আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ
রাগ তো সবাই করতে পারে, কিন্তু রাগকে কন্ট্রোল বা সুন্দর আচরণ করতে পারে কয়জন! আপনি অন্য কাউকে রাগের বশতঃ হাতের পিটুনি দিয়ে যতটা আঘাত করবেন, তার চেয়ে আপনার মুখের খারাপ ভাষায় লোকটার খুব আঘাত লাগবে। একজন মানুষকে শত্রু বানানো যতটা সহজ, তার চেয়ে একজনকে বন্ধু বানানো খুব কঠিন।
অনেকে মাইন্ড করতে পারেন যে কেন আমি এ সমস্ত কথা গুলো বললাম! এর কারণ হলো, আমি একজনের উপর ক্ষমতা প্রয়োগ করে মেরে ধরে তাকে কষ্ট দিয়ে যতটা ভালো পথে আনতে পারবো; এর চেয়ে সুন্দর আচরণে তাকে ভালো কথার মাধ্যমে বুঝিয়ে শুনিয়ে ভালো পথে আনাটা একটু উত্তম হতে পারে। তবে একটা কথা মনে রাখতে হবে, আমি যে একজনকে মনে কষ্ট দিয়ে ভালো পথে আনলাম; হ্যা, তাকে ভালো এনেছি কিন্তু সে যদি আমার বন্ধুও হয়ে থাকে মনে মনে সে আমায় বড় শত্রু ভাবতে শুরু করে। আস্তে আস্তে এক সময় সে আমার প্রকাশ্য শত্রুতে পরিণত হতে শুরু করে।
আবার আমি যে কাউকে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে ভালো কথা বলে ভালো পথে আনলাম; এতে সে যদি আমার বড় শত্রুও হয়ে থাকে তবুও সে আমার বন্ধু হতে শুরু করে। রাগ দেখিয়ে কাউকে বন্ধু থেকে শত্রু বানানো যতটা খারাপ, এর চেয়ে সুন্দর আচরণের মাধ্যমে কাউকে শত্রু থেকে বন্ধু বানানো অনেক উত্তম। কথায় আছে, “এমন জীবন তুমি করিও গঠন – মরণে হাসিবে তুমি কাঁদিবে ভুবন।” দুনিয়ায় চলতে হলে আগে নিজেকে পরিশুদ্ধ বা ভালো হতে হবে, তবেই তো অন্যকে ভালো বন্ধু বানানো সম্ভব।
আমাদের মধ্যে অনেকেই আছে হুট করেই রাগ করে; এটা কিন্তু ঠিক না। কারণ, এর আগে লোকে আপনাকে যতটা ভালো মনে করত; এই হুট করে রাগ করার কারণে লোকে আপনাকে মনে মনে ঘৃণা করতে শুরু করে। এক পর্যায়ে নিজের আপন বন্ধুও শত্রু হতে শুরু করে। রাগ তো সবারই আসে, এর জন্য রাগটাকে প্রকাশ করা যাবে না। রাগ দমানোর জন্য অবিরাম চেষ্টা করে যেতে হবে। শায়েখ সাদী (রহঃ) এর অমীয় বাণী, “শাসক যখন ভালো হয় জনগনও তখন ভালো হতে শুরু করে, কিন্তু শাসক যখন বিগড়াতে শুরু করে তখন জনগনও বিগড়াতে শুরু করে।” এর প্রতিফলন কিন্তু আমরা আমাদের পরিবারের মধ্যেও হতে দেখি। পিতা মাতা যদি ভালো হয় তো সন্তানও তাদের ভালো হয়। আর পিতা মাতা যদি বদমেজাজি হয় তখন সন্তানেরাও বদমেজাজি স্বভাবের হতে শুরু করে।
এই জন্য আমাদের সবাইকে রাগ নয়, বরং রাগকে কন্ট্রোল করতে শিখতে হবে। আজ এখানেই পরবর্তীতে আবার ভিন্ন কোনো পোস্ট নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হবো। ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন। আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ। খোদা – হাফেজ।