বাংলাদেশের খুলনা বিভগের অন্তর্গত জেলা হিসেবে পরিচিত মাগুরা জেলা। মাগুরা জেলার অধিকাংশ মানুষ কৃষি কাজ করে জীাবকা নির্বাহ করে থাকে। এছাড়াও কভিড-১৯ মহামারীর কারণে এই জেলার অর্থনৈতিক উন্নয়ন কার্যক্রম প্রায় বন্ধ হয়ে গিয়েছিল যার কারণে জেলার বেশীরভাগ মানুষ অভাব, অনটন ও দারিদ্রতাই ভুগছে।
মাগুরা জেলার তীর ঘেষে বয়ে গেছে মধুমতি নদী। মধুমতি নদীর পারে কয়েক হাজার দরিদ্র কৃষকের বসবাসের কেন্দ্রস্থল। মধুমতি নদী পাড়ের চর-পাঁচুরিয়া গ্রামটিতে প্রায় সাড়ে চার হাজার মানুষ বসবাস করছে এবং সেখানে কোন নাগরিক সুবিধা পাওয়া যায় না। এড়াও মধুমতি নদীর পাড়ে নদী-ভাঙনে বিলীন হয়ে গেছে কয়েকশত ভিটাবাড়ি। চর-পাঁচুরিয়া গ্রামে অধিকাংশ মানুষই দরিদ্র এবং খেঁটে খাওয়া মানুষ। গ্রামটি মোহাম্মদ উপজেলা সদর ইউনিয়নে আট নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই গ্রাম। নদী-ভাঙনের কবলে পড়ে প্রায় অর্ধশত মানুষ তাদের বসত-বাড়ি ও ভিটা হারিয়েছে।
বসতবাড়ি ও ভিটা পূণরায় নির্মাণ করতে না পারাই অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্থ গ্রামবাসী দেশের অন্য অঞ্চলে গিয়ে বসবাস করছে। এলাকাবাসীর দাবি বর্ষাকাল আসলেই এই নদী-ভাঙনের প্রবণতা যেন ক্রমেই বৃদ্ধি পায়। মোহাম্মদপুর উপজেলা ইউনিয়নে এই বিষয়ে কর্তব্যরত কর্মকর্তাদের কাছে গ্রামবাসি চিঠী পাঠিয়েছিল তবে এই বিষয়ে তেমন গুরুত্বের সাথে কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। মোহাম্মদপুরের চর-পাঁচুরিয়া গ্রামের রাস্তাঘাটেরও বেহাল অবস্থা। গ্রাম থেকে উপজেলা ইউনিয়নে যাওয়ার জন্য একটি মাত্র রাস্তা এবং বর্ষাকালে এই রাস্তাটিতে হাঁটু সমান পানি থাকে।
গ্রামের মানুষের রাস্তা চলাচল ও পারাপারের খুবই সমস্যা হয়ে থাকে। দীর্ঘদিন যাবত এই রাস্তার কোন উন্নয়নমূলক কাজে সরকারের কোন ঊর্ধতম কর্মকর্তাকে পাশে পাইনি গ্রামবাসী। গ্রামবাসী ভাঙ্গন ও ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা মেরামতের জন্য একাধিকবার সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে আবেদন করেন কিন্তু এই বিষয়ে জরুরী পদক্ষেপ এখনও নেওয়া হয়নি। ভোগান্তির মূল কারণ হিসেবে নদী ভাঙ্গনকে প্রধান কারণ বলে আখ্যায়িত করেছে চর-পাঁচুরিয়া গ্রামের সাধারণ খেঁটে-খাওয়া মানুষেরা।
গ্রামবাসী বলেন, সামনের বর্ষাতে যদি এই ভাঙ্গন বিষয়ে বিশেষ পদক্ষেপ না নেওয়া হয় তাহলে নতুন করে দরিদ্র মানুষের ভিটেবাড়ি মধুমতি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পাড়ে। এছাড়াও ক্ষতিগ্রস্থ রাস্তা মেরামত না করা গেলে ছাত্র-ছাত্রী ও পথচারীদের ভোগান্তির কোন শেষ থাকবে না। মোহাম্মদপুর উপজেলা ইউনিয়নের চর-পাঁচুরিয়া গ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, ফসলি জমি, মসজিদ, মন্দিরসহ সমস্তকিছু পানিতে ডুবে শেষ হয়ে গেছে। পাড়ের স্থানীয় করবস্থানও ভাঙ্গনে ডুবে ভেসে গেছে।
এমন অবস্থায় ভাঙ্গনে কবলিত মানুষ কোন ঠিকানা না পেয়ে গ্রাম ছেড়ে অন্য অঞ্চলে চলে গিয়েছে। এরপরও মোহাম্মদপুর উপজেলা ইউনিয়নের চর-পাঁচুরিয়া গ্রামবাসীর তীব্র আশা যে সরকারের ঊর্ধতন কর্মকর্তারা বিষয়টি আমলে নিয়ে নদী-ভাঙন ও রাস্তাঘাট মেরামত করতে সহায়তা করবে।
সূত্র: বাংলানিউজ২৪.কম: https://www.banglanews24.com/share/news/bd/876819.details?