পর্ব -১ এখান থেকে পড়ুন । তানিশা কিছু না বলে চলে যেতে গেলে, তিয়ান তানিশার হাত ধরে। আর তানিশা ঠাস করে একটা থাপ্পড় দেয়। আর বলে,এই আপনার সমস্যাটা কি আপনি বুঝতে পারছেন না আমি বিরক্ত হচ্ছি।আর কতো বিরক্ত করবেন আমাকে। আপনার জন্য আমার বাবা আমাকে বকেছে। প্লিজ আমাকে ছাড়ুন এবার। আর কখনও না দেখি আপনাকে।
এটা বলে তানিশা চলে যায়। তারপর তিয়ান কিছুটা হতাশ হয়ে কি করবে বুঝতে না পেরে চলে যায়। ওই দিন বিকেল বেলায় তানিশা বাড়ির ছাদে বসে ফুল গাছে পানি দেয়। তখন নিচে চোখ যেতেই দেখে তিয়ান দাঁড়িয়ে আছে।
হাতে একটা বড় কার্ড, আর তাতে লেখা আছে। তানিশা আমি তোমাকে ভালোবাসি। তুমি আমাকে বিয়ে করবে। এটা দেখে তানিশা তারাতাড়ি নিচে নেমে আসে। কিন্তুু কিছু বলার আগেই তানিশার বাবা ওখানে চলে আসে। তানিশার বাবা এসে তিয়ানকে বলে এই ছেলে তুমি আমার মেয়ের পেছনে কেন পড়ে আছো।
আর এ সব কি, এটা কেমন ভালোবাসা। যাকে ভালোবাসো তারই সন্মান নষ্ট করছো।যদি ভালোবেসে থাকো। তাহলে আর কখনও আমার মেয়েকে বিরক্ত করো না।
এটা বলে তানিশাকে হাত ধরে টানতে টানতে ঘরে নিয়ে যায় তানিশার বাবা। তানিশাকে ঘরে নিয়ে বলে আমি এই মাসের মধ্যে তোমাকে বিয়ে দেবো তুমি ভেতর থেকে তৈরি থাকো। আমি ভালো ছেলে দেখছি। তানিশা কিছু বলছে না।শুধু চোখ থেকে পানি পরছে। তানিশার মা নেই তাই কষ্টটা কাউকে বোঝাতে পারছে না।
এক সপ্তাহ ধরে তিয়ান আর তানিশার দেখা হয় নি। তানিশা কলেজ যাচ্ছে। আজকে তানিশার পরিক্ষা। রাস্তা দিয়ে হাটছে আর ভাবছে, লোক ঠিকই বলে সত্যি ভালো শুধু বাবা মা বাসতে পারে । আর বাকি সব মরিচা। যাক ভালোই হয়েছে এখন আর কোনো ভয় নেই। ঠিক এমন সময় কেউ সামনে এসে দাড়াতেই তানিশা ভয় পেয়ে গেলো। তাকিয়ে দেখলো তিয়ান।
তানিশা বললো একি আপনি। আপনি এখানে কি করছেন?তিয়ান বললো তুমি কি ভাবলে আমি তোমাকে ভুলে গেছি। এতোটা সহজ না।ভালোবাসলে ভুলে থাকা যায় না, বুঝলেন মিস তানিশা।তানিশা বললো আমি এতো কিছু বুঝতে চাই না। আমি কলেজে যাবো।দয়া করে আমার পিছু ছাড়েন।
এটা বলে তানিশা পাশ কাটিয়ে যেতে গেলে, তানিশার ওড়না তিয়ানের ঘড়িতে বেজে গিয়ে ওড়নাটা খুলে যায়। তানিশা লজ্জা পেয়ে ২ হাত দিয়ে বুক চেপে ধরে। তিয়ান এটা দেখে ওড়নাটা হাতে নেয় তানিশাকে পরিয়ে দেবে ভেবে। কিন্তুু দুর্ভাগ্য ভাবে রাস্তায় থাকা কিছু ছেলে ওড়না তিয়ানের হাতে দেখে ভুল ভেবে নেয়। আর সবাই মিলে এসে তিয়ানকে মারতে থাকে। তিয়ানকে কিছু বলার সুযোগ দিলো না। তানিশা তাদের থামানোর অনেক চেষ্টা করে।
কিন্তুু তারা কোনো কথা শোনে না। তারা তিয়ানকে খুব মারতে থাকে। একপর্যায়ে তিয়ান অজ্ঞান হয়ে যায়। সবাই তিয়ানকে রেখে চলে যায়। তানিশা তিয়ানের পাশে বসে পড়ে। তানিশা বলতে লাগলো, কেউ সাহায্য করো। তিয়ানের মুখে হাত রেখে বলতে লাগলো। এই যে শুনছেন উঠুন না,উঠুন ।
আপনি কি আমার কথা শুনতে পাচ্ছেন। কেঁদে কেঁদে বলছে উঠুন না। তারপর তানিশা তাড়াহুড়ো করে একটি রিকশা ঠিক করে নিল। তিয়ান কে হসপিটালে নিয়ে গেল। প্রচন্ড রক্ত বেরোচ্ছিল ওর মাথা থেকে। তানিশা ভয়ে ভয়ে বলল ডাক্তার সাহেব ,আপনি যে করেই হোক ওকে সুস্থ করে দিন প্লিজ ।
ডাক্তারবাবু বলল আপনি চিন্তা করবেন না আমরা দেখছি আপনি এখানেই থাকুন। কিছুক্ষণ পর ডাক্তার বেরিয়ে আসলো। বলল ,এখন আর কোনো চিন্তা নেই উনি সুস্থ আছেন। তানিশা চোখের পানি মুছে বলল, ধন্যবাদ ডাক্তার বাবু। তানিশা ডাক্তার কে বলল, উনি যদি জানতে চায় ওনাকে এখানে এনেছে কে ।তাহলে বলবেন কিছু লোক এসে রেখে গেছে । আমার কথা কিছুই বলবেন না। ডাক্তার বলল ঠিক আছে ।
তারপর তানিশা ওখান থেকে বাসায় চলে যায়। আর খুবই চিন্তায় থাকে। তানিশার বাবা তানিশাকে বলল,পরীক্ষা কেমন হয়েছে আজকে তোমার? তানিশা মাথা নিচু করে বলল পরীক্ষা দিতে পারিনি। তানিশার বাবা রেগে গিয়ে বলল, কি বলছ টাকি।
তুমি কি জানো না আমি তোমাকে কত কষ্ট করে পড়াচ্ছি? তুমি এখন সে বলছো তুমি পরীক্ষা দাওনি। আচ্ছা এটা তো বল ,যে কি কারণে তুমি পরীক্ষা দিলে না । তানিশা বলল একটা সমস্যা হয়েছিল বাবা।
আমি যখন রাস্তা দিয়ে কলেজ যাচ্ছিলাম তখন একটা অ্যাক্সিডেন্ট হয়। আর আমি ওই লোকটাকে হসপিটালে নিয়ে যাই, যার জন্য আমার পরীক্ষার টাইম শেষ হয়ে গেছে। আমাকে ক্ষমা করে দাও বাবা।
তানিশার বাবা কিছু বলতে গিয়েও,বলতে পারলেন না। তানিশার মাথায় হাত রেখে উনি নিজের ঘরে চলে গেলেন। তানিশা নিজের রুমে বসে কান্না করতে লাগলো। মনে মনে বলতে লাগলো বাবা আমাকে ক্ষমা করে দিও , আমি তোমাকে মিথ্যা বলতে বাধ্য হয়েছি ।I’m sorry baba, I am sorry.