“মা”
আসলে মা শব্দের অর্থ কি? “মা” শব্দটি যতটা সংক্ষিপ্ত এর অর্থটা ততটা জটিল গুরুত্বপূর্ণ। দুর্ভাগ্য তাদের যাদের জীবনে মা বলতে এক অমূল্য সম্পদ নেই। ভাগ্যবানদের মধ্যে আমিও সেই একজন যার “মা” আছেন। আসলে আমার মায়ের বিষয় কি বলবো? যাই বলব শব্দ, বাক্য ভাষা সবই কম পড়বে মায়ের ভালোবাসা ও গুরুত্বের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে।
পৃথিবীতে প্রভু সব সময় থাকতে পারবেন না। তাই আমাদের যত্নের জন্য তিনি মা বানিয়েছেন। স্বার্থপর এই দুনিয়াতে যদি কারো নিঃস্বার্থ ভালোবাসা থেকে থাকে তবে সেটি হচ্ছে মায়ের ভালোবাসা। ঠিক তেমনি আমার মায়ের ভালোবাসাটা আমার প্রতি নিঃস্বার্থ। সন্তান যেমনি হোক না কেন (কালো, সুন্দর, খাটো, বেয়াদব, অনাদর্শ, কৃপণ) তবুও মা তার সন্তানকে আদর যত্নে বড় করে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে নিজের সারা জীবন বিলিয়ে দেন।
ভালোবাসা কি অন্ধ ভালোবাসা বলা হয় কেন সেটার সঠিক উত্তর কি কেউ দিতে পারবে? সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসাটাই হচ্ছে অন্ধ ভালোবাসা। কারণ সন্তান যখন মায়ের গর্ভে থাকে, তখন গর্বে তার উৎপত্তি হওয়ার পূর্বে থেকেই মা তার সন্তানের প্রতি যত্নশীল হওয়া শুরু করে দেন। আমাদের মা আমাদের খুশির জন্য জীবনে কত সংগ্রাম করেন। ১০ মাস পেটে রেখে নিজের সৌন্দর্যের প্রতি খেয়ালও রাখেন না সে হচ্ছে মা। ছোট থেকে জীবনের প্রতিটি ধাপে মা না কেবল হাঁটতে, কথা বলতে, পড়াশোনা করতে শেখায় বরং জীবনকে সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে অনুপ্রেরনা দেন। তবুও এত কিছুর পরেও ঘৃণিত, অভাগী সেসব মা যাদের সন্তান তাদেরকে অবহেলা করে। অবাধ্য থাকে, বৃদ্ধ বয়সে তাদের সেবা করা থেকে বঞ্চিত করে তাদের বৃদ্ধাশ্রম পাঠিয়ে দেয়। তারপরও সেই দয়াময়ী মা তাদের সন্তানদের কখনো খারাপ বলেন না, ঘৃণা করেন না। আমরা কষ্ট পেলে বা ব্যথা পেলে যতই চেষ্টা করিনা কেন মনের কথা লুকাবো বা কোন কথা গোপন রাখবো মা তা সহজেই বুঝে ফেলেন। কে বলে ধন-সম্পদ, গাড়ি-বাড়ি, টাকা-পয়সা, দালান থাকলেই মানুষ ধনী, সুখী হয়? ধনী সে নয় যার এতকিছু থাকতেও মা নেই। বরং সবচেয়ে বড় কাঙাল ফকির সে যার মা নেই। যার কিছু নেই কিন্তু মা আছেন সেই সবছেয়ে ধনী, সেই সবচেয়ে সুখী মানুষ। মায়ের আশীর্বাদ দোয়া কখনো বিফলে যায়না। যেকোনো বিপদকে দূরীভূত করতে সহায়তা করে।
যে ছেলে তার মাকে শ্রদ্ধা করে না, সম্মান করে না। সে কোনদিন কোন মেয়েকে ভালোবাসতেও পারবে না। আমরা কাউকে ভালোবাসলে তাকে প্রকাশ করি। মাকে যতই ভালোবাসি না কেন তা সহজে প্রকাশ করি না। তবুও মা অন্তর থেকে বুঝে ফেলেন। মায়ের থেকে বেশি কাউকে ভালোবাসা উচিত নয়। মায়ের সমতূল্য কেউ নেই আর কখনও হতেও পারবে না। আমি মায়ের সাথে মাঝে মাঝে চিল্লিয়ে কথা বলি। ভুলে যাই আমার খারাপ ব্যবহার তিনি কতটা কষ্ট পেতে পারেন। অনুশোচনা বোধ করলেও ক্ষমা চাওয়ার আগে মা ক্ষমা করে দেন। মায়ের হৃদয় আসলেই মহান। তাইতো সৃষ্টিকর্তার পরের স্থানটা মাকেই দেওয়া হয়েছে।