রনি একজন পুলিশের কর্মরত ওসি । বয়স আনুমানিক পয়ত্রিশ বছর বয়স তার । এতো দিন সে শহরেই ছিলো কিন্তু কিছু দিন আগে তার সিলেটে ট্রান্সফার হয়েছে । আজ রাতে সে সিলেটের উদ্দেশ্যে রওনা দেবে । প্রয়োজনীয় সব কিছু গুছিয়ে নিচ্ছে ।
গুছানো শেষে হোটেল থেকে রাতের খাবার খেয়ে রওনা হলো বাস স্টেশন এর উদ্দেশ্যে । বাস স্টেশনে কিছুক্ষণ বসে থাকার পর বাস আসলো । অতঃপর বাসে উঠলো দেখলো তার সিটটি জানালার পাশেই মনে মনে খুব খুশী হলো রনি । সিটে এসে বসে পরলো রনি । খুব সকালে রনি সিলেট এসে পৌঁছায় বাস থেকে নেমে দেখে কয়েক জন পুলিশ তার জন্য অপেক্ষা করছে । তার পর সে তাদের সামনে যেতেই সবাই তাকে সম্মানের সাথে তাদের সাথে থানায় নিয়ে যায় । কাল থেকে রনির ডিউটি শুরু তাই সে আজ থানায় এসে সবার সাথে পরিচিত হয়ে নেয় ।
অতঃপর শফিক সাহেবের সাথে তার জন্য ঠিক করা একটি বাড়িতে যায়। বাড়িটি দেখতে উনিশ শতকের অনেকটা পুরোনো জমিদার বাড়ির মতো ।বাড়িটির বর্তমান মালিক এর পরিবারে কোনো সদস্য এই বাড়িটিতে নাকি কোনো দিন থাকেনি । পরিবারের সবাইকে কে নিয়ে বাড়ির মালিক থাকেন শহরে ।
রনিকে এসব কিছু এতোক্ষণ বলছিলো শফিক সাহেব । শফিক সাহেব একজন কনস্টেবল বয়স আনুমানিক পঁয়তাল্লিশ এর মতো হবে । প্রায় বিশ বছর ধরে পুলিশের চাকরি করছেন । রনি শফিক সাহেবের সাথে কথা বলতে বলতে অবশেষে সেই বাড়িটির সামনে চলে আসে । আসতেই দেখতে পায় প্রায় ষাঠ বছর বয়সি একজন কাঁধে গামছা ও হাতে একটি লাঠি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে ।
তার সামনে গিয়ে শফিক সাহেব সালাম দিলো এবং তার সাথে মত বিনিময় করলো ।অতঃপর রনির সাথে পরিচয় করিয়ে দিলো । লোকটির নাম জসিম মিয়া তিনি দীর্ঘদিন যাবতএই বাড়িটির দেখভাল করছেন । তার পরিবার বলতে কেউ নেই । এক রোড এক্সিডেন্ট এ নাকি সবাই মারা গেছে ।
অতঃপর রনি ও শফিক কে নিয়ে বাড়িটির ভেতরে প্রবেশ করেন জসিম সাহেব । বাড়িটির ভেতরে প্রবেশ করতেই রনির সব কিছু কেমন যেনো অনুভব হচ্ছে । রনি সেটা বুঝতে পারলো । বাড়িটি দোতলা বিসাল মেঝে আর চারটি বেডরুম রয়েছে এবং প্রতিটি রুমের সাথে একটি করে বারান্দা বাড়িটিতে ছাদ ও নাকি আছে । জসিম মিয়া একে একে দুটি রুম দেখালো । অতঃপর তিন নম্বর রুমে এনে বললো-
জসিম মিয়া : স্যার এটি আপনার রুম আজ থেকে এই রুমে আপনি থাকবেন । আর কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে বলবেন । আমি নিচের ওই ছোট রুমে থাকি কেমন । আর ওই রুমের দিকে যাবেন না । বেশি রাত অব্দি জেগে থাকবেন না এশার নামাজের পর বেড় হবেন না । আমি এখন যাই তাহলে ।
রনি : ওই রুমে কি আছে ? ( জসিম মিয়া কে উদ্দেশ্য করে বললো )
জসিম মিয়া : এতো কিছু বলতে পারবো না । যা বলছি তা শুনলেই হবে । আর এখন আমি যাই কিছু প্রয়োজন হলে আমাকে ডাকবেন । ( একটু রাগান্বিত স্বরে জবাব দিলো )
