বন্ধুত্ব হল একটি সম্পর্ক। দুটি মানুষের মধ্যে একটি পারস্পরিক সম্পর্কের নামই বন্ধুত্ব।
আমরা প্রায়ই নিজেরা নিজেদের প্রশ্ন করে থাকি এই বলে যে বন্ধুত্ব আসলে কি? এবং ইন্টারনেটে এটা লিখে সার্চ ও দিই, একে অপরকে জিজ্ঞেস করে এবং উত্তরে আমরা যা পাই তাতে কেউ কেউ সন্তুষ্ট থাকি আবার কেউ কেউ সন্তুষ্ট হতে পারি না। আসলে বন্ধুত্ব হল এমন একটি সম্পর্ক যেটিকে কখনো শাব্দিক সংজ্ঞার মাধ্যমে প্রকাশ করা সম্ভব নয়। এটা একটা অনুভূতির নাম। যেটা জীবনের একটা অবিচ্ছেদ্য অংশ।
বন্ধুত্বের মানে একেক জনের কাছে একেক রকম কারো কাছে বন্ধুত্ব মানে দুটি হৃদয়ের মেলবন্ধন! আবার কারো কাছে বন্ধুত্ব মানে একত্রিত হয়ে কিছু সময় কাটানো! আবার কারো কারো কাছে বন্ধুত্ব মানে এমন একটি অনুভূতির নাম যার স্পর্শে তার জীবন সুরভিত হয়!
সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান এবং সামাজিক নৃতত্ত্ববিদ্যায় বন্ধুত্বের সংজ্ঞা সম্পূর্ণ ভিন্ন ভিন্ন। বন্ধুত্বের সবচেয়ে সফল আলোচনা হয় সাহিত্যে। সাহিত্য মানুষের মন নিয়ে আলোচনা করে সাহিত্যকে নদীর সাথে তুলনা করা হয়। নদীর ঢেউয়ের মতো সাহিত্যে মানুষের মনের সমস্ত উপাদান প্রবাহিত হয়।
সাহিত্যের ভাষায় বন্ধুত্ব হলো দুটি মানুষের মধ্যে আত্মিক বন্ধন। এই আত্মার বন্ধন তৈরি হয় একজনের সাথে আরেকজনের হৃদ্ধতার মাধ্যমে। তাই বন্ধুত্ব মানেই নির্ভরতা বিশ্বস্ততা এবং মন খুলে প্রাণের কথা বলা
বন্ধু কে
আমরা অনেক অনেক সময় দন্দে পড়ে যায়। কে আমাদের বন্ধু এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে! আমরা হিমশিম খাই সত্যিকারের বন্ধুর খোঁজ করি। চলুন জেনে নেয়া যাক কে আপনার সত্যিকারের বন্ধু।
যে মানুষটার সাথে থাকতে আপনি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন; যে মানুষটার সাথে আপনার সময় কাটাতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে; যার হাত ধরে আপনি মনের সমস্ত দুঃখ বেদনা ভুলে থাকতে পারেন; যে মানুষটার হাসি আপনার সব সময় হৃদয় কাড়ে যে মানুষটা আপনার অজান্তেই চোখের অশ্রু মুছে দিয়ে মুক্ত ঝরা হাসি উপহার দেয়। কার সাথে রেল লাইনের পথ ধরে হাঁটতে ভালো লাগে; যার হাতের কানটানা আপনার খুব প্রিয়; যে প্রিয় মুখ খানা আপনি সবসময় মিস করেন; বৃষ্টির দিনগুলোতে আপনি যাকে ভাবেন যাকে নিয়ে আপনি স্বপ্ন দেখেন; রূপকথার স্বপ্নীল দুনিয়ায় পাড়ি জমাতে চান, সেই আপনার বন্ধু!!! সে ই আপনার চিরচেনা আপনজন!
আপনি যদি বন্ধুত্বের সংজ্ঞা জানেন তাহলে আপনি বন্ধু চিনতে ভুল করবেন না। যদি বন্ধুত্বের সংজ্ঞা জানেন, সত্যিকারের বন্ধুকে কখনো পর ভাববেন না। কখনো দূরে ঠেলে দিবেন না। কখনো নিজে থেকে দূরে সরে যাবেন না। যদি উপলব্ধি করতে পারেন সত্যিকারের বন্ধুকে। যদি বন্ধুকে নিয়ে লিখতে পারেন দুলাইন কবিতা! যদি বলতে পারেন মনের গভীরে জমে থাকা এমন কথা আর কখনো কাউকে বলার সুযোগটুকু হয়নি। তাহলে আপনি সুখ টুকু পেয়ে যাবেন।
বন্ধুত্ব নিয়ে যার ভালোবাসা আবেগ যেমন বন্ধুত্বের সংজ্ঞা তার কাছে ঠিক তেমনই। তাই ব্যক্তিবিশেষে বন্ধুত্বের সংজ্ঞা একেকজনের কাছে একেক রকম। আমি বন্ধুত্বকে যেরকম ভাবি, যেমনটা মনে করি। আপনি বন্ধুত্বকে ঠিক উল্টোটা ও মনে করতে পারেন। আপনার ভাবনার সাথে আমার আবেগের মিল নাও থাকতে পারে।তাই কখনও বন্ধুত্বের পরিপূর্ণ সংজ্ঞা হয় না। বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা এসব জিনিসের পরিপূর্ণ সংখ্যা আসলে থাকে না। কিন্তু কিছু সাধারণ বিষয়, কিছু আশা, কিছু আবেগ, কিছু ভালোবাসা সব সময় অভিন্ন থাকে।
বন্ধুত্বের এই সংজ্ঞা, বন্ধুত্ব নিয়ে আমাদের আবেগ, বন্ধুত্ব নিয়ে আমাদের ভালোবাসা সবকিছু প্রকাশ পায় আমাদের লেখায়, আমাদের গানে, আমাদের ভাষায়। আমরা বন্ধু ও বন্ধুত্ব নিয়ে বেঁচে থাকতে চাই, তাই কখনো কখনো আমরা বলি বন্ধুত্ব বেঁচে থাক আজীবন!
বন্ধু হয়ে ওঠে আমাদের জীবনের সবচেয়ে বড় ভরসা। আমাদের ব্যস্ত সমস্ত জীবনে খুইয়ে ফেলা আশা, আকাঙ্ক্ষা এবং ভালোবাসার প্রতীক। তাই বন্ধুত্ব নিয়ে আমাদের এই অনুভূতি বিভিন্ন গান ও কবিতায় প্রকাশ পায় তেমনি একটি গান হলো:
” হাল ছেড়োনা বন্ধু বরং কন্ঠ ছাড়ো জোরে,
তোমার আমার দেখা হবে অন্যদিনের ভোরে ! “
বন্ধুরা সবাই ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।
করোনা প্রতিরোধে
পরিবার পরিজন নিয়ে সচেতন থাকুন।
ভালো লাগলে ঘুরে আসবেন আমার ছোট্ট এই সাইট থেকে।