সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, প্রথমে প্রত্যাশা জ্ঞাপন করছি- শুভ হোক আপনাদের জীবন। আমরা সবাই “ভয়” “ক্ষয়” ও “জয়” শব্দ তিনটির সাথে সুপরিচিত। শব্দ তিনটির মধ্যে শাব্দিক বা ছান্দিক মিল থাকলেও পারস্পরিক যোগসূত্র সাধনে বা বাস্তব জীবনে প্রয়োগের ক্ষেত্রে কখনো চুড়ান্ত সফলতা আবার কখনো চুড়ান্ত বিফলতা অর্জিত হয়। আমরা মনুষ্য জীব। এজন্য মহান স্রষ্টা থেকে প্রাপ্ত আমাদের কিছু জৈবিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। উক্ত জৈবিক বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্য থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ২ টি বৈশিষ্ট্য হলো ” ভয়” ও “ভরসা”। মানুষ ছাড়াও অন্যান্য সকল জীবের মধ্যে এরকম হাজারো জৈবিক বৈশিষ্ট্য রয়েছে। জৈবিক বৈশিষ্ট্যের সমাহার মানুষসহ সকল জীবকে বৈচিত্র্যময় করে তোলে।
“ভয়” নামক এই জৈবিক বৈশিষ্ট্য মানুষ সহ সকল জীবের মধ্য আল্লাহ্ প্রদান করেছেন। কারণ ভয়ের দ্বারা মানুষ জীবনে চলার পথের গতি পরিবর্তন করতে। মানুষ সবসময় গতিশীল না থাকলেও তার অন্তর সবসময় স্থির থাকতে পারে না। সকল মানুষের অন্তর তার স্বীয় কাজে বা স্বপ্ন বাস্তবায়নে অস্থিরতায় ভোগে বা সবসময়ই গতিশীল থাকে। অন্তর বা মনের এই অদৃশ্য গতিকে রুখতে দৃশ্যমান কোন দৃশ্যমান শক্তির প্রয়োজন হয় না। প্রয়োজন হয় অদৃশ্যমান এক শক্তি তার নাম হলো ভয় । একমাত্র ভয়ই পারে আমাদের অন্তরের অশুভ কর্মপরিকল্পনা কে পরিবর্তন করে। আর যদি অন্তরের কর্মপরিকল্পনা শুভ ও কল্যাণকর হয় তবে উক্ত কর্মপরিকল্পনা কে সফল করে আর একটি অদৃশ্য শক্তি তার নাম হলো- ভরসা ।
তাহলে বোঝা গেল ভয় ও ভরসা নামক গুরুত্বপূর্ণ এই জৈবিক বৈশিষ্ট্য দুটি আমাদের অন্তরের কর্মপরিকল্পনাকে পরিবর্তন করে সফলতা অর্জনে সহোযোগিতা করে।প্রতিটি মানুষ ভয় ও ভরসার সমন্বয় ঘটিয়ে সবসময় নিজের মঙ্গল কামনা করে। এখন আসুন ভয় ও ভরসার স্বার্থক সমন্বয়ে বাস্তব জীবনে কী অর্জিত হয় তা জেনে নিই।
আমরা যখন কোন কাজে নিজেকে নিযুক্ত রাখি তখন ঐ কাজ সম্পর্কে একটা সুস্পষ্ট ধারনা আমাদের অন্তরে ভাসমান থাকে। কাজটি যদি বিপদসংকুল বা রিস্কি হয় তাহলে আমরা ভয়ে ভয়ে সতর্কতার সাথে করি। এ কাজের ফলাফল হতে পারে সফল বা আশানুরূপ আবার হতে পারে বিফল বা আশাহত ব্যর্থ কাজ।
ব্যর্থতার গ্লানি আমরা কেউ গায়ে মেখে লোকসমাজে বিচরণ করতে চাই না। এজন্য ভয়ে থেকে নিজের দায়িত্ব টাকে সঠিকভাবে পালন করার চেষ্টা করি। এই চেষ্টাই আমাদের জীবনে প্রত্যাশিত “জয়” নামক সোনার হরিণটি অর্জন করার পথকে সুগম করে দেয়। আর এই অর্জিত সোনার হরিণ বা জয়ই হলো আমাদের জীবনের সফলতা। আবার কাজটি যদি ব্যর্থতায় পর্যবেশিত হয় তাহলে আমাদের জান ও মালের সমূহ “ক্ষয়” বা ক্ষতি হয়ে যায়।
পক্ষান্তরে আমাদের কাজটি যদি সুস্পষ্ট ভাবে বিপদমুক্ত কাজ হয় তবে আমরা শতভাগ ভরসা বা আস্থা নিয়ে সম্পূর্ণ করি। ফলে শতভাগ সফলতা অর্জন করি। এটাই আমাদের প্রত্যাশা বা কামনা। স্বয়ং আল্লাহ্ আমাদের নির্দেশ দিয়েছেন আমরা যেন ভয় ও আশা ( ভরসা ) নিয়ে তাকে স্বরণ করি বা ডাকি। তাহলে আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের কাজে সফল হবো ইনশাআল্লাহ।
তাই আসুন ভয়, ভরসা, আশা ইত্যাদি নিয়ে সতর্কতার সাথে নিজ দায়িত্ব কে পালন করি। তাহলে আমাদের বিজয় সুনিশ্চিত।