রনি : ঠিকাছে এখন আপনি যেতে পারেন ।
শফিক সাহেব : স্যার তাহলে আমি এখন আসি । আসা করি আপনার কোনো সমস্যা হবে না । আর কিছু প্রয়োজন পরলে জসিম মিয়া তো আছেন । ওনাকে বলবেন আর আমি তো আছি স্যার । সমস্যা হলে বলবেন । তাহলে এখন আমি আসি স্যার ।
রনি : আচ্ছা এখন আপনি আসতে পারেন ।
সারাদিন আজ রনি অনেক কাজ করেছে । রুমটা পরিষ্কার করে সব কিছু গুছিয়ে রাখতে প্রায় সন্ধ্যা হয়ে গেছে । অবশ্য জসিম মিয়া আগেই সব কিছু গুছিয়ে রেখেছিলো । কিন্তু রনি নিজের জিনিস নিজে গুছিয়ে রাখতেই পছন্দ করে । তাই সে সব কিছু পরিষ্কার করে গুছিয়ে রাখলো ।
ফ্রেস হয়ে রাতে খাবার খেয়ে শুয়ে পরলো । কালকে তার ডিউটিত জয়েন এর প্রথাম দিন তাই একটু তারা তারি শুয়ে পরলো রনি । প্রতিদিন সকালে ডিউটিতে যাচ্ছে আবার সন্ধ্যার আগে চলে আসে । এভাবে প্রায় এক মাস চলে গেলো ।
আজ রনির অনেক কাজ জমা পড়ে গেছে । তাই তার বাড়ি ফিরতে একটু দেরি হবে । অবশেষ কাজ শেষ করে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দিলো । বাড়ির সামনে এসে গাড়ি থামালো ।
গাড়ি থেকে নেমে বাড়ির ভেতরে যাচ্ছিলো । হঠাৎ তার মনে হলো কেউ তাকে দেখছে । আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো কেউ নেই । তারপর ও কেনো জানি মনে হচ্ছে কেউ তাকে দেখছে । কি যেনো মনে করে রনি উপরের দিকে তাকালো । ওপরে তাকিয়ে তো রনির অবাক হয়ে গেলো । ধবধবে সাদা জামা পড়া একটি মেয়ে তার দিকে করুন চোখে তাকিয়ে আছে । মেয়েটির চোখে মুখে তাকিয়ে মনে হচ্ছে মেয়েটি অনেক কষ্টে আছে ।
কিছু বলতে চায় মেয়েটি তাকে । কিন্তু এই বাড়িতে রনি আর ওই জসিম মিয়া ছাড়া কেউ থাকে না । এসবই ভাবছিল রনি । হঠাৎ কারো গলার শব্দ শুনে চমকে উঠে রনি । পাশে তাকিয়ে দেখে জসিম মিয়া তাকে ডাকছে । রনি অতঃপর বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করলো । ফ্রেস হয়ে নিলো তারপর রাতে খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পরলো ।
কিছুক্ষণ পরই রনি গভীর ঘুমে তলিয়ে গেলো । মাঝরাতে হঠাৎ কারো কান্নার শব্দে রনির ঘুম ভেঙে গেলো । কান্নার শব্দটা বাহির থেকে আসছে । রনির একটু ভয় করছে যদিও রনি খুব সাহসি । পুলিশ বলে কথা তবুও কেনো যেনো রনির একটু ভয় করছে । বুকে সাহস নিয়ে গুটি গুটি পায়ে দরজার কাছে গেলো রনি । আস্তে করে দরজাটা খুললো । খুলে আশেপাশে চোখ বুলিয়ে নিলো । কিন্তু কাউকে দেখতে পেলো না ।
কান্নার শব্দ যেনো আরো বেড়ে যাচ্ছে । রনি কান্নার শব্দটা অনুসরণ করতে করতে হঠাৎ থমকে গেলো । দেখলো এইটা সেই রুম যেখানে জমিস মিয়া আসতে নিষেধ করেছিল । কিন্তু এ কি রুমটা তো তালা দেওয়া ছিলো । রুমটাতে তো কোনো তালাই নেই । এবার রনির একটু ভয় করছে ।
