে অন্যের কি আসে যায়, সেটা তাদের বিবেচনায় আসে স্বার্থ হাসিলের পর। বনভূমি ধবংস হচ্ছে তাদের কারণে। কিন্তু, কেউ হয়তো জানেনা এর পেছনে সবচেয়ে বড় হাত রয়েছে সেই বন্যপ্রাণীরই! যারা একটু ভালো থাকা আর খাওয়ার জন্যে নিজের প্রতিবেশীদের নিলামে তুলে…
(এ গল্পের প্রথম পর্ব পড়ুন 👉 পর্ব – ১ )
(এ গল্পের দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন 👉 পর্ব – ২ )
(এ গল্পের তৃতীয় পর্ব পড়ুন 👉 পর্ব – ৩ )
হঠাৎ আকাশ থেকে কতগুলো তীরের মতো জিনিস হাতিদের পিঠে বিঁধে যায়। আর তারা কিছুক্ষণের মধ্যেই অজ্ঞান হয়ে পড়ে।
বাচ্চা হাতিরা কান্না করছে তাদের বাবা-মায়ের ওই অবস্থা দেখে। সবাই নিস্তব্ধ; গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন হয়ে আছে প্রতিটা হাতি। একটু পর বন্দুকধারী কতগুলো মানুষের উদ্ভব হয় গাছের আড়াল থেকে। কতগুলো বড় বড় গাড়ি চলে আসে সেখানে। তারা হাতিগুলোকে গাড়িগুলোতে তুলে নেয়।
এবার বকটা বের হয়ে এলো আড়াল থেকে।
মানুষগুলোর সাথে তার ডিল হয়েছিলো, কয়েকটা বন্যপ্রাণীর সন্ধান দিতে পারলে বিনিময়ে তারা বককে দশ কেজি ছোট মাছ দেবে।
তাই বকটি এবার মানুষদের আশেপাশে ঘুরঘুর করতে লাগলো উপঢৌকনের জন্য। একটা লোক সেটা লক্ষ্য করলো। সে বকের দিকে একটা পলেথিন ছুঁড়ে দিলো।
বক সেটিতে অনেকগুলো ছোট মাছ দেখতে পেলো। অতঃপর মাছগুলো উঠিয়ে নিয়ে যাবে বলে উড়াল দিচ্ছিলো, এমন সময় খেয়াল করলো যে সে উড়তে পারছেনা! তার পা দু’টো আঁটকে গেছে পলেথিনের সাথে! পেছন থেকে লোকটা হো হো করে হেসে উঠলো..
“তুই ওজনে ভালো আছস, বাজারে ভালো দামে বেচা যাবে তোরে..”
বকটা বুঝতে পারলো তার আর রক্ষে নেই। বদমায়েশগুলা চালাকি করে তাকেও ধরে ফেলেছে। এখন মরণ নিশ্চিত….
এই লেখাটি বস্তুতঃ সমাজের কিছু অসাধু লোকদের উদ্দেশ্য করে লিখেছি। তারা টাকা, সম্পত্তি, যশ আর খ্যাতির পেছনে সব বিলিয়ে দেয়। তারা পায়ের নিচের মাটিটাও তুলে দেয় অন্যের হাতে। বিনিময়ে তারা কিছু ভূয়া সম্পত্তির মালিক হয়; যেগুলো দিয়ে তাদেরকে লোভ লাগিয়ে অনেক বড় কিছু হাছিল করে নেয় অন্যরা। গল্পের সেই স্যুট বুট পরা মানুষগুলো এর একটি উদাহরণ…
এদিকে ফলাফলের খাতায় নিজের নামটিও লেখাতে পারেনা তাদের কেউ। দেশের ক্ষতি, দশের ক্ষতি করে শেষে নিজেদেরকেও গোলাম হয়ে যেতে হয় অন্যের জন্য।
গল্পের হায়েনাদের দল ও সেই বকটার মতো অনেক বকধার্মিক লোক এখনো রয়ে গেছে আমাদের দেশে…
আর সেই অসাধুদের জালে পড়ে নষ্ট হয় অনেকগুলো সম্ভাবনাময় মানুষ, যারা সত্যিই দেশের জন্য ভালো কিছু চেয়েছিলো। তারা তাদের পরিবারকেও উৎসর্গ করে দেয় দেশের জন্য। গল্পের হাতি ও তার চিন্তাভাবনাই হচ্ছে সেরকম কিছু লোকদের উদাহরণ।
আরেকটি বিষয় এ গল্পে লক্ষণীয়, সেটা হচ্ছে মুরুব্বিদের কথা মানতে হবে। যারা বয়োজ্যেষ্ঠ রয়েছেন, তাঁদের দেখানো পথ ও দিক নির্দেশনাগুলো পাত্তা না দিয়ে একগুঁয়েমি করলে কখনোই সফল হওয়া যায়না। উল্টা হারাতে হয় নিজেকেই। গল্পের সিংহরাজ এবং বাঁদর হচ্ছে সেরকমই কিছু বয়োজ্যেষ্ঠ লোকেদের উদাহরণ…
গল্পটির সবগুলো পর্ব পড়ে আদতেই আপনার কেমন লেগেছে, কমেন্টে জানিয়ে দিন….
আপনার মতাতের অপেক্ষায় রয়েছি….