ভালোবাসা শব্দটির সাথে ছোটো বড়ো সবাই পরিচি। তবে কি আমরা ভালোবাসার সঠিক অর্থ কি আমরা জানি! ভালোবাসা শব্দের অর্থ একেক জনের কাছে একেক রকম। কেউ ভালোবাসা বলতে বোঝে একে অপরের সুখে-দুঃখে কাছে থাকা। আবার নারী পুরুষ উভয়ই যখন দুজনের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে সারাজীবন এক সাথে থাকার সংকল্প করে তখন তাকে ভালোবাসা বলে।
আবার কেউ কেউ ভালোবাসা বলতে বোঝে বিচ্ছেদ। এমনকি অনেক বিখ্যাত ব্যাক্তিরাও ভালোবাসা বলতে বিচ্ছেদকে সমার্থন করেছেন।
ভালোবাসা নাকি সুখের থেকে কষ্ট দেয় বেশি, আবার কেউ কেউ বলেছেন ভালোবাসার বিরহে প্রকৃত সুখ নিহিত। এমন ভালোবাসার সংঙ্গা হাজার হাজার রয়েছে । কিন্তু আসলে কি পৃথিবীতে ভালোবাসা বলতে কিছু রেয়েছে? আর থাকলে সেটা কতখানি? নাকি এটা কিছুটা আবেগ আর বাকিটা স্বার্থ?
আজ আমি ভালোবাসার সংঙ্গা নিয়ে কোনো কথা বলবো না এমনকি ভালোবাসার অতুন অর্থ ও বের করবো না । আমি প্রমাণ করার চেষ্টা করবো ভালোবাসা আছে কি না! এবং ভালোবাসার থেকে স্বার্থ বেশি। ভালোবাসার প্রকার: ভালোবাসার অনেক প্রকার রয়েছে তবে আমি ভালোবাসার দুটি ধরনের কথা বলবো।
* বাবা মায়ের ভালোবাসা
* স্বামি-স্ত্রি- প্রেমিক প্রেমিকা ভালোবাসা
* বাবা মায়ের ভালোবাসা : প্রথিবির সবচেয়ে পবিত্র ভালোবাসা বলা হয় সন্তানের সাথে বাবা মায়ের ভালোবাসা । বাবা- মায়ের স্থান সবার উপরে আর তাদের ভালোবাসা নিরস্বার্থ ভালোবাসা ।
প্রতিটা ব্যাক্তিই সন্তান কামনা করেন তার বংশ রক্ষা করার জন্য।আর প্রতিটা বাবা-মায়ের দ্বায়িত্ব তার সন্তান কে বড়ো করা মানুষের মতো মানুষ করা, যাতে ভবিষ্যৎতে তাদের সন্তান যেনো তাদের দেখাশুনা করতে পারে।
ব্যাপারটা সাধার মনে হলে ওএকটু ভেবে দেখেন ।একটু ভাবলেই বুঝতে পারবেন স্বার্থ টা কোথায় । সন্তানের স্বার্থ হলো তার বাবা মা তাকে জ্বন্ম দিয়েছে এবং লালন পালন করে বড়ো করেছে। এখন যদি কোনো সন্তান জন্মের পর বাবা মা তাদের সঠিক ভাবে লালন পালন না করে অথবা তাদের কোনো আশ্রমে রেখে দিয়ে আসে সেক্ষেত্রে ঐসন্তান টি বড়ো হয়ে বাবা মায়ের পরিচয় জানার পর ও তাদের কাছে যায় না তাদের দ্বায়িত্ব নিতে চায় না কারণ ছোটো বেলেয় তার স্বার্থ পূরণ হয় নাই তাই সে তার বাবা মায়ের প্রতি কোনো দ্বায়িত্ব নিবে না।
আবার বাবা- মা সন্তান বড়ো করেন যাতে শেষ বয়সে তার সন্তান তাদের হাল ধরতে পারেন ।তারা যখন অক্ষম হয়ে যাবেন তখন ছোটো বেলায় যেমন তারা তার সন্তানকে দেখেছেন সন্তান যেনো এখন তাদের দেখেন। এখন যদি সন্তান বৃদ্ধ বাবা-মা কে না দেখে অথবা তাদের কোনো আশ্রমে রেখে দেয় তখন সেই স্নেহময়ি বাবা-মা যারা একদিন সন্তানের মঙ্গল চেয়েছিলো তারাই এখন সন্তানকে অভিশাপ দিবে । বাবা-মায়ের এই আচরণ করার কারণ তাদের স্বার্থ পূরন না হওয়া।
তাহলে এখানে বোঝা যায় Give & Take দেও এবং নাও । তুমি সুবিধা দিয়েছো এবং পরে তুমি সুবিধা নিয়েছো এব তুমি আগে সুবিধা নিয়েছো এখন সুবিধা দিচ্ছ।
* প্রেমিক প্রেমিকার ভালোবাসা: এটা সবচেয়ে বেশি আলোচিত। কারণ ভালোবাসার সংঙ্গাগুলোর সৃষ্টি মূলত প্রেমিক প্রেমিকা কে নিয়ে ।