কান্নার শব্দটা আরো জোরালো হচ্ছে । মনে হচ্ছে পাশের রুম থেকেই আসছে । রনি আলতো করে ছুঁতেই দরজাটা অনেকটা মেলে গেছে । কিন্তু এ কি এখানে তো কোনো কান্নার শব্দ শোনা যাচ্ছে না । রনি সাথে করে তার ফোনটা নিয়ে এসেছিলো তাই সে ফোনের লাইট টি অন করলো । আশেপাশে ফোনটি ধরতে দেখলো মাকরশার আঁশ দিয়ে পুরো রুমটা
ভরা ।
মনে হয় রুমটিতে কেউ আসে না অনেক বছর ধরে । আর কেমন যেনো একটা গোমাটে গন্ধ । যা রনির কাছে খুব বাজে লাগছে । রনি ভাবলো এখান থেকে এখন বেড় হয়ে যাবে ।
তাই সে যেই না পিছনে ফিরে তাকিয়ে দরজার দিকে যাচ্ছিল । হঠাৎ কেউ যেনো ওর নাম ধরে ডাকলো । রনি থমকে গেলো তার পর মনের ভুল ভেবে যেই আর একটু আগালো ।
কেউ যেনো বলে উঠলো রনি যেওনা আমার খুব কষ্ট হচ্ছে । রনি এবার সত্যি ভয় পেলো আর পিছনে তাকিয়ে দেখলো সেই মেয়েটি । তারপর রনির আর কিছু মনে নেই ।
রনি জ্ঞান হারায় খুব ভোরে রনির জ্ঞান ফেরে আর দেখে রনি তার রুমেই শুয়ে আছে ।
রনির শরীরটা খুব ব্যাথা করছে । মনে হচ্ছে মাথায় আঘাত পেয়েছে । তাই মাথাটা একটু চিন চিন ব্যাথা করছে । রনি ভাবছে কাল রাতে তো সে ওই রুমে গিয়েছিল । আর তারপর সেখানে অজ্ঞান হয়ে পরেছিল তাহলে সে তার রুমে কি করে এলো ।
রনির কেমন যেনো সব কিছু এলো মেলো লাগছে । কিছুই তার মাথায় ঢুকছে না । তাই সে সিদ্ধান্ত নিলো আজ সে থানায় যাবে না । সারাদিন রনি ঘরে বসেই পার করে দিলো । সন্ধ্যা নেমে রাত এলো আগের দিনের মতো আজকেও খাওয়া দাওয়া করে শুয়ে পরলো ।
হঠাৎ করেই মাঝরাতে রনির ঘুম ভেঙে গেলো । রনি মিটি মিটি করে চোখ মেলে দেখলো কেউ তার পায়ের কাছে দাঁড়িয়ে আছে । এবার রনি একটু ভালো করে তাকিয়ে দেখলো এটা সেই মেয়ে যাকে সে কালেক ওই রুমে দেখেছিলো । মেয়েটির দিকে রনি তাকিয়ে দেখলো তার চোখে মুখে কষ্টের ছাপ । যেনো সে অনেক কষ্টে আছে । হঠাৎ করে রনি বলে উঠলো-
রনি : কে আপনি ? আর কি চাই আমার কাছে ?
মেয়েটি : মুক্তি চাই আমার মুক্তি ( করুন স্বরে বললো মেয়েটি )
রনি : কিসের মুক্তি ?
হঠাৎ করে রনির কানে ফজরের আযানের শব্দ ভেসে আসলো আর ঘুম ভেঙে গেলো । ঘুম থেকে উঠে দেখে আশেপাশে কেউ নেই আর আজান দিচ্ছে নামাজের সময় হয়ে গেছে । তাই সে ঘুম থেকে উঠে ফ্রেস হয়ে নামাজ পরতে বেড়িয়ে পরলো মসজিদের উদ্দেশ্যে । নামাজ পরে বাড়ি ফিরে এলো আর বাড়ির চারপাশটা ভালো করে দেখলো । বাড়িটা বেশ বড় সরই বাড়িটির পাশে একটি পুকুর আর একটি বাগান রয়েছে । অতঃপর রনি বাড়ির ভেতর প্রবেশ করলো । তার রুমে চলে গেলে আর ফ্রেস হয়ে সকালের নাস্তা করে নিলো ।
আর এতো দিন ধরে রনির সাথে যা যা ঘটেছে । এসব ব্যাপার জসিম মিয়া কে বলা দরকার ।
রনি তা মনে মনে ভাবছিলো । যেই ভাবা সেই কাজ রনি সিরি বেয়ে নিচে এসে জসিম মিয়ার রুমের কাছে গেলো । রনি রুমের পাশে গিয়ে জসিম মিয়াকে ডাক দিলো । জসিম মিয়া দরজা খুলে বের হয়ে এলো । আর বললো –
জসিম মিয়া : আরে স্যার আপনি এতো সকালে !
