রাত জাগার সুখানুভূতি
পৃথিবীর অংশ দুটি, একটি দিন, একটি রাত। কেউ কেউ এই দুই অংশের মাঝেই রাতকে বেছে নেন জীবনের অনুভূতি গুলোতে শান দেয়ার জন্য। যা দিনে অনুভব করা যায়, একাকী নির্জন রাতে তা খুব কাছে এসে ধরা দেয়। নিজেকে চেনা যায়, নিজের ভেতরে থাকা স্বপ্ন গুলো জেগে উঠে, নিজের ভেতরের সম্ভাবনাকে জানা যায় রাতেই।
পুরো পৃথিবী যখন নিস্তব্ধ, তখন একলা একা রাত যেন মনে হয় স্বর্গপুরী। পৃথিবীর মালিক যেন নিজেই, আর নিজের আয়ত্বে থাকা পৃথিবীকে উপভোগের অনুভূতিটা নিশ্চয় কল্পনাতীত। রাত দিয়ে যায় স্বপ্ন সাজাবার সময়, ঘুমন্ত সত্তাকে জাগ্রত করার এক অপার সম্ভাবনা।
নিরব,শব্দহীন, কোলাহল শূন্য পরিবেশে নিজের অস্তিত্বকে অনুভব করার সময় হচ্ছে রাত। কোথাও কেউ নেই,এ যেন নিজেকে চেনার মোক্ষম সময়।
রাতকে উপভোগ করতে সবাই পারে না, নিজেকে জানতে হলে, জানতে হবে রাতকে। সূর্যের আলোর পিছনের পৃথিবিটা একটু অন্যরকম, দিনের আলোয় ও আধাঁর থাকে যার জন্য অনেক কিছুই দেখা যায়, সেই আধাঁর কে আলোকিত করে রাত, রাতের আধাঁরেও আলো আছে, শুধু থাকতে হয় দেখার চোখ।
ঘড়ির ঠকঠক শব্দ, মনে হয় ঘন্টা বাজছে জীবনের, আর এ ঘন্টার তালে হৃদয় নাচে মহানন্দে, উতলা হয় মন, পৃথিবীর ঠিক একপ্রান্তে এই শব্দটাই যেন আছে, আর কোথাও কোনো শব্দ নেই পৃথিবীর।
থরে বিথরে থাকা স্বপ্ন গুলো, ফাল্গুনী হাওয়ায় দোলা খায়, সাজানোর বাসনা জাগে, স্বপ্ন সাজানোর সময় যে এই রাত, চিন্তার গভীরে প্রবেশ করা যায়, সেখানে অজানা জগতের সন্ধান মিলে।
কোথাও কোনো শব্দ হলেই শিউরে উঠে শরীর, ভয়ার্ত এক অনুভূতি জেগে উঠে, যাতে থাকে কিছু ভয়, কিছু আতঙ্ক, কিছু আনন্দ, সব মিলিয়ে অপ্রকাশিত এক অনুভূতি,যাকে দেয়া যায় না ভাষা, যা শুধু একান্তই নিজের।
রাত দিয়ে যায় জীবনের অপার আনন্দ, কিছু স্বপ্নকে জাগিয়ে দিয়ে যায়, কিছু ভাবনাকে পূর্নতা দিয়ে যায়, কিছু অগোছালো বাসনাকে দিয়ে যায় গুছিয়ে, চিন্তার ঠিক সে জায়গাতে আঘাত করে যেখানে যাওয়া আসলেই অকল্পনীয়।
তারা ভরা রাত, মৃদু হাওয়ার রাত, জীবনের দিককে পাল্টে দিতে পারে, ভেতরের সত্তাকে খুব শক্তিশালী করে তুলতে পারে, বাড়িয়ে দিতে পারে উপভোগের মাত্রা।
জীবনের ভিন্ন দিক সম্পর্কে জানতে হলে জাগতে হবে রাত, স্বপ্নকে মাত্রা দিতে হলে জাগতে হবে রাত, ভিন্ন কিছু সৃজন করতে হলেও এ সময়ের বিকল্প নেই। রাত হচ্ছে জীবনের অন্য দিক, অন্য অধ্যায়।