আমি কোনো প্রেমিক প্রেমিকাকে আলাদা করতে চাই না শুধু মাত্র প্রেম নাকি স্বার্থ সেটা বরর্ণা করবো।
আমরা ছেলেরা যদি কোনো সুন্দরি, শিক্ষিত, সম্মাট মেয়ে দেখি এবং যদি আমাদের ভালো লেগে যায় তখন আমরা তাকে আমাদের অনুভুতিটা তাকে জানাই মূল কথা প্রেমের প্রস্তাব পাঠাই। এবার সেই মেয়েটা প্রস্তাব পাওয়ার পর আমাদেরকে ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করে অর্থাৎ তার স্বার্থ পূরনের জন্য যা যা দরকার সেগুলো ভালা ভাবে যাচাই করে নেয় এবং সব ঠিক থাকলে প্রস্তাবে সম্মতি দেয়। আবার কিছু কিছু মেয়েরে সম্মতি দেয় না কারণ তারা তাদের চাহিদা অনুযায়ি সেই কোয়ালিটি গুলো আমাদের মধ্যে খুজে পায় না।
আসলে ভালোবাসা বলতে কি আমি জানি না তবে আমি স্বার্থ ছাড়া কিছু খুজে পাই না। আমরা সুন্দরি মেয়ে শিক্ষিত মেয়ে খুজি কারন সমাজে সব সময়ই সাদা চামড়ার গুরুত্ব বেশি এটাই আমাদের স্বার্থ ।আমরা কোনো কুৎসিত মেয়েকে ভালোবাসি না আমরা বলি ওদের ভালোবাসা যায় নাকি।
মেয়েরা নিরাপত্তা খোজে যাতে সে সবসময় নিরাপদে থাকতে পারে আবার সে সুদর্শন ও খোজে যাতে তার ভালোবাসার মানুষের হাত ধরে সমাজে বের হতে পারে।
নিরাপত্তা খোজা সুদর্শণ খোজা এগুলো কি স্বার্থ নয়!
কোনো মেয়ে তো একটা বেকার অশিক্ষিত ছেলেকে পছন্দ করে না । এর একটাই কারণ নিরাপত্তা নাই এবং তার স্বার্থ পূরণ হচ্ছে না।
প্রেম ভালোবাসার প্রথম ধাপ এর পর আসে ভালোবাসার পরিসমাপ্তি পরিনয়।
আমি একটা মেয়েকে ভালোবাসি একটা মেয়ে ও আমাকে ভালোবাসে এখন আমরা বিয়ে করতে চাই।
এখন কথা হচ্ছে আমি বেকার, সুদর্শন নই এবং আমি আমার প্রেমিকাকে বলবো বিয়ের পর আমরা আলাদা থাকবো আমাদের ভিতর কোনো শারিরিক সম্পর্ক হবে না । এখন প্রশ্ন হচ্ছে মেয়েটাকি আমাকে বিয়ে করতে রাজি হবে?
আবার যদি কোনো কুৎসিত,অশিক্ষিত মেয়ে এবং আমাকে বলা হয় বিয়ের পর আমরা আলাদা থাকবো কেউ কাউকে স্পর্শ করবো না তখন কি আমি তাকে বিয়ে করবো?
প্রথম এবং দ্বিতীয় প্রশ্নের উত্তর না। আমরা কেউ কাওকে বিয়ে করবো না বা সম্পর্কে জড়াবো না। অতএব এখানে পরিষ্কার আমাদের স্বার্থ পূরণ হচ্ছে না । তাই ভালোবাসার থেকে স্বার্থ ও চাহিদা বেশি।
আমরা একে অপরের কাছে আসি চাহিদা পূরনের জন্য ।যখনই আমাদের চাহিদা পূরণ হয় না তখনই আমরা সম্মর্ক নষ্ট করি বা দূরত্ব তৈরি করি এবং নতুন কাওকে খুজতে থাকি চাহিদা পূরন করতে।
আমাদের কাছে আসা নির্ভর করে চাহিদা পূরনের উপর। যেখানে আমরা স্বার্থ পাই বা আমাদের মনে হয় এখানে গেলে আমাদের সকল চাহিদা পূরণ হবে আমরা সেখানেই যায়।
এবার কথা হচ্ছে কাওকে ভালো লাগাটা কি?
কাওকে ভালোলাগাটা একটা অনুভুতি এবং অনুভিক্ষণ স্থায়ি আবার এই অনুভুতির ভিতর ও স্বার্থ রয়েছে । কারোর প্রতি আমাদের কেনো অনুভুতি সৃষ্টি হইছে কারণ তাকে ভালোলেগেছে তাই অনুভুতি হইছে আর ভালো লাগার কারণ আমরা যাই চাইছি অর্থাৎ আমাদের চাহিদা মোতাবেক সব কোয়ালিটি রয়েছে তার ভিতর ।
পরিশষে লাই যায় ভালোবাসা, আবেগ, অনুভুতির উর্ধে স্বার্থ, চাহিদা।
ভালোবাসাটা আপনাদের কাছে কেমন মনে হয় নিচে কমেন্টে লিখে জানান❤