কি হয়েছে স্যার কোনো কিছু লাগবে আপনার ?
রনি : নাহ ! কিছু জানার ছিলো আমার আপনার কাছ থেকে ।
জসিম মিয়া : কী জানতে চান আপনি ?
রনি : ওই মেয়েটি কে ?
জসিম মিয়া : ( জসিম মিয়া একটু ভয় পেলো ) কোন মেয়ে স্যার ! এখানে আপনি আর আমি ছাড়া আর তো কেউ থাকে না ।
রনি : ( রনি এবার একটু ধমক দিয়ে বললো ) দেখুন সব সত্যি সত্যি বলে দিন নয়তো আপনাকে জেলে পুরে দেবো । এই বয়সে কি আবার জেলে গিয়ে মরতে চান ।
জসিম মিয়া : না স্যার
রনি : তো সব সত্যিটা বলে দিন আর লুকাবেন না ।
জসিম মিয়া : বলছি স্যার বলছি ! আপনি যে মেয়েটির কথা বলছেন সেই মেয়েটিকে আমিও দেখেছি । মাঝে মধ্যে স্বপ্নে এসে সাহায্য চায় । কিন্তু স্যার আমি কি করে সাহায্য করবো । আর কেনই বা সাহায্য করবো আমি কিছুই বুঝতে পারছি না ।
আর প্রায় লোকই এই বাড়ি পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় মেয়েটিকে কাঁদতে দেখেছে । তা ছাড়া স্যার আমি আর বেশি কিছু জানি না ।
রনি : আচ্ছা ! ঠিকাছে যদি পরে জানতে পারি সব মিথ্যে বলেছেন তো খবর আছে আপনার ।
জসিম মিয়া : স্যার সত্যি বলছি ! আমি যা জানতাম সব আপনাকে বলে দিছি । আমাকে জেলে দেবেন না স্যার ।
রনি : আচ্ছা ! ঠিকাছে এখন আপনি আসতে
পারেন ।
জসিম মিয়া চলে গেলো আর রনি কেমন যেনো রহস্যের গন্ধ পাচ্ছে । পুলিশ বলে কথা রহস্যের গন্ধ পেতেই পারে । রনি কি যেনো ভেবে শফিক সাহেব কে ফোন করলো । রনির ফোন পেয়ে জসিম সাহেব তারাতাড়ি রিসিভ করলো । ওপাশ থেকে রনি –
রনি : হ্যালো!
শফিক সাহেব : হালো স্যার ! কি হইছে স্যার ? এতো সকালে ফোন করলেন কোনো সমস্যা হয়নি তো ?
রনি : নাহ ! একটা ইনফরমেশন এর দরকার ছিলো ।
শফিক সাহেব : হ্যা স্যার ! বলুন কি ইনফরমেশন লাগবে ?
রনি : তেমন কিছু না শুধু এই বাড়ি মালিকের সব তথ্য চাই । আর যতো তাড়াতাড়ি পারো সব তথ্য জোগাড় করে আমাকে পাঠাবেন ।
শফিক সাহেব : জ্বী স্যার ! দুই দিন সময় দিন সব তথ্য জোগাড় করে দিচ্ছি ।
রনি : যতো তারাতাড়ি পারেন পাঠাবেন ঠিকাছে
রাখছি এখন ।
রনি ফোন কেটে দিলো আর আজকে ও থানায় যাবে না ভাবছে রনি । থানায় না গিয়ে রনি আশেপাশের গ্ৰাম গুলো একটু ঘুরে ঘুরে দেখলো । একটু পর রনি বাড়ি ফিরে গেলো । রাড়িতে গিয়ে রনি একটু বিশ্রাম নিতে গাটা এলিয়ে দিলো বিছানায় । একটু পর রনির চোখে ঘুম চলে আসলো । চোখটা বন্ধ করতেই কিছুক্ষণ পরে ভেসে উঠলো সেই মেয়েটির মুখ । বার বার রনিকে বলছে মুক্তি চাই মুক্তি চাই । আমাকে সাহায্য করুন একটু । আর আর মেয়েটি জোরে জোরে কান্না করছে যেনো রনির কানের পর্দা ফেটে রক্ত বের হচ্ছে । এতো জোরে মেয়েটি কান্না করছে ।
