আজকে আমি আপনাদের কাছে বলার চেষ্টা করবো বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জীবনের কিছু কথা । শেখ হাসিনার জন্ম ১৯৪৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া গ্রামে । জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান এবং বঙ্গমাতা ফজিলাতুন্নেসার ৫ সন্তানের মধ্যে সবার বড় তিনি । ১৯৬৮ সালে খ্যেতনামা পরমানু বিজ্ঞানী ডঃ এম ওয়াজেদ মিয়ার সাথে তার বিয়ে হয় । মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই অবরুদ্ধ ঢাকায় পরমাণু বিজ্ঞানী এমএ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান জয়ের জন্ম হয়। স্বাধীনতা যুদ্ধ জয়ের পর তার নাম ‘জয়’ রাখেন নানা শেখ মুজিবুর রহমান। আর ১৯৭২ সালের ৯ ডিসেম্বর জন্মগ্রহন করেন তাদের দ্বিতীয় সন্তান সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ।
১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট ভয়াল রাত্রে স্বপরিবারে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু নিহত হলেও তৎকালিন পশ্চিম জার্মিনিতে থাকায় বেচে যান তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা । পরবর্তি ৬ বছর লন্ডন এবং দিল্লিতে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয় তাদের দুই বোনকে । ১৯৮১ সালে তার অনুপস্থিতেই সর্ব সম্মতিক্রমে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত হন তিনি । সেই বছরের ১৭ মে দেশে ফেরেন শেখ হাসিনা । তিনিই প্রথম জেনারেল এরশাদ সরকারের সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেন । তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে গনত্রন্ত্র প্রতিষ্ঠা সংগ্রাম শুরু করে । যার ধারাবাহিকতায় ১৯৯১ সালে সৈরাচারি এরশাদ সরকারের পতন ঘটে । দেশে গনত্রন্ত্রের যাত্রা শুরু হবার পর সাধারন নির্বাচনে তার নেতৃত্বে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বৃহত্তম বিরধী দল হিসেবে আত্যপ্রকাশ করে ।
১৯৯৬ সালের সাধারন নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়ী হয় বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ এবং জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ “আওয়ামী লীগ” সরকার গঠন করে । তার সরকারের অন্যতম সাফল্য ছিল পার্বত্য শান্তি চুক্তি । যুগ যুগ ধরে চলে আশা পাহাড়ি বাঙ্গালী রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে সাক্ষরিত হয় এই শান্তি চুক্তি । পদ্মার পানি বন্টন চুক্তি ভারতের সাথে তার সরকারের আরেকটি অন্যতম সাফল্য । ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেট হামলা সহ বেশ কয়েকবার তাকে হত্যা চেষ্টা চালানো হয় । তবে সব অপচেষ্টাকে নৎসাত করে দিয়ে গনতন্ত্র প্রতিষ্টায় চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা । তারপর ১/১১ তে তথাকথিত তত্ব্যাবধায়ক সরকারের ২ বছরের সাশনামলে গ্রেফতার করা হয় শেখ হাসিনা কে । রাজনীতিতে সৃষ্টি হয় নেতৃত্ব শুন্যতা । হুমকির মুখে পরে দেশের গনতন্ত্র । গনরোশের মুখে এক পর্যায়ে তাকে ছেরে দিতে বাধ্য হয় তৎকালীন সেনা সমর্থিত সরকার । তারপর বিরাজমান গনতন্ত্রের সংকট কাটিয়া ২০০৮ সালের ২৯ শে ডিসেম্বররের সাধারন নির্বাচনে বিপুল ভোটে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট । গনতন্ত্রের এ সন্ধিক্ষনে দ্বিতীয় বারের মত প্রধানমন্ত্রী হন জননেত্রী শেখ হাসিনা । গনতন্ত্র ও উন্নয়নের নতুন যাত্রা শুরু করে বাংলাদেশ । এরপর আবার ২০১৪ সালে দেশের প্রধান বেরধীদল নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করায় পুনরায় তৃতীয় বারের মত প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা ।
২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর নির্বাচনে বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথম টানা তৃতীয় বারের মত, ৪র্থ বার বিজয়ী নারী প্রধানমন্ত্রী হন জননেত্রী শেখ হাসিনা । তার স্বামী আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্য পরমানু বিজ্ঞানী ডঃ এম ওয়াজেদ মিয়া ২০০৯ সালের ৯ মে ইন্তেকাল করেন । শেখ হাসিনার জ্যেষ্ঠ পুত্র সজিব ওয়াজেদ একজন তথ্য প্রযুক্তি বিশারদ । তার একমাত্র কন্যা সায়মা হোসেন ওয়াজেদ পুতুল একজন মনোবিজ্ঞানী এবং তিনি অটিস্টিক শিশুদের কল্যানে কাজ করছেন । শেখ হাসিনার নাতি- নাতনী রয়েছে ৭ জন । সুযোগ্য নেত্রীত্ব এবং অসাধারন ধীর শক্তির স্বীকৃতি হিসেবে বহু আন্তর্জাতিক সম্মানন্যা অর্জন করেছেন শেখ হাসিনা । আন্তর্জাতিক রোটারি ফাউন্ডেশন তাকে বাংলাদেশের মানুষের জননী হিসেবে স্বীকৃত করেছে ভালবাসার মাধ্যমে । দেশে বর্তমান রাজনৈতিক ইসু নিয়ে আলোচনায় এবং সমালোচনায় জননেত্রি শেখ হাসিনা ।