Cheap price backlink from grathor: info@grathor.com

যে গল্প একবার পড়লে, হৃদয় কাঁদে বার বার পড়তে।

হযরত আবু যর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাতে আমি একবার বের হলাম তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে একাকী চলতে দেখলাম। তার সঙ্গে কোন লোক ছিল না। আমি মনে করলাম তার সঙ্গীকেও চলুক হয়তো তিনি তা পছন্দ করবেন না।
তাই আমি চাঁদের ছায়াতে তার পিছনে পিছনে চলতে লাগলাম।
তিনি পিছনের দিকে তাকিয়ে আমাকে দেখে ফেললেন।

তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, এ কে আমি বললাম আমি আবু যর।
আল্লাহ তাআলা আমাকে আপনার জন্য উৎসর্গিত করুন,
তিনি বললেন হে আবু যর এসো।
আমি তার সঙ্গে কিছুক্ষণ চললাম
তারপর তিনি বললে প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কেয়ামতের দিন সল্পাধিকারী হবে।
অবশ্য যাদের আল্লাহ সম্পদ দান করেন,
এবং তারা সম্পদকে তার ডানে-বামে আগেও পিছনে ব্যয় করে।
আর মঙ্গলজনক কাজে লাগায়, তারপর আমি আরো কিছুক্ষণ তার সঙ্গে চলার পর তিনি আমাকে বললেন তুমি এখানে বসে থাকো।

একথা বলে তিনি আমাকে চতুর্দিকে প্রস্তুত গ্যাঁড়া একটি খোলা জায়গায় বসিয়ে দিয়ে বললেন আমি ফেরা না আসা পর্যন্ত তুমি এখানেই বসে থেকো
তিনি বললেন এরপর তিনি প্রস্তর প্রান্তরের দিকে চলে গেলেন। এমনকি তিনি আমার দৃষ্টির অগোচরে চলে গেলেন
এবং বেশ কিছুক্ষণ অতিবাহিত হয়ে গেলেো। অতঃপর তিনি ফিরে আসার সময় আমি তাকে বলতে শুনলাম যদিও সে চুরি করে যদিও সে যিনা করে।
তারপর তিনি যখন ফিরে এলেন তখন আমি আর ধৈর্য ধারণ করতে না পেরে তাকে জিজ্ঞাসা করতে বাধ্য হলাম,

যে ইয়া রাসুল আল্লাহ।
আমাকে আপনার প্রতি কোরবান করুন।
আপনি এই প্রস্তুর…
প্রান্তরে কার সাথে কথা বললেন কাউকে তো আপনার কথার উত্তর দিতে শুনলাম না।
তখন তিনি বললেন তিনি ছিলেন জিবরাঈল আলাইহিস সালাতু সালাম।
তিনি এই কংকরময় প্রান্তরে আমার সাথে এসেছিলেন।

তিনি বললেন আপনি আপনার উম্মতদের সুসংবাদ দিবেন যে,
যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে।
আমি জিজ্ঞাসা করলাম, হে জিবরাঈল যদিও সে চুরি করে, আর যদিও সে চুরি করে, তিনি বললেন হাঁ।
আমি বললাম যদিও সে চুরি করে,
আর জিনা করে,
আমি বললাম যদিও সে চুরি করে আর যিনা করে তিনি বললেন হাঁ।
আবার আমি বললাম যদিও সে চুরি
করে,
আর যিনা করে তিনি বললেন হাঁ যদিও সে শরাব পান করে।
কত সুন্দর একটি উপদেশ আমরা পেলাম আসুন আমরা সকলেই আমাদের মহান সৃষ্টিকর্তার দিকে রযু হই এবং তার গুনো গান গাই।

( আমরা এ বিষয়ে আর একটি বাণী শুনবো)