রনি এসব দেখে ঘুম থেকে ধরফরিয়ে উঠে বসলো । জোরে জোরে শ্বাস নিচ্ছে রনি । কি হচ্ছে রনির কিছুই মাথায় আসছে না তাই সে সিদ্ধান্ত নিলো আজ রাতে সে ওই বন্ধ রুমে যাবে । সেখানেই হয় তো রনির সব প্রশ্নের জবাব পাবে । তাই সে অপেক্ষা করতে থাকলো সেই কাঙ্ক্ষিত সময়ের । সন্ধ্যা পেরিয়ে রাত নামলো রাতের খাবার খেয়ে শুয়ে পরলো রনি । কিন্তু আজ সে জেগে আছে কারন আজ তাকে জানতেই হবে এসব কি হচ্ছে তার
সাথে । তাই সে ঘুমের ভান ধরে শুয়ে রইলো । মাঝ রাতে হঠাৎ আবার সেই কান্নার শব্দ ভেসে আসলো তার কানে । আজকের কান্নাটা বেশ জোরালো অন্য দিনের চেয়ে । আর শুয়ে না থেকে রনি বিছানা থেকে উঠে পরলো আর সাথে ফোনটা নিয়ে নিলো ।
রনি তারাতাড়ি করে ওই রুমের কাছে চলে গেলো গিয়ে দেখলো সেখানে তালা দেওয়া । রনি তো ভুলেই
গেছিলো জসিম মিয়ার কাছ থেকে চাবিটা আনতে ।
আর কিছু না ভেবে রনি সিরি বেয়ে নিচে চলে গেলো জসিম মিয়ার রুমের পাশে । গিয়ে দরজায় টোকা দিলো কিন্তু জসিম মিয়া দরজা খুঁজছেন না । কিছুক্ষণ দরজায় টোকা দিতেই দরজা খুলে দিলো জসিম মিয়া ।
জসিম মিয়া : আরে স্যার ! কি হইছে এতো রাতে ?
কোনো সমস্যা হইছে না কি আবার ?
রনি : আরে না ! কোনো সমস্যা নেই । ওই আমার পাশের রুমের চাবিটা দেন জলদি ।
জসিম মিয়া : না স্যার ! ওই রুমের চাবি আমার কাছে নেই ।
রনি : ( একটু রেগে বললো ) এতো বেশি বলেন কেনো হ্যা । আপনাকে বলছি চাবি আছে কি নেই ।
জসিম মিয়া : না স্যার !
রনি : জ্বলদি চাবি দেন ! সময় কম জলদি করেন । নয়তো জেলে পুরে দেবো ।
জসিম মিয়া : আচ্ছা ! স্যার দিচ্ছি একটু দারান।
অবশেষে রনিকে জসিম মিয়া চাবিটা এনে দিলো ।সাথে তিনি ও নাকি যাবেন । তাই তারা দুজনে মিলে সিরি বেয়ে দুতলায় উঠে পরলো । রনির রুমের পাশের সেই রুমের দরজার সামনে দুজনে গেলো । অতঃপর রনি চাবি দিয়ে তালাটি খুলে ফেললো ।
তালা খুলে দজনে ভতরে প্রবেশ করলো । হঠাৎ কান্নার আওয়াজ বন্ধ হয়ে গেলো । জসিম মিয়া ভিতু স্বরে বললো-
জসিম সাহেব : স্যার ! চলুন আমরা চলে যাই এখান থেকে । আমার খুব ভয় করছে এখানে ।
রনি : চুপ করে আমার সাথে চলুন ।
একটু ভেতরে যেতেই দেখতো পেলো সেই মেয়েটি বসে আছে মাথা নিচু করে । রনি একটু কাছে গিয়ে বললো-
রনি : এই যে শুনছেন ! কে আপনি ? আর কি চাই আপনার ? আর আমার পিছু নিয়েছেন কেনো ?
মেয়ে : আমাকে মুক্ত করে দিন না ।
রনি : কিন্তু কিভাবে আপনাকে আমি সাহায্য করবো ? আপনি কে ? কি আপনার পরিচয় ?
মেয়ে : আমি এই বাড়ির মালিকেকর প্রথম স্ত্রী ।
রনি : কি বলছেন এসব সব !
মেয়ে : বিশ্বাস না হলে কালকে শফিক সাহেব কে জিজ্ঞেস করবেন ।
রনি : আচ্ছা ! সেটা কালকেই জানতে পারবো ।
এখন যেগুলো জানতে চেয়েছি বলেন ।
মেয়ে : হুম বলছি ! এই বাড়িটি আমার বাবার । আর আমার নাম মায়া ।