আসসালামু আলাইকুম। কেমন আছেন সবাই? আশা করি আল্লাহর রহমতে সবাই ভাল আছেন। আমিও আপনাদের দোয়ায় আনেক ভালো আছি। আজকে আমি আপনাদের মাঝে একটি ভিন্ন ধরনের টপিক নিয়ে হাজির হয়েছি। তো আজকে আমি আপনাদের সাথে মাইক্রোসফট কর্পোরেশন যতকিছু আছে তা সব সম্পর্কে কথা বলব।
মাইক্রোসফট কোম্পানি কত সালে শুরু হয়?
মাইক্রোসফট কর্পোরেশন বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি। এই কোম্পানিটি ১৯৭৫ সালের ৪ এপ্রিল New Mexico, US এ তৈরি করা হয়। দেখতে দেখতে এই টেক জায়েন্টের বয়স ৪৭ বছর হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে এদের হেডকোয়ার্টার ওয়াশিংটন, ইউএস এ।
মাইক্রোসফট কোম্পানির মালিক কে এবং তার সংক্ষিপ্ত বিবরণী:
অনেকেই জানেন যে এ কোম্পানির মালিক শুধু বিল গেটস। আসলে এ কোম্পানি তৈরি করেন বিল গেটস ও পল এলেন নামক দুই জন ব্যবসায়ী। বিল গেটস তার চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে পদ ২০০০ সালে ত্যাগ করেন ও পরে শুধু চেয়ারম্যানের হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে ২০১৪ সালে সে তার চেয়ারম্যানের পদও ত্যাগ করেন এবং একজন টেকনোলজি আ্যডভাইজার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
মাইক্রোসফট কোম্পানি কি কি প্রোডাক্ট বিক্রি করে?
মাইক্রোসফট মূলত বিশ্বের সবচেয়ে বড় সফটওয়্যার তৈরিকারী কোম্পানি হিসেবে খ্যাত হলেও এর পাশাপাশি এদের আরো অনেক প্রোডাক্ট আছে। তাদের বর্তমানে প্রায় কয়েক শতাধিকটি বিভিন্ন শাখায় প্রোডাক্ট রয়েছে। তাদের মধ্যেও রয়েছে এক্সবক্স, বিং, লিংকডইন, গিটহাব, আউটলুক, ওয়ানড্রাইভ, এক্সেল, ওয়ার্ড, স্কাইপ, উইন্ডোজ ফোন(এটি পরে ফ্লপ হয়) ইত্যাদি নিত্যপ্রয়োজনীয় ও খ্যাতিপ্রাপ্ত সব সার্ভিসগুলো মাইক্রোসফটের মালিকানাধীন।
মাইক্রোসফট এর বাৎসরিক আনুমানিক ইনকাম কত এবং বর্তমান বিশ্বের কত নম্বরে রয়েছেন?
ইনকামের দিক থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বড় কোম্পানিগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে মাইক্রোসফট। এদের বাৎসরিক আয় প্রতিবছরই বেড়ে চলেছে।
- ২০১৯ সালে তাদের মোট বাৎসরিক ইনকাম ছিল প্রায় ৩৯.২৪ বিলিয়ন ডলার বা ৩৯২৪ কোটি ডলার।
- ২০২০ সালে তাদের মোট বাৎসরিক আয় ছিল প্রায় ৪৪.২৮ বিলিয়ন ডলার বা ৪৪২৮ কোটি ডলার।
- ২০২১ সালে তাদের মোট বাৎসরিক আয় গিয়ে দাঁড়ায় প্রায় ৬১.২৭ বিলিয়ন ডলার বা ৬১২৭ কোটি ডলার।
দেখা যাচ্ছে যে প্রতিবছরই তাদের বাৎসরিক আয় ক্রমশই বেড়ে চলেছে। ২০২১ সালের এক র্যাংকিং মাইক্রোসফটকে আমেরিকা সবচেয়ে বড় ও ধোনি কোম্পানি হিসেবে বলা হয়। এবং এটিকে বিশ্বের সবচেয়ে মূল্যবান কোম্পানির খেতাব দেওয়া হয়। এদের মোট মূল্য ধরা হয় ২.৪৯ ট্রিলিয়ন ডলার। Fortune নামক আরেকটি ওয়েবসাইটে এদেরকে ২০২০ সাল অনুযায়ী বিশ্বের মধ্যে ১৫ তম র্যাংক দেওয়া হয়।
মাইক্রোসফট কোম্পানিতে চাকরি করে কয়েকজন টপ পজিশনের এম্প্লয়ির সম্পর্কে:
বর্তমানে মাইক্রোসফটে ১ লক্ষ ৬৩ হাজার চাকুরিজীবী কাজ করেন। বর্তমানে এ কোম্পানির টপ পোজিশনের ব্যক্তিরা বা কি পিপোলরা হচ্ছেঃ বর্তমানে মাইক্রোসফট কোম্পানির চেয়ারম্যান ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন সত্য নাদেলা। তিনি ২০১৪ সাল থেকে এই চেয়ারম্যান ও সিইওর দায়িত্ব পালন করে আসছে।
ভাইস চেয়ারম্যান ও প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন ব্র্যাড স্মিথ। তিনি ১৯৯৩ সালে মাইক্রোসফটে যোগদান করেন ও ২০১৫ সাল থেকে এ কোম্পানির প্রেসিডেন্ট হিসেবে নিয়োজিত হন। এর পাশাপাশি টেকনোলজি আ্যডভাইজারের দায়িত্ব পালন করেন এ কোম্পানির তৈরিকারী বিল গেটস।
এই কোম্পানির সফলতা দেখে আমরা কি কি শিখতে পারি?
আমার মতে আমাদের এই মাইক্রোসফট কোম্পানিটির কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। মাইক্রোসফট টেকনোলজি ও সফটওয়্যার তৈরির নতুন একটি যুগের সৃষ্টি করেছে। তারা ১৯৭৫ থেকে এখন পর্যন্ত মার্কেটকে ডোমিনেট করে যাচ্ছে। কিভাবে সেল বাড়াতে হয় ও কিভাবে আরো নতুন কাস্টমারদেরকে আকর্ষণ করা যায় সে বিষয়ে তারা খুবই পটু। তারা প্রতিবছরই তাদের ইনকাম ও র্যাংকিং এগিয়ে নিচ্ছে। Fortune এর মতে ১৯৯৫ সালে মাইক্রোসফটের র্যাংকিং ছিল ২৫০ তম। পরবর্তীতে ২০০০ সালে এদের র্যাংকিং হয় ৭৯ তম। ২০১০ সালে এদের র্যাংকিং হয় ৩৭ তম আর ২০২০ সালে এদের র্যাংকিং হয় ১৫ তম। তাদের সাকসেস দেখতেই পারতেছেন। তারা মাত্র ৩৫ বছরের সময়ের মধ্যে ২৪৫ র্যাংক সামনে এগিয়েছে। তারা একবার গতি পাওয়ার পর আর পিছে ফিরে তাকায় নি। আমাদেরও এরকম সর্বদা চেষ্টা করা উচিত। যতক্ষণ না পর্যন্ত আমরা সফল হই।
উপসংহার:
অবশেষে আমি বলব যে এটা বিশ্বের সবচেয়ে সফল কোম্পানিরগুলোর মধ্যে একটি। এটি একটি টেক জায়েন্টে রূপান্তরিত হয়েছে। বর্তমানে প্রায় সব কম্পিউটারেই তাদের উইন্ডোজ ব্যবহার করা হয়। তাদের সফলতা পিছে দুটি জিনিস আছে। একটি হচ্ছে চেষ্টা এবং অপরটি হচ্ছে বুদ্ধি। এটির সকল প্রোডাক্টই আমরা প্রতিদিন ব্যবহার করি। তাক বর্তমানে তাদের ব্যর্থ হওয়ার কোনো উপায় আছে বলে আমার মনে হয় না।
তো আজকের জন্য এতটুকুই। আবার অন্য কোনোদিন আপনাদের সামনে নতুন কোনো বিষয় নিয়ে হাজির হব। ততদিন পর্যন্ত ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন সেই কামনায় আজকের জন্য বিদায় জানাচ্ছি। গ্রাথোরের সঙ্গেই থাকুন।