নদীর পাড়ে একটা কালো প্রাইভেটকার এসে থামল। পেছনে আরও ২টি সাদা গাড়ি রয়েছে। কালো পোশাক পরা কয়েকজন লোক সাদা গাড়ি থেকে নেমে কালো গাড়ির দরজা খুলে দিল। কালো গাড়ি থেকে কালো শার্ট পরা একটি ছেলে বেরিয়ে এলো। একটা মেয়েও ছিল।মেয়েটির নাম শিলা। ছেলেটি হাঁটতে শুরু করলে কালো কাপড় পরা লোকজন তার পেছন পেছন হাঁটতে থাকে।
ছেলেটি হাত নেড়ে তাদের সেখানে থামতে বলে। তারা সেখানে দাঁড়িয়ে আছে। লোকেরা ছেলেটিকে পাহারা দেয়। তারপর ছেলেটা আবার হাঁটা শুরু করলো। এরপর মেয়েটি পেছন থেকে ‘তিয়ান’ বলে ডাকতে থাকে। তিয়ান একবার দাঁড়াল, আবার কিছু একটা ভেবে আবার হাঁটা শুরু করল। শিলা দৌড়ে এসে পেছন থেকে তিয়ানকে জড়িয়ে ধরে বলল,কি হয়েছে আমাকে পাত্তা দিচ্ছ না যে। আমি কি কিছু ভুল করেছি ?তিয়ান বিরক্তি নিয়ে বলল, প্লিজ আমাকে একটু একা থাকতে দাও। আমি একটু একা থাকতে চাই।একা সময় কাটাতে চাই।
একথা বলে একা একা হাঁটতে লাগলো তিয়ান, হঠাৎ পায়ের তলায় কিছু অনুভব করলো। তিয়ান পায়ের নিচের বালি সরিয়ে একটা ঝুমকা কানের দুল দেখল। তিয়ান কানের দুলটা তুলে হাতে নিল। কানের দুল থেকে বালি পরিষ্কার করে ঝুমকার দিকে এক নজরে তাকিয়ে থাকে। তিয়ান সেই কানের দুলটা হাতে নিয়ে বলে, It’s really beautiful ।আর কিছু না ভেবেই কানের দুলটা পকেটে রাখে তিয়ান। তারপর কিছু সময় নদীর দিকে তাকিয়ে থাকলো। কিছুক্ষণ পর একজন গার্ড এসে তাকে কিছু বলল। তিয়ান তাড়াহুড়ো করে গাড়িতে গিয়ে বসল। এবং নদীর তীরে চলে গেল।
কালো গাড়িটা একটা বড় অফিসের সামনে এসে থামল। তিয়ান গাড়ি থেকে নামল। তার পরনে ছিল কালো শার্ট-প্যান্ট, কালো চশমা, তার ফর্সা মুখটা সবার নজর কেড়ে নিয়েছে । তিয়ান অফিসে যেতেই সবাই উঠে দাঁড়ালো।
তিয়ান তার রুমে গিয়ে ল্যাপটপে কাজ করতে লাগলো। ফাইলটা খুলতেই সে কিছু একটা দেখে খুব রেগে যায়।
এবং পি.এ কে ডাকে। তখন পি.এ এসে দস্তিদার সাহেব নামের একজন লোককে ডেকে আনে।তিয়ান তাকে অনেক কথা শোনায়।
অফিসের সবাই তিয়ানকে খুব ভয় পায়। তিয়ান অফিস থেকে বেরিয়ে গেল। হঠাৎ কেউ বলে উঠল এই স্যারকে না দেখলে বোঝা যাবে না। মানুষ কত খারাপ? দস্তিদার সাহেব বললেন, চুপ কর।না জেনে কাউকে খারাপ কথা বলা উচিত নয়।
দস্তিদার সাহেব এই অফিসে সবচেয়ে সিনিয়র। তখন পিএ বললেন, তুমি কিছু জানো? দস্তিদার সাহেব বললেন হ্যাঁ আমি সব জানি। আমার চোখের সামনেই সব ঘটে ছিল। আর সেই ঘটনার পর থেকে তিয়ান এমন হয়ে গেল। পিএ বলল কি হয়েছিল।
৫ বছর আগে, তিয়ান খুব মিশুকে আর হাসিখুশি ছিল। আমরা সবাই মিলে খুব আনন্দ করতাম। পিকনিক স্পটে যেতাম। একদিন তিয়ানের একটি মেয়েকে ভালো লেগে যায়।মেয়েটির নাম ছিল তানিশা। মেয়েটা খুব সুন্দর ছিল। মেয়েটি গরীব ঘরের ছিল। মেয়েটিকে তিয়ান প্রপোজ করে। কিন্তুু মেয়েটি তিয়ানকে না করে দেয়।
তিয়ানকে তিয়ানের বাবা অফিসের কাজে সাহায্য করতে বললে তিয়ান পালিয়ে চলে যায়। তানিশার বাড়ির সামনে গিয়ে তিয়ান দাড়িয়ে থাকতো। তানিশা পাত্তা দিত না।একদিন তানিশার বাবা তিয়ানকে বাড়ির সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে। তারপর বাড়ির ভেতর গিয়ে তানিশাকে ডাকে।আর তানিশাকে তিয়ানের কথা জিজ্ঞেস করে। তানিশা বলে,বাবা আমি তাকে চিনি না।কিন্তুু সে আমাকে অনেক বিরক্ত করে।
এটা শুনে তানিশার বাবা বলেন, আমি তোমাকে বিশ্বাস করি কিন্তুু বাইরের লোকজন এটা বিশ্বাস করবে না।আমি যেন আর কখনও এই ছেলেকে আমাদের বাড়ির সামনে না দেখি।আর তুমি এটা করবে। এটা বলে তানিশার বাবা চলে গেলেন। তানিশা মাথা নিচু করে নিজের রুমে চলে গেল। পরের দিন তানিশা কলেজে যাওয়ার জন্য বের হলে তানিশার সামনে এসে তিয়ান দাঁড়িয়ে বললো। কি খবর তানিশা তুমি কি আমার অনুভুতি বুঝতে পারছো না।আমি তোমার জন্য এতো কিছু করি আর তুমি আমাকে গুনছোই না।কেন? পর্ব -২ এখান থেকে পড়ুন