যায়েদ ইবনে ওহাব রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন আবু যর রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন,
আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর সঙ্গে মদিনার প্রান্তরে হেঁটে চলেছিলাম।
ইতিমধ্যে ওহুদ আমাদের সামনে এলো।
তখন তিনি বললেন হে আবু যর আমি বললাম লাব্বাইক ইয়া রাসুল আল্লাহ তিনি বললেন আমার নিকট এই ওহুদ পরিমাণ শুনা হোক আর তা ঋণ পরিশোধ করার উদ্দেশ্য রেখে দেওয়া ব্যতীত একটি দিনার দেখে আমার কাছে জমা থাকুক আর এই অবস্থায় তিন দিন অতিবাহিত হোক তা আমাকে আনন্দিত করবে না।
তবে যদি আমি তা আল্লাহর বান্দাদের মধ্যে এভাবে তাকে ডান দিকে বাম দিকে পিছনের দিকে বিতরণ করে দেই তা স্বতন্ত্র।
এরপর তিনি কিছুক্ষণ পর আবার বললেন জেনে রেখো প্রাচুর্যের অধিকারীরাই কিয়ামতের দিন স্বল্পার্ধিকারী হবে।
অবশ্যই যারা এভাবে এভাবে এভাবে ডানে-বামে ওর পিছনে ব্যয় করে তারা এর ব্যতিক্রম।
কিন্তু এরকম লোক অতি অল্প।
তারপর আমাকে বললেন তুমি এখানে থাকো আমি ফিরে না আসা পর্যন্ত এখানেই অবস্থান করবে। অতঃপর তিনি রাতের অন্ধকারে চলে গেলেন।
এমনকি অদৃশ্য হয়ে গেলেন।
এরপর আমি একটি উচ্চ শব্দ শুনলাম।
এতে আমি শঙ্কিত হয়ে পড়লামযে।
সম্ভবত তিনি কোন শত্রুর সম্মুখীন হয়েছেন।
এজন্য আমি তার কাছে যেতে চাইলাম।
কিন্তু তখনই আমার স্মরণ হল যে তিনি আমাকে বলে গিয়েছেন যে আমি না আসা পর্যন্ত তুমি আর কোথাও যেও না।
তাই আমি আর সে দিকে গেলাম না ইতিমধ্যে তিনি ফিরে এলেন।
তখন আমি বললাম,
ইয়া রাসূলাল্লাহ আমি একটা শব্দ শুনি তো শঙ্কিত হয়ে পড়েছিলাম।
বাকি ঘটনা বর্ণনা করলাম।
তিনি জিজ্ঞাসা করলেন তুমি কি শব্দ শুনেছ আমি বললাম হা তিনি বললেন তিনি জিবরাঈল আলাইহিস সালাতু ওয়াস সালাম।

তিনি আমার কাছে এসে বললেন আপনার উম্মতের কেউ যদি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করা অবস্থায় মৃত্যুবরণ করে তবে সে জান্নাতে দাখিল হবে।

আমি তাকে জিজ্ঞাসা করলাম যদি সে জী যিনা করে এবং যদি সে চুরি করে।
তিনি বললেন যদিও সে যিনা করে এবং যদিও সে চুরি করে।

সুবহানাল্লাহি ওয়া বিহামদিহি সুবহানাল্লাহিল আযীম।

(সম্পদ সঞ্চয়ের ব্যাপারে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর দৃষ্টিভঙ্গি, কেমন ছিলেন আসুন আমরা সে বিষয়ে একটু জানি)
আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু তা’আলা আনহু বলেন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন আমার জন্য ওষুধের সমতুল্য স্বর্ণ যদি হয় আর এর কিয়দংশ তিনদিন অতীত হওয়ার পর আমার কাছে থাকবে না তাতেই আমি সুখী হব।
তবে যদি ঋণ পরিশোধের জন্য হয় তবে তা ব্যতিক্রম।
রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাতু সালাম বলেছেন প্রকৃত ধনী হল অন্তরের ধনী।

কে উত্তম?…
হযরত ইসমাইল রহমতুল্লাহি আলাইহি ইবনে সায়েদী রাযিআল্লাহু তা’আলা আনহু থেকে বর্ণনা করেন।
এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে গেলেন।
তখন তিনি তার কাছে বসা একজনকে জিজ্ঞাসা করলেন,
এই ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার মন্তব্য কি তিনি বললেন,
এই ব্যক্তিত্ব একজন সম্ভ্রান্ত পরিবারের লোক।
আল্লাহর কসম তিনি এমন মর্যাদাবান যে কোথাও বিয়ের প্রস্তাব দিলে তা গ্রহণযোগ্য।
আর কারো জন্য সুপারিশ করলে তা অগ্রহণযোগ্য।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম নিরব থাকলেন।
কিছুক্ষণের মধ্যেই আরেক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর পাশ দিয়ে গেলেন।

তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বসা লোকটিকে জিজ্ঞাসা করলেন,
এই ব্যক্তি সম্পর্কে তোমার অভিমত কি?
তিনি বললেন ইয়া রাসূলাল্লাহ এই ব্যক্তিত্ব এক গরীব মুসলমান।
এমন ব্যক্তি যে,
যদি সে বিয়ের প্রস্তাব দেয় তা গ্রহণযোগ্য হবে না।
আর সে যদি কারো সুপারিশ করে তা কবুল হবে না।
এবং যদি সে কোন কথা বলে তবে তা শোনার যোগ্য হয় না।
তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন,
এ দুনিয়া ভরা আগের ব্যক্তি থেকে এই ব্যক্তি উত্তম।

**********জাগতিক মোহের ক্ষতি…………………..
জাগতিক মহাদুর্যোগের পথ সুগম করে।
আর যুহুদ জান্নাতের পথ মসৃণ করে।
মদের নেশার চেয়ে দুনিয়ার নেশা অধিকতর ভয়াবহ।
কারণ মাদকাসক্ত ও মাতাল লোক সাধারণত আলো ফিরে পায়।
পক্ষান্তরে দুনিয়ার মোহে মাতাল ব্যক্তি কবরের অন্ধকারে যাওয়ার আগ পর্যন্ত জ্ঞান ফিরে পায় না।
মূলত দুনিয়ার মোহ সকল পাপের মূল।

তার কারণ কি জানেন আসুন শুনি তার কারণগুলো।….
নম্বর এক, দুনিয়ার ভালোবাসা দুনিয়াকে বড় করে তুলে।

অথচ এই দুনিয়া আল্লাহ তাআলার নিকট ঘৃণিত।
আর আল্লাহর কাছে অতি ঘৃণিত কোন বস্তুকে অতি মূল্যবান মনে করাই সবচেয়ে বড় গুনাহ।

২) অপ্রয়োজনীয়’ দুনিয়ার মোহ আল্লাহর অপছন্দনীয়।
আল্লাহ তাআলার অপছন্দনীয় কোন কাজ পছন্দ করা আল্লাহর বিরাগ ভাজন হওয়ার নামান্তর।

৩) দুনিয়ার মোহ থাকে সবকিছুর কেন্দ্রবিন্দু দুনিয়া বানিয়ে ছাড়বে।
সুতরাং পারোলৌকিক কাজকর্মেও সে দুনিয়া খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করবে।
এতে মৌলিক উদ্দেশ্যই নষ্ট হয়ে যাবে।

৪) দুনিয়ার ভালোবাসা পরকালের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
যার ফলে অতি গুরুত্বপূর্ণ কাজ ও তার নিকট গুরুত্বহীন হয়ে যাবে।
এতে বাহ্যিকভাবে আমল কারী হলেও অন্তঃসার শূন্য হয়ে যাবে তার মানসিক অবস্থা।

৫) দুনিয়ার প্রতি তার অনুরাগ, তাকে দুনিয়ার কাজের জন্য অতি ব্যস্ত করে তুলবে।
আবার এইভাবে তার মন-মস্তিষ্কে দুনিয়ার বিষয়াদি ঘুরপাক খাবে।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ বিষয়ে বলেন যা হাদীস শরীফে এসেছে।

নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, পরকাল যার লক্ষ্য উদ্দেশ্য আল্লাহ তাআলা তার অন্তরকে প্রাচুর্যপূর্ণ করে দেন।
তার বিক্ষিপ্ত কাজকর্ম বুঝিয়ে দেন এবং জাগতিক সম্পদ তার কাছে লাঞ্ছিত হয়ে আসে।
পক্ষান্তরে দুনিয়া যার প্রধান লক্ষ্য উদ্দেশ্য আল্লাহ তাআলা দারিদ্রতাকে তার চোখের সামনে করে দেন।
কাজকর্ম এলোমেলো করে দেন আর দুনিয়ার সম্পদ কেবল ততটুকুই পায় যা তার ভাগ্য নির্ধারিত ছিল।
জাগতিক এই মহের দরুন পরকালের ঘাটে ঘাটে তাকে কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হতে হবে।

পবিত্র কুরআনুল কারীমে এই বিষয়ে বর্ণনা এসেছে। সুতরাং তাদের সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি আপনাকে যেন বিমুগ্ধ না করে।
আল্লাহ তাআলা তো এর দ্বারা তাদেরকে পার্থিব জীবনে শাস্তি দিতে চান।
তারা কাফির থাকা অবস্থায় তাদের আত্মা দেহ ত্যাগ করবে।
দুনিয়ার অতিশয় আসক্ত ব্যক্তি দুনিয়াকে পরকালের ওপর প্রাধান্য দিয়ে সৃষ্টির সেরা বোকাই পরিণত হয়েছে।
নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দিয়েছে।
কারণ সে বাস্তবতার বিপরীত ছায়াকে।
জাগরণের উল্টা নিদ্রা কে,
চিরস্থায়ী নিয়ামত রাজি ছেড়ে ক্ষণস্থায়ী জগতের বিপরীত সামান্য ভঙ্গুর দুনিয়াকে প্রাধান্য দিয়েছে।
চিরসুখী এর বাসস্থান এর বদলে নিয়েছে–
নিদ্রা স্বপ্ন কিংবা ম্রিয়মাণ ছায়া বুদ্ধিমান এমন ধোকা খায় না।
আজকে এ পর্যন্তই, দেখা হবে অন্য সময় অন্য কোন বিষয় নিয়ে।
সকলেই ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন।

আল্লাহ হাফেজ।
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু।

Related Posts

14 Comments

  1. যে ব্যক্তি আল্লাহর সঙ্গে কাউকে শরীক না করে মারা যাবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে

Leave a Reply

Press OK to receive new updates from Firstsheba OK No