হাসিমা আইল্যান্ড, জাপান- এই শহরটিকে আপনি যদি প্রথম দেখেন তাহলে আপনার মনে হবে যেন কোন ভয়ংকার প্রলয়নকারি ঝর এই শহরটিকে তছনছ করে দিয়েছে। আর যার কারনে এখানে বসবাসকারি মানুষও জীবিত নেই। কিন্তু আসলে এটা মোটেও সেরকম কিছু নয়। ১৮৪৭ সালে কয়লা খনন করার জন্য এই জায়গাগুলো নির্মান করা হয়। তখন ৫ হাজারেও বেশি শ্রমিক সমুদ্র থেকে কয়লা উত্তলনের জন্য এখানে কাজ করতো এবং তাদের থাকার জন্যই এই জাইগার ব্যবস্থা করা হয়। কিন্তু কিছু দিনের মধ্যেই জাপানে কয়লার বিকল্প জ্বালানি মজুদ করে ফেলে যার কারনে সেখানে কয়লা খননের কাজ বন্ধ করে দেয়া হয় এবং হাসিমা আইল্যান্ডে থাকা সকল কর্মচারিরাও ফেরত চলে আসে। আর জার কারনে এই দ্বীপটি একটি নির্জন আবাস্থলে পরিনত হয়েছে। বর্তমানে র্এই জায়গায় কারও বসবাস নেই। কিন্তু দূর দূরান্ত থেকে অনেক পর্যটক এই ভুতুরে পরিবেশটাকে এক নজর দেখতে ছুটে চলে আসে।
অরডস গোস্ট সিটি, চায়না- চীন দেশের কোন বিষয় সম্পর্কে যদি জানতে চাওয়া হয় তাহলে সর্বপ্রথম মুখ্য যে বিষয়টি মাথায় আসে সেটা হচ্ছে দেশটির বিশাল জনসংখ্যা। যেহেতু দেসশটিতে এত বেশি সংখ্যক মানুষের বসবস সেহেতু চিন্তায় আস্তেই পারে হয়তো দেশটিতে থাকার জন্য জায়গার যথেষ্ট অভাব রয়েছে, কিন্তু আসলে এর পুরোটাই বিপরিত। কারণ আপনাকে যদি বলা হয় যেখানে পুরো একটি শহর খালি পড়ে থাকে তাহলে হয়তো সেটা আপনি হজম না করেই নিতেই পারেন। অরডস এরকমই একটি শহর যেখানে কোন লোকজনের বসবাস নেই। শহরটিতে বড় বড় বিল্ডিনে খালি পড়ে আছে, দিনের বেলা আপনি এখানে পরিচ্ছন্ন কর্মচারী ব্যবতীত লোকজনের দেখা অনেক কষ্টে পাবেন। শহরটিতে কোন কিছুরই কমতি নেই, লাইব্রেরী, অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, থিয়েটার্স, হোটেলস, গার্ডেন্স, রেস্টুরেন্ট সহ সকল সুযোগ সুবিধাই এখানে রয়েছে। যদি কোন কিছুর কমতি থাকে তবে সেটা হচ্ছে মানুষ। শহরটি ডেভলপ করার সময় ধারণা করা হয়েছিল হয়তো ধীরে ধীরে এখানে সবাই সেটেল হয়ে যাবে কিন্তু তার হার খুবই কম। শরহরটিতে আপনি শুধুমাত্র রাতের বেলায় রেষ্টুরেন্টে কিছু লোক দেখতে পাবেন, কারণ লোকজন থেকে লুকিয়ে থাকা এই সকল মানুষ শুধুমাত্র রাতের বেলায় বের হয়।
হটওয়ান ভিলেজ, চায়না- আবারো চায়নার নাম। আপনারা অনেকেই হয়তো হলিউডের হবিট সিরিজের মুভিটি দেখেছেন। মুভিতে যে ঘর গুলো দেখানো হয়েছে সেগুলো দেখে হয়তো আপনার মনে হয়েছে এরকম ন্যাচারাল ভিউ সম্পূর্ণ দৃষ্টিনন্দন ঘর যেন সব জায়গায় থাকে চায়নার হটওয়ান ভিলেজ প্রকৃতির যেন এক অপূর্ব সৃষ্টি। এখানে আপনি ঘরের দেয়ান বলুন আর ছাদই বলুন শুধু সবুজ আর সবুজ’ই দেখতে পাবেন, এখানে আসার পর আপনার মনে হবে হয়তো আপনি স্বপ্নের কোন দেশে চলে এসেছেন। ১৯৮০ সাল পর্যন্ত এখানে ৩০০০ জেলে পরিবারের বাস ছিল কিন্তু জায়গাটিতে থাকার জন্য তাদেরকে বেশ কিছু অসুবিধার সম্মুক্ষীন হতে হয়, যার কারণে পরবর্তীতে ধীরে ধীরে সবাই গ্রামটি ছেড়ে চলে যায়। এবং ২০০২ সালে অবশেষে গ্রামটি একেবারেই জনশুন্য হয়ে পড়ে, আর তারপর থেক গ্রামটি যেন প্রকৃতির দায়িত্বে লালিত পালিত হচ্ছে।
ওরাডো, ফ্রান্স- এই শহরটি নির্জন হওয়ার পেছনে রয়েছে এক বিরাট ইতিহাস, এটা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়কার, যখন জার্মান সৈনিকরা ফ্রান্সে পৌছে যায়। জার্মান সৈনিকদের মানে (নাৎসিদের) হাতে ফ্রান্সের কিছু নিরীহ মানুষের প্রাণও চলে যায়, তারা ওরাডোর সুর গ্লিনিশ শহরটাকে ওরাডোর সুর ভাইরাস শহর মনে করে আগুন লাগিয়ে দেয়। নাৎসিদের মনে হয়েছিল শহরটির লোকজন হয়ত কোন বড় নেতাকে লুকিয়ে রেখেছে। যার কারণে তারা ৬৪৩ জন যার মধ্যে নারী-পুরুষ ও শিশু সবাইকে নির্মম ভাবে হত্যা করে। শহরটিতে বসবাসকারী একজন ব্যাক্তিকেও নাৎসিরা সেদিন রেহাই দেয়নি। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করে যে শহরটিকে পুনরায় নির্মান করা হবে। কিন্তু সেই সাথে ইতিহাসকে না ভূলে শহরটিকে এভাবেই পুনঃ নির্মাণ করা হয় এবং তখন থেকে এখন পর্যন্ত শহরটি জনমানব শূন্য নির্জন পড়ে রয়েছে।