মস্তিষ্ক কথাটি ছোট হলেও বাস্তব জীবনে এর পরিধী এবং কার্যকারিতা ব্যাপক। এই জগতে মানুষ অন্য প্রাণী হতে শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করেছে আমাদের মস্তিষ্ককে সঠিক ভাবে ব্যবহার করায়। মস্তিষ্ক হলো আমাদের শরীরের প্রধান অংশ। সুতরাং আমাদের এই মস্তিষ্ক কে নিয়মিত চর্চা বা অনুশীলন করা অধিক প্রয়োজন।
মস্তিষ্ক অনুশীলন / চর্চা কী?
= মস্তিষ্ক চর্চা হলো আমাদের মস্তিষ্ক কে নিয়মিত কোনো না কোনো উপায়ে পরীক্ষা করা। অর্থাৎ আমাদের দৈনন্দিন জীবনে বিভিন্ন পরীক্ষিত কাজের দ্বারা আমাদের মস্তিষ্ক কে অনুশীলন করা। কিন্তু, এই মস্তিষ্ক চর্চা / অনুশীলন এর আমাদের সমাজে ঠিক তেমন একটা অনুশীলন করা হয় না। ফলস্বরুপ, পরিণাম আজ আমাদের চোখের সামনে।
মস্তিষ্ক চর্চা / অনুশীলন করার বৈজ্ঞানিক কয়েকটি পদ্ধতি কী ?
= সাধারণত আমরা দৈনন্দিন জীবনে নানা কাজ করে থাকি। এর মধ্যে অনেক কাজের ব্যাস্ততার কারণে মস্তিষ্ক চর্চার জন্য নিজেদের থেকে সময় বের করতে পারছি না। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, আমাদের প্লে স্টোরে থাকা যে সব মস্তিষ্ক চর্চার সফটওয়্যার রয়েছে এগুলো আমাদের মস্তিষ্ক অনুশীলনে তেমন একটা প্রভাব পড়ে না। সুতরাং আমাদের এমন সব পরীক্ষিত কাজ দ্বারা অনুশীলন করতে হবে যার ইতিবাচক দিক আছে। বিভিন্ন এলজেবরা সমাধান, পাজেল মিলানো, আংগুলের ব্যায়াম, সুডুকু মিলানো, দৈনন্দিন রুটিনের আগ-পিছ করা, বিতর্ক করা ইত্যাদি উপায়ে মস্তিষ্ক চর্চা করা যায়।
এলজেবরা সমাধান-
= আমাদের মস্তিষ্ককে অনুশীলন করার একটি পরীক্ষিত উপায় হলো নানা কঠিন বীজগণিত সমাধান করা। এক্ষেত্রে, আপনি আপনার শ্রেণির কঠিন বীজগণিত গুলো সমাধান করার চেষ্টা করবেন। তাছাড়া, আপনি বাইরের বা পরবর্তী শ্রেণির গুলো সমাধান করতে পারেন। কিন্তু এমন জিনিস করতে যাবেন না,যাতে আপনার পড়ার ব্যাঘাত ঘটে।
পাজেল সমাধান-
= পাজেল সমাধান ও মস্তিষ্ক অনুশীলন করার অন্যতম প্রধান উপায়। এতে করে আপনি আপনার মস্তিষ্ককে চাপ প্রধান করছেন এবং এটি আপনার জন্য সুবিধা। এছাড়া পাজেল সমাধান করার মাধ্যমে আপনি বাস্তব জীবনে নানা কঠিন জিনিস সমাধান করতে পারবেন। এর মাধ্যমে প্রত্যক্ষদর্শী, যুক্তির সাহায্যে সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর প্রক্রিয়া এসব জিনিস লাভ করতে পারবেন।
হাতের ব্যায়াম-
= বিভিন্ন কাজ ছাড়াও নানা ধরনের ব্যায়াম মস্তিষ্ক অনুশীলন করতে সহায়তা করে। আপনি প্রথমত এক আঙ্গুল দ্বারা অপর আঙ্গুল টিপতে পারেন।এছাড়া আপনি এক হাতের আঙ্গুলগুলো অন্য হাতের আঙ্গুলের মধ্যে রেখে চাপ দিবেন। এতে করে আপনার মস্তিষ্ক চর্চা হবে। আপনি এটা অবসর সময়ে করতে পারেন এবং এটা পরীক্ষিত। এছাড়া, আপনি যোগব্যায়াম ও করতে পারেন। এটি আপনার মনকে প্রফুল্লতা দেওয়ার পাশাপাশি মস্তিষ্ক অনুশীলন ও হবে।
এছাড়া আরো অনেক পরীক্ষিত কাজ আছে যেমন; দাবা খেলা, নতুন জিনিস শেখা, নতুন ভাষা শেখা, খেলাধুলা করা, তাই চি নামক ব্যায়াম করা ইত্যাদি ইত্যাদি।
আপনি দেখবেন আমাদের সমাজে অনেক শিক্ষার্থীদের ভালো ফলাফল নিয়ে বের হয়। কিন্তু কোনো প্রকার দেশের উন্নতিতে তেমন একটা প্রভাব ফেলতে পারছে না। কারণ আমাদের বেশিরভাগ বিদ্যালয়ে শেখানো হয় শুধু সরকার অনুমোদিত পাঠ্য। অন্যান্য দেশের বিদ্যালয়ে দেখবেন মস্তিষ্ক অনুশীলন করানো হচ্ছে পড়ালেখার পাশাপাশি। ফলস্বরুপ, তারা আমাদের থেকে অনেক এগিয়ে। তাই আমাদের এ ব্যাপারে আরো এগিয়ে যেতে হবে। আশা করি, আমি আমার সম্মানিত পাঠকদের বুঝাতে পেরেছি। ভুল হলে ক্ষমা করবেন। ধন্যবাদ।