করোনাভাইরাসের প্রভাব বিস্তার পেতে শুরু করার সাথে সাথেই বহু প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের ঘরে বসে কাজ করার নির্দেশনা দিয়ে দিয়েছে। এতে করে প্রাতিষ্ঠানিক সকল ধরনের কাজ চালু থাকলেও, সুরক্ষিত থাকবে সকলে। কিন্তু ঘরে বসে আট-দশ ঘন্টা কাজ করার সাথে অফিসে নিজের পরিচিত কাজের কাজের স্থানে, পরিচিত পরিবেশে ও সহকর্মীদের সাথে কাজ করার মাঝে বেশ বড় ধরনের পার্থক্য রয়েছে।
ঘরের আরামদায়ক পরিবেশের মাঝে মনোযোগ দিয়ে কাজ করা সমস্যা হয়ে ওঠে অনেকের জন্যই। ভাবতেই পারেন, বাসায় পরিবারের মানুষের সাথে থেকে কাজ করার মত সুবিধা পেলে কাজের গতি বেড়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু বিষয়টি সবার উপর সমানভাবে প্রভাব তৈরি করে না। এছাড়া একই বাসায়, ঘরে দিনের পর দিন সময় কাটানোর ফলে মানসিক অস্থিরতা, বিরক্তিবোধ ও একঘেয়েমি জেঁকে বসে। যা কাজের গতিকে স্লথ করে দেয়।
এ সময়ে যে কাজগুলো আপনার কাজের গতিকে ধরে রাখতে, মনোযোগ নষ্ট হতে বাধা দিবে সেগুলো সম্পর্কে জেনে নিন।
নিজের মত কাজের পরিবেশ তৈরি করুন
সোফায় টিভির সামনে আরাম করে বসে যদি ল্যাপটপে কাজ নিয়ে বসেন, তবে কাজ করতে ইচ্ছা না হওয়াটাই স্বাভাবিক। এমনটা না করে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময় নিয়ে কাজ করার জন্য বেছে নিতে হবে একটি নির্দিষ্ট স্থানকে। যেখানে বসে বাড়ির অন্য সদস্যদের থেকে কিছুটা আলাদা থেকে কাজ করা সম্ভব হবে।
সহকর্মীদের সাথে যোগাযোগ রাখুন
বেশিরভাগ অফিসিয়াল কাজ ই-মেইল ও ম্যাসেজ আদানপ্রদানের মাধ্যমেই সম্পন্ন করা যায়। যে কারণে আলাদাভাবে সহকর্মীদের কথা বলা হয় না। কিন্তু এটাই করা প্রয়োজন এ সময়ে। ভয়েস কল কিংবা ভিডিও কলের মাধ্যমে সহকর্মীদের সাথে কথা বলুন, কুশল বিনিময় করুন, তাদের কাজের অবস্থা সম্পর্কে আপডেট নিন। এতে করে কাজের আবহাওয়া তৈরি হবে পরস্পরের মাঝে এবং কাজ করার প্রতি মনোযোগ আসবে।
জোর করে কাজ নয়
দুই-তিন ঘন্টা টানা কাজ করার পর স্বাভাবিক নিয়মেই মন বিক্ষিপ্ত হবে, কাজ করতে ইচ্ছা হবে না। এ সময়ে জোর করে একই জায়গায় বসে না থাকে উঠে হাঁটাহাঁটি করতে হবে। নিজের জন্য এক কাপ চাও বানিয়ে নেওয়া যেতে পারে এ সময়ে। বারান্দায় কিছু সময় কাটিয়ে, একটি-দুটি গান শুনে পুনরায় কাজ নিয়ে বসলে দেখাবেন খুব সাবলীলভাবে কাজ করা সম্ভব হচ্ছে।
প্ল্যান তৈরি করে ফেলুন
অফিসে বসে কাজ করা এবং বাড়িতে বসে কাজ করার মাঝে সবচেয়ে বড় তফাৎ তৈরি হয় কাজের টাইমলাইনে। অফিসে সবকিছু নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে, নিয়মের ভেতরে থাকে। বাসায় তেমনটা হয় না। তাই প্রতিদিনের কাজের প্ল্যান তৈরি করে ফেলুন। প্রতিদিনের জন্য যে কাজটুকু করতে হবে, তার জন্য সময়কেও নির্দিষ্ট করুন। সে সময়ের মাঝে হাতের জমে থাকা কাজ শেষ করার তাড়া থেকে কাজের প্রতি মনোযোগ তৈরি হবে এবং কাজ করা সহজ